পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান কে হচ্ছেন?

fec-image

এই মুহূর্তে টক অফ দা হিল হচ্ছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পরবর্তী চেয়ারম্যান কে হচ্ছেন? পাহাড়ের রাজনৈতিক মহলে, সরকারি অফিসে, সুশীল ও পেশাজীবী সমাজে, এমনকি চায়ের দোকানে এটাই এখন অন্যতম প্রধান আলোচ্য বিষয়।

গত ৬ জুলাই ২০২৩ পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমার মেয়াদ শেষ হাওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার শীর্ষ প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন বোর্ডের শীর্ষ পদটি শূন্য হয়ে যায়। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই পরবর্তী চেয়ারম্যান নিয়োগ করে নোটিশ জারি করা হতে পারে বলে পাহাড়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। সে কারণেই উন্নয়ন বোর্ডে চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ প্রত্যাশীরা এখন সবাই ঢাকায় অবস্থান করে বিভিন্ন মহলে তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন।

২০২১ সাল থেকে ২ বছর মেয়াদে নিখিল কুমার চাকমা উন্নয়ন বোর্ডে চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার ঘনিষ্ঠজনরা বলছেন, পরবর্তী মেয়াদের জন্য তিনিই ১ বা ২ বছরের জন্য আবারো নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান হলেন সুপ্রদীপ চাকমা

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা পার্বত্যনিউজকে জানিয়েছেন, রাঙামাটি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা উন্নয়ন বোর্ডের পরবর্তী চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পেতে পারেন। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, এবার যারা উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য লবিং করছেন তাদের মধ্যে রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং রাঙামাটি আসনের সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদারের খুবই বিশ্বস্ত এবং অনুগত জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বৃষকেতু চাকমা। তাই বৃষকেতু চাকমার ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশ থাকতে পারে।

আগেরবার উন্নয়ন বোর্ডে নিখিল কুমার চাকমার নিয়োগ নিয়ে রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে সৃষ্ট মতবিরোধ এবং পরবর্তীতে জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে সভাপতি পদে দীপংকর তালুকদারকে নিখিল কুমার চাকমার চ্যালেঞ্জ জানানোর বিষয়টিও এক্ষেত্রে একটি ফ্যাক্টর হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

তবে নিখিল কুমার চাকমার পক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুরের বিশেষ সুদৃষ্টি রয়েছে এবং এই শক্তির বলেই তিনি আবারও টিকে যেতে পারেন বলে পাহাড়ের অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

এই বিষয়ে রাঙামাটি আসনের সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদারের মতামত জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মুছা মাতবর পার্বত্যনিউজকে জানান, ‘উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে দলীয় বা আওয়ামী লীগ সভাপতির পক্ষ থেকে কারো ব্যাপারে সুপারিশ করা হয়নি। এবার যারা চেয়ারম্যান পদে আবেদন বা লবিং করছেন তারা নিজ উদ্যোগেই করছেন। আমি নিজেও আবেদন করেছি। এখন প্রধানমন্ত্রী যাকে ভালো মনে করবেন তাকেই নিয়োগ দেবেন।’

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পেতে রাঙামাটি থেকে আরো যারা জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, রাঙামাটি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি চিংকিউ রোয়াজা, বরকল উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ কুমার চাকমা।

অন্যদিকে খাগড়াছড়ি থেকে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য বাসন্তী চাকমা এবং খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্রলাল ত্রিপুরাও উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পেতে তদবির করছেন বলে জানা গেছে।

তবে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং আঞ্চলিক পরিষদসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় সরকারের প্রায় সকল ইউনিটের প্রধান হিসেবে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির নেতৃবৃন্দ নিয়োগ পাওয়ায় পার্বত্য বাঙালিরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দাবি করে বাঙালি নেতৃবৃন্দ আশা করছেন, এবার অন্তত উন্নয়ন বোর্ডে চেয়ারম্যান পদে একজন বাঙালিকে নিয়োগ দেয়া হবে। তাদের কেউ কেউ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনুর নামও উল্লেখ করেছেন। তবে ফিরোজা বেগম চিনু পার্বত্যনিউজকে বলেন, তিনি এ ব্যাপারে কারো কাছে কোনো তদবির করেননি।

এছাড়াও সাবেক এবং বর্তমান কয়েকজন আমলাও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পেতে তদবির করছেন বলেও জানা গেছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: চেয়ারম্যান, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন