পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত, ২ শত পরিবার পানিবন্দি


নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বষর্ণ ও পূণিমার জোয়ারের পানিতে কক্সবাজারের পেকুয়ার রাজাখালীতে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) মালিকানাধীন বেড়িবাঁধ ভেঙে সাগরের লোনা পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে বসতবাড়ি প্লাবিত হয়েছে।
বুধবার (২ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের লালজানপাড়া ও রবত আলীস্থ বেড়িবাঁধের মাঝখানে এ ভাঙ্গন দেখা দেয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে বহু বছর আগে নির্মিত লালজান পাড়া বেড়িবাঁধ। এটি সংস্কারের অভাবে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল দীর্ঘ দিন। টানা বষর্ণে ও পূর্নিমার জোয়ারের পানির ধাক্কায় বেড়িবাঁধের লালজান পাড়া পয়েন্টে ২০ ফুট মত অংশ ভেঙ্গে যায়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, পাউবোর দায়িত্বহীনতার কারণে এ অবস্থা হয়েছে। পাউবোর ঠিকমত দেখভাল না থাকায় স্থানীয় লবণ চাষীরা বেড়িবাঁধ কেটে ভিতরে একটি নাশি বসিয়ে দেয়। সেই নাশি ও বেড়িবাঁধ সংস্কার না করায় ক্রমান্বয়ে বেড়িবাঁধ একটু আধটু ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে এখন পুরোটাই ভেঙ্গে যায়। এতে করে প্লাবিত হয় ওই এলাকার ২ শত পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পানিতে বিলীন হয়ে যায় চিংড়ি ঘের, লবণ ঘের, পুকুরের মাছ, ধানের চারা। এতে করে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এলাকাবাসী।
স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম রহমান বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বষর্ণ ও পূর্ণিমার জোয়ারের পানির ধাক্কায় বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এতে প্লাবিত হয় বহু পরিবার। জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ সংস্কার করে এলাকার লোকজনকে রক্ষা করতে হবে। এখন লোকালয়ে পানি পানির উচ্চতা প্রায় ২ ফুট। রাতে বৃষ্টি হলে পানির উচ্চতা আরো বৃদ্ধি পাবে। পানি বন্দি হবে দুই থেকে আড়াই হাজার লোক। এসব লোকজনের শুকনো খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সংকট দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল বলেন, আমার এলাকার বাসিন্দাদেরকে বাঁচাতে জরুরী ভিত্তিতে এ বেড়িবাঁধ সংস্কার করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। টানা বৃষ্টি হলে আরো পানি প্রবেশ করে পুরো রাজাখালীবাসী পানিবন্দি হয়ে যাবে।
তিনি আরও জানান, আমি দীর্ঘদিন ধরে এ বেড়িবাঁধ সংস্কার করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবগত করেছি। কিন্তু কোন কাজ হয় নাই। টানা বর্ষণে পূর্ণিমার পানির জোয়ারে আমার ইউনিয়নের ২ শত পরিবারের প্রায় দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে পাউবোর বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী অরূপ চক্রবর্তী জানান, এই মূহুর্তে আমি বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনের স্থানে যাচ্ছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে জরুরী ভিত্তিতে ভাঙ্গন অংশ মেরামত করা হবে।
এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূর্বিতা চাকমা বলেন, দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পাউবোকে নিদের্শ দেওয়া হয়েছে। পানি কমে গেলে জরুরী ভিত্তিতে মেরামত করা হবে।