নাইক্ষ্যংছড়িতে পরিবহণ পরিচালককে মারধর ও চাঁদাবাজির প্রতিবাদে ধর্মঘটের হুশিয়ারি


নাইক্ষ্যংছড়িতে রামু উপজেলা অটোরিক্সা, টেম্পু, সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের ২ লাইন পরিচালককে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের পরিবহণ ধর্মঘটের হুশিয়ারি দিয়েছে রামু উপজেলা সড়ক পরিবহন মোটর শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ। হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত সভায় এ ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
রামু উপজেলা সড়ক পরিবহণ মোটর শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি আহসান উল্লাহ জানান, গত ২১ নভেম্বর নাইক্ষ্যংছড়ি স্টেশনে দায়িত্ব পালনকালে রামু উপজেলা অটোরিক্সা, টেম্পু, সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের লাইন পরিচালক আবদুল জলিল ও মোজাফ্ফর আহমদকে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আবছারের নির্দেশে ১৫ থেকে ২০ জন সন্ত্রাসী তাদের উপর অতর্কিত হামলা শুরু করে। হামলাকারীরা লাইন পরিচালক আবদুল জলিল ও মোজাফ্ফর আহমদকে ব্যাপক মারধর করে স্টেশন থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরে হামলাকারীরা নাইক্ষ্যংছড়ি স্টেশনে রামু উপজেলা অটোরিক্সা, টেম্পু, সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যদের (শ্রমিক) জিম্মি করে এবং জোরপূর্বক চাঁদা আদায় শুরু করে।
হামলার শিকার আবদুল জলিল ও মোজাফ্ফর আহমদ বিষয়টি রামু উপজেলা অটোরিক্সা, টেম্পু, সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দকে অবহিত করে। এরই প্রেক্ষিতে নেতৃবৃন্দ হামলার ইন্ধনদাতা নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ও হামলায় জড়িতদের সাথে যোগাযোগ করে হামলার কারণ জানতে চান। কিন্তু তারা কোন সদুত্তর না দিয়ে উল্টো হুমকি-ধমকি দেয়।
এতে নিরুপায় হয়ে হামলার প্রতিকার চেয়ে রামু উপজেলা অটোরিক্সা, টেম্পু, সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম গত ২৩ নভেম্বর নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোমেন শর্মার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এরই প্রেক্ষিতে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার উভয় পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করলেও তারা কোন সুষ্ঠু প্রতিকার পাননি। ওই বৈঠকে হামলাকারীরা ইতিপূর্বে শ্রমিকদের সাথে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী, রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও দুই উপজেলার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সহ অনুষ্ঠিত যৌথ বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্ত না মানার ঘোষণা দেয়। এ কারণে উভয় পক্ষের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ আরো জটিল আকার ধারণ করে।
এদিকে দুই লাইন পরিচালককে মারধর, দুই উপজেলার ইউএনও এবং ওসি’র সিদ্ধান্ত অমান্য করে সড়কে শ্রমিকদের কাছ থেকে সন্ত্রাসী কায়দায় চাঁদাবাজির প্রতিবাদে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে রামু উপজেলা সড়ক পরিবহণ মোটর শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। রামু উপজেলা সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি আহসান উল্লাহর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অবিলম্বে শ্রমিক ইউনিয়নের ২ লাইন পরিচালককে মারধরর দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করা হয়। সভায় নাইক্ষ্যংছড়ি স্টেশনে রামু উপজেলা অটোরিক্সা, টেম্পু, সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিকদের জিম্মি করে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানানো হয়। এসব দাবি না মানলে আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি-গর্জনিয়া সড়কে অনির্দিষ্টকালের পরিবহণ ধর্মঘটের হুশিয়ারি দেন রামু উপজেলা সড়ক পরিবহণ মোটর শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা অটোরিক্সা, টেম্পু, সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়ন রামু শাখার সভাপতি ছৈয়দ আহমদ, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, কার্যকরী সভাপতি মমতাজ মিয়া, সহসভাপতি মুজিবুল হক, লাইন সম্পাদক হারুনর রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ওবাইদুল হক, অর্থ সম্পাদক আলী হোছাইন, দপ্তর সম্পাদক মো. শফি, সদস্য শফিউল আলম প্রমুখ।