পেকুয়ায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, ইউপি সদস্যসহ আহত ৩

fec-image

কক্সবাজারের পেকুয়ায় দু’পক্ষের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ ৩ জন আহত হয়েছে। আহতদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পরই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

গত ১৮ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টায় উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের সোনালী বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল করিম গাড়ী নিয়ে পেকুয়া থেকে বাড়ীতে ফেরার পথে সোনালী বাজার পৌঁছলে ফেরাংঘোনা এলাকার রমিজ আহমদের পুত্র নুরুল আলম চেয়ারম্যানকে গালমন্দ করে। এসময় চেয়ারম্যান গাড়ী থেকে নেমে বিষয়টি তার কাছ থেকে জানতে চাইলে স্থানীয়রা এসে নুরুল আলমকে বকা দিয়ে সরিয়ে দেয়। পরে চেয়ারম্যান তার গাড়ীতে থাকা স্থানীয় ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান ওসমান গণি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহজামাল, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিনকে নামিয়ে দিয়ে স্থান ত্যাগ করেন। গাড়ী থেকে নেমে ওসমান মেম্বার সোনালী বাজারে নুরুল আলম ও তার ভাই দুলাল কে দেখা মাত্র ক্ষেপে উঠে ঘটনা কে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করতে তার এলাকার লোকজনকে খবর দিয়ে ৪০-৫০ লোক এনে তাদের উপর পূর্বশুত্রুতার জের ধরে হামলা করে মেম্বার ওসমান।

এ ঘটনার খবর পেয়ে পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ ওমর হায়দারের নেতৃত্ব পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ইউপি সদস্য ওসমান ইউনিয়নের ঠান্ডার পাড়া এলাকার মোস্তাক আহমদের ছেলে ও ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-১।

এ সময় অন্যদের মধ্যে রমিজের ছেলে ছাদেকুর রহমান (৪০), ছাদেকুর রহমানের ছেলে শাহরিয়া (১৮) আহত হয়। আহতদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

স্থানীয় হেলাল উদ্দিন জানান, সোনালী বাজার আশ্রয়ণ কেন্দ্রে প্রতিনিয়ত অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। ওখানে বসে এলাকার উঠতি বয়সী যুবকরা মাদক, ইয়াবা, গাঁজা সহ নানা অপরাধ করছে এমন বিষয়টি নিয়ে ওসমান মেম্বার কয়েকদিন আগে সোনালী বাজারে একটি মাইকে অভিভাবকদেরকে তাদের ছেলেদের প্রতি সচেতন হতে অনুরোধ করেন। কিছুক্ষণ পরপরই রমিজ আহমদের ছেলে দুলাল আরেকটি মাইক নিয়ে ওসমান মেম্বারকে গালমন্দ করেন। এ থেকে দুই পক্ষে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে এ ঘটনা ঘটে।

নুরুল আলমের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এ স্টেশনে আমাদের অবস্থানটা শক্ত হওয়ায় চেয়ারম্যান অনুসারীরা বার বার আমাদের উপর হামলা করে। ওসমান মেম্বাররা ঘটনাটি সাজিয়ে আহত দেখিয়ে একটি মামলা করে আমাদের অবস্থান দুর্বল করতে চাচ্ছে।

এদিকে দুলালের সাথে যোগাযোগ করার জন্য তাদের মুঠোফোনে কল দিলেও সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

আহত ইউপি সদস্য ওসমান গণি বলেন, আলম ও দুলালের অত্যাচারে অতিষ্ট এলাকাবাসী। তাঁদের অনাচারের বিরুদ্ধে উজানটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও আমি সবসময় প্রতিবাদ করে আসছি। এ মাদক ব্যবসায়ী দুই ভাই গতকাল আমাদের হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। এতে আলমের কিরিচের কোপে আমার বাম হাত কেটে গেছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল করিম জানান, সোনালী বাজার এলাকার আলম ও তাঁর ভাই দুলাল নানা অপরাধের সাথে জড়িত। চাইনা প্রকল্পের পুরাতন মালামাল নিয়ে যাওয়ার সময় এ বাজারে তারা নামিয়ে টাকা আদায় করে। মূলত তারা মোবাইল চুরি ও ছিনতাইর মত ঘটনার সাথে জড়িত। আমি এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় বুধবার রাতে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত হামলা করে তাঁরা।

পেকুয়া থানার এসআই মো. শাহীন বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দু’পক্ষকে সরিয়ে দেয়া হয়। এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ তৎপর আছে।

এ বিষয়ে কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া পেকুয়া সার্কেল) তফিক আলম বলেন, ভুক্তভোগীদের পক্ষে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আহত, পেকুয়া
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন