বান্দরবানের গ্যালেংগা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জনগণের অভিযোগ
বান্দরবানের রুমা উপজেলার গ্যালেংগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শৈউসাই মার্মার বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এসব অনিয়ম ও লুটপাটের কথা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা অংলাই ম্রো, মেনরত হেডম্যানসহ চারজন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থ বছর ভিজিডি বিতরণকালে উপকারভোগী রাইলাইন ম্রো, কোনরুই ম্রো, লাইরোম ম্রো, রোলাইং ম্রো, চামরাও ম্রো, চাংলেং ম্রো, সিংতুম ম্রো, চামলে ম্রো জমাকৃত ৩৮ হাজার ৪০০টাকা চেয়ারম্যান শৈউসাইন মার্মা নিজেই উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন।
চলতি ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ভিজিডি চক্রে ইউনিয়নের ৩০৪ জন উপকারভোগীর মধ্যে অনেকেই সঠিকভাবে বরাদ্দের চাল পাননি। উপকারভোগী তুমরাও ম্রো, ঙানরুই ম্রো ও রুইপিং ম্রো জানান-তারা গত ছয় মাসে শুধুমাত্র ৩০ কেজি (একমাসের বরাদ্দের) চাল পেয়েছেন। বাকী চাল তাদের দেওয়া হয়নি।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় অফিসের ব্যবহারের জন্য সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত সোলার প্যানেলে কোন হদিস নেই। অথচ চেয়ারম্যান রুমা সদরে বসে সবধরনের কাজকর্ম সারেন।
ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে পুর্নবাসন পাড়ার ৪৫টি পরিবারের কাছ থেকে সরকারি সোলার প্যানেল বিতরণের নামে চেয়ারম্যান প্রত্যেকের কাছ থেকে ২হাজার টাকা হারে অর্থ আদায় করেছেন। অথচ ৪৫ পরিবারের মধ্যে কেবলমাত্র ১৫টি পরিবারে সোলার প্যানেল দেওয়া হয়। বাকী ৩০পরিবারকে সোলার প্যানেল না দিয়ে তাদের কাছ থেকে আদায়কৃত অর্থ চেয়ারম্যান আত্মসাত করেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, পার্বত্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত ৪০০টির অধিক ১শ ওয়াটের সোলার প্যানেল বলিপাড়া ইউনিয়নের বাগানপাড়া এলাকার সাইনপাঅং মার্মার কাছে সোলার প্যানেল জমা রেখেছেন চেয়ারম্যান। ওই ব্যক্তি এসব সোলার প্যানেল বিক্রি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। জ্ঞানলাল পাড়ার বাসিন্দা চন্দ্র চাকমা, নিহারবিন্দু পাড়ার চন্দ্রসেন চাকমা, বলিবাজার পাড়ার ব্যবসায়ী জসিম, সেলিম, তপন ১৫হাজার টাকা দামে ওই সৌর প্যানেল কিনেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এভাবে দীর্ঘদিন যাবত চেয়ারম্যান শৈউসাইন মার্মা ইউনিয়ন পরিষদের অনুকুলে সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত বিভিন্ন প্রকল্প সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করেননি। এই অবস্থায় চেয়ারম্যানের সীমাহীন দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরেজমিন তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে গ্যালেংগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শৈউসাইন মার্মা এই পার্বত্যনিউজকে বলেন- আমার প্রতিপক্ষরা মিথ্যা, বানোয়াট অভিযোগটি করেছে বলে শুনেছি। তবে আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সুনিদিষ্ট না হলে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে আমি ব্যবস্থা নেব।
তিনি আরও বলেন- ১নং অভিযোগকারী অংলাই ম্রো আমার নির্বাচনী প্রতিপক্ষ। গত সোমবার তার ভাই লাংঙি ম্রো ইউনিয়ন পরিষদে এসে মাতলামি করে এবং আমাকে হুমকি দেয়। এই জন্য আমি ইউএনও’র কাছে অভিযোগ করেছি। সেই ঘটনার সূত্র ধরে হয়তো আমার বিরুদ্ধে অভিযোগটি করেছে।
এদিকে অভিযোগকারীদের মতে, সঠিক তদন্ত হলে চেয়ারম্যান শৈউসাইন মার্মার বিগত দিনের সকল অনিয়ম, দুর্নীতির চিত্র বের হয়ে আসবে।