পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনো ভূমি জরিপ হয়নি- পার্বত্য সচিব

fec-image

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মশিউর রহমান এনডিসি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে এখনো ল্যান্ড সার্ভে হয়নি। ফলে ভূমি নিয়ে কিছু জটিলতা রয়েছে। তিনি বলেন, রিজার্ভ ফরেস্ট ট্রান্সফার হয় না। পার্বত্য চট্টগ্রামে ল্যান্ড কমিশন ও আইন তৈরি করা হয়েছে। বিধিমালা তৈরির কাজ চলছে। আইনগত জটিলতা নিরসনে শান্তি চুক্তির আলোকে দ্রুত কাজ করে যাচ্ছে সরকার। বিধিমালা হয়ে গেলে ভূমি সংক্রান্ত লিটিগেশন বা সমস্যা আর থাকবে না বলে জানান পার্বত্য সচিব।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) রাজধানীর বেইলি রোডে শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের মাল্টিপারপাস হলরুমে চিটাগাং হিলট্রাক্টস ওয়াটারশেড কো-ম্যানেজমেন্ট এক্টিভিটি-লেসনস লার্নড এন্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মশিউর রহমান এনডিসি এসব কথা বলেন।

পার্বত্য বনাঞ্চল নিয়ে এনডিসি বলেন, শুধুমাত্র প্রজেক্টের মডেল, গাইড তৈরি আর সিস্টেম দিয়ে পার্বত্য অঞ্চলে বন ও পানি সংরক্ষণ করা নিশ্চিত হবে না। পার্বত্য অঞ্চলের বন সংরক্ষণে পার্বত্য অঞ্চলের আপামর জনসাধারণকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে। পানি সংরক্ষণে পার্বত্য অঞ্চলে বন সৃজন, সংরক্ষণ ও প্রতিকারের বিষয়ে অনেক কাজ করার আছে। তাহলে বন সংরক্ষণের পাশাপাশি পানি সংরক্ষণ করা নিশ্চিত হবে। তিনি বলেন, প্রকৃতিতে পানি সংরক্ষণে বন কাজ করে ঠিক স্পঞ্জের মতো। ভৌগোলিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক দিকগুলোকে বিবেচনা করে একটি যুগোপযোগী সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে।

কর্মশালায় অভিজ্ঞরা জলাশয় সংরক্ষণে বন সৃজন, ভিলেজ কমন ফরেস্ট, রিজার্ভ ফরেস্ট সৃষ্টি করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও পরিবেশ ঠিক রেখে সম্মিলিতভাবে সকলকে বনায়ন সৃজন ও এর সুরক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই পার্বত্য অঞ্চলের বনায়ন, জলাশয় ও জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।

কর্মশালাটি ইউএসএইড, ইউএনডিপি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় সংস্থাসমূহের দেশি-বিদেশি প্রতিনিধি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি এই তিন জেলার কমিউনিটি চেঞ্জ মেকাররা অংশ নেন। কর্মশালায় পার্বত্য অঞ্চলে বনায়ন সৃজন ও পানি সংরক্ষণের বিষয়ে উল্লেখযোগ্য শিক্ষণ ও এগিয়ে যাওয়ার পথ কী হতে পারে তা নিয়ে অংশীজনদের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

কর্মশালায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও জাতীয় প্রকল্প পরিচালক (এসআইডি-সিএইচটি) প্রদীপ কুমার মহোত্তম তাঁর স্বাগত বক্তব্যে বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে এখন ইচ্ছে করলেই যে কেউ বন কেটে উজার করতে পারবে না। এক্ষেত্রে কারো একটি গাছ অথবা বাঁশ কাটার প্রয়োজন হলে বন ও পানি সংরক্ষণ কমিটির মতের ভিত্তিতে আরও একাধিক গাছের চারা রোপণ করে পরে কাটতে হবে। যা বন সৃজনে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, বন বাঁচলে পানির সংরক্ষণও ঠিক থাকবে। প্রাকৃতিক বনকে ঠিক রেখে জলাশয় সংরক্ষণ করার উপযুক্ত সময় এখন।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের অতিরিক্ত দায়িত্বে নিয়োজিত অতিরিক্ত সচিব ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসেন চৌধুরী, ইউএনডিপি বাংলাদেশের ইকোনিমক গ্রোথ অফিস ডাইরেক্টর ড. মুহাম্মদ খান, ইউএনডিপি বাংলাদেশের পেুটি রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টিটিভ মিজ সোনালী দয়ারত্নে, সিএইচটিডব্লিউসিএ/এসআইডি-সিএইচটি ইউএনডিপি’র চিফ টেকনিক্যাল উপদেষ্ঠা ড. রাম শর্মা এবং ইউএনডিপি’র সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি প্রসেনজিৎ চাকমা প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পানি, পার্বত্য সচিব, প্রকৃতি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন