প্রধান উপদেষ্টা ও বেগম খালেদা জিয়ার মামলার বাদী গুলশান আনোয়ার প্রধান এখন কক্সবাজারের দুদকে


গেল সরকার আওয়ামী লীগের আমলে বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ গ্রামীণ টেলিকমের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে করা মামলার বাদী গুলশান আনোয়ার প্রধান এখন কক্সবাজারে। তিনি দুদকের কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক হিসেবে বদলি হয়ে এসেছেন। তার এই বদলি নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বেগম খালেদা জিয়াসহ গ্রামীণ টেলিকমের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিটও দিয়েছিলেন। ২০২৩ সালের ৩০ মে উপ-পরিচালক হিসেবে ড. ইউনুসের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছিলেন। যদিও চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের এক রায়ে ওই মামলাটি বাতিল হয়ে গেছে। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার বিচারপতি সর্বসম্মতিক্রমে মামলা বাতিলের এই রায় দেন।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দাপুটে কর্মকর্তা গুলশান আনোয়ার প্রধান। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আস্থাভাজন হিসেবে কাজ করে বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূস, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার কারিগর ছিলেন। গত ৩১ জানুয়ারি তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। এর আগে ২০১৯ সালের ১৩ মে উত্তরা পশ্চিম থানায় বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী ফালুসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দুবাইয়ে ১৮৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা পাচারের অভিযোগে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করেন দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক এই গুলশান আনোয়ার। এই মামলা তদন্ত করে ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
এসব ছাড়াও তিনি শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে একসময় সংবাদপত্রে কলাম লিখলেও এখন পুরোদমে নিজেকে বিএনপির কর্মী দাবী করেন। ২০২০ সালের ২৯ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে ‘তিনি শুধু বঙ্গবন্ধুই নন বাঙালির প্রথম রাষ্ট্রের শ্রষ্টা’ শিরোনামে কলাম লিখেন গুলশান আনোয়ার প্রধান। এরপর আরও একাধিক কলাম তিনি লিখেছেন আওয়ামী সরকারের গুণকীর্তন করে।
প্রাপ্ত তথ্যে আরো জানা যায়, ক্ষমতাসীন বা ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা ব্যক্তিদের সুরক্ষা দিতেন দুদকের এই কর্মকর্তা। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তিনি কোনও কাজ করেনি। এরই মধ্যে শেখ হাসিনা সরকারের কক্সবাজারের চার এমপি-মন্ত্রীর নামমাত্র মামলা দেখালেও কোনো অভিযান তিনি দেখাতে পারেননি। উল্টো তাদের সেইফ এক্সিট দিয়েছেন বলেও জানা যায়। বিশেষ করে কক্সবাজারের জেলা আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা করতে দেখা যায়নি বলে প্রাপ্ত সূত্রে জানা যায়।