বেরিয়ে আসছে থলের বিড়াল

ছাগলটি যশোর থেকে ১ লাখে এনে বিদেশি বলে ১৫ লাখ হাঁকিয়েছিল সাদেক এগ্রো

fec-image

ছাগলকাণ্ডের সেই ১৫ লাখ টাকার ছাগল নিয়ে দেশব্যাপী তুলকালাম হয়ে গেলেও আলোচিত সেই ছাগলটি দেশীয় জাতের। তথ্য বলছে, ওই ছাগলটি যশোরের একটি বাজার থেকে মাস দুয়েক আগে ১ লাখ টাকায় আনা হয়। তবে ঈদ সামনে রেখে সেটি বিদেশি ব্রিটল জাতের ছাগল বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করেন মোহাম্মদ ইমরান হোসাইন।

এরপর এর দাম নির্ধারণ করা হয় ১৫ লাখ টাকা, যেটি ক্রয় করেন আলোচিত এনবিআর কর্মকর্তা মতিউরপুত্র মুশফিকুর রহমান ইফাত। তবে ইফাত ১ লাখ টাকা অগ্রীম দিয়েও ছাগলটি নেননি বলে জানা গেছে, কিন্তু এ ছাগলের সঠিক বিক্রয়মূল্য কত তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। সাদেক এগ্রোর ইনচার্জ মো. শরীফও যশোর থেকে ছাগল আনার এ তথ্য স্বীকার করেছেন।

চোখ ধাঁধানো বিজ্ঞাপন আর নানা চমকের কারণে বারবার আলোচনায় আসা ‘সাদিক এগ্রো’ এবং এর মালিক মোহাম্মদ ইমরান হোসাইনের বিরুদ্ধে গরু চোরাচালান সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণসহ নানাভাবে গ্রাহকদেরকে ঠকানোর অভিযোগ উঠেছে। মিথ্যা বলে অতিরিক্ত মূল্য ধরা এবং দেশি গরু-ছাগল বিদেশি বলে বিক্রি করারও অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

একটি জাতীয় পত্রিকার অনুসন্ধান প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্ত দিয়ে গরু চোরাচালানের রুট নিয়ন্ত্রণ করেন মোহাম্মদ ইমরান হোসাইন। থাইল্যান্ড থেকে উন্নত জাতের গরু মিয়ানমার হয়ে উখিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এর নেপথ্যে ভূমিকা রাখেন ইমরান।

বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে, থাইল্যান্ড থেকে আসা গরু উখিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এরপর সেগুলো দীর্ঘদিন রাখা হয় উখিয়ার গহিন জঙ্গলে তৈরি করা গোপন ডেরায়। এরপর উখিয়া থেকে সুযোগ মতো গরু এনে রাখা হয় নরসিংদীর শেখ ক্যাটল ফার্মে।

২০২১ সালে অবৈধভাবে নিয়ে ১৮টি ব্রাহমা জাতের গরু ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ধরা পড়ে। ওই ঘটনায় সাদেক এগ্রো দায়ী থাকলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে গরুগুলো বাজেয়াপ্ত করে সরকার। সেগুলো রাখা হয় সাভারের সরকারি ডেইরি ফার্মে।

জানা গেছে, সাধারণ মানুষের মধ্যে কমদামে মাংস বিক্রির জন্য প্রতি বছর সাভারের ফার্ম থেকে কিছু গরু সরবরাহ করা হয়। সুচতুর ইমরান প্রভাব খাটিয়ে ব্রাহমা জাতের গরুগুলো সেই তালিকাভুক্ত করান। এর পর নিজের ফার্মের দেশীয় জাতের গরুর সঙ্গে বদল করে ১৭টি ব্রাহমা নিয়ে আসেন।

তারা জানান, মন্ত্রণালয়ে প্রভাব খাটিয়ে গরু বদলের ব্যবস্থা করেন ইমরান। এই প্রক্রিয়ার প্রতিবাদ করায় সে সময় কয়েকজন কর্মকর্তাকে হুমকিও দেওয়া হয়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: প্রতারণা, রাজধানী
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন