ফোনে ওটিপি দিয়ে ২০ লাখ টাকা খোয়ালেন নারী

fec-image

ব্যাংক কর্মকর্তা পরিচয়ে মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ফোন দিয়ে অ্যাকাউন্টের সুরক্ষার জন্য চাওয়া হয় তথ্য। না ভেবেচিন্তে তথ্য দিতেই খোয়ালেন ২০ লাখ টাকা। এ ঘটনায় ৫৮ বছর বয়সী ওই নারী গ্রাহক থানায় করেন অভিযোগ। প্রতারণার এ ঘটনাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলির শ্রীরামপুরে ঘটেছে।

পুলিশ বলেছে, ব্যাংকের কোনো তথ্য ফোনে না জানানোর জন্য প্রচার করা হলও এক শ্রেণির মানুষ ভুল করে ফেলছেন। সাইবার অপরাধীরা নিশানা করছে মূলত বয়স্কদের।

মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায় একটি বিমা সংস্থার কর্মী। তার এবং মেয়ে সুনন্দিতার নামে যৌথ অ্যাকাউন্ট রয়েছে একটি বেসরকারি ব্যাংকে। তাতে ফোন নম্বর রয়েছে মৌসুমীর।

সুনন্দিতা বলেন, গত বুধবার বিকেলে মায়ের মোবাইলে পুরুষকণ্ঠে ফোন আসে ওই ব্যাংকের ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে। বলা হয়, অ্যাকাউন্ট রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনে কিছু তথ্য দরকার। অভিযোগ, নেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ‘কাস্টমার আইডি’ জানার অনুরোধ পাঠায় দুষ্কৃতকারী। তা যাচাইয়ের জন্য ওটিপি আসে মোবাইলে। তার কথায় বিভ্রান্ত হয়ে তিনি ওটিপি বলে দেন। আরও নানা তথ্য হাতিয়ে নেয় দুষ্কৃতকারী।

মৌসুমীকে বিভ্রান্ত করে মোট ৪৪ বার তার থেকে ওটিপি জেনে নেয় প্রতারক। দেড় ঘণ্টার মধ্যে ১৬ বারে অ্যাকাউন্ট থেকে মোট ১৯ লাখ ৪৭ হাজার ৭৬৯ টাকা তুলে নেওয়া হয়। বিষয়টি বুঝতে পেরেই ব্যাংকে লেনদেন প্রক্রিয়া বন্ধ করেন সুনন্দিতারা। গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যাংকে লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশেরও দ্বারস্থ হন।

সুনন্দিতা বলেন, এখনও ওই নম্বর থেকে ক্রমাগত ফোন আসছে। বুঝতে পারছি, নেটব্যাংকিংয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

হুগলিতে গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকজন প্রবীণ নাগরিক এ ভাবে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। কয়েকটি ক্ষেত্রে প্রতারকেরা ফোন করে ব্যাংক কর্মকর্তা সেজে ছলেবলে বিভ্রান্ত করেছে। কিছু ক্ষেত্রে এটিএমে প্রতারণার শিকার হয়েছেন প্রবীণরা।

একাধিক ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতারকেরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে চেষ্টা চালিয়ে যায় প্রতারণার লক্ষ্যে। কোনো ক্ষেত্রে বয়স্করা তার শিকার হচ্ছেন। আরও কিছু ক্ষেত্রে প্রতারণার জাল বিছাচ্ছে প্রতারকেরা। যেমন, অনেক সময় জমি-বাড়ি রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে আঙুলের ছাপ (ফিঙ্গার প্রিন্ট) ‘চুরি’ করছে। তা ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির তথ্য জেনে যাচ্ছে প্রতারক। ফোন করে সেই তথ্য সামনে রাখায় সহজেই বিশ্বাস করে ঠকে যাচ্ছেন অনেকে। মোবাইলে আসা ওটিপিও বলে ফেলছেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: প্রতারণা, ব্যাংক, ভারত
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন