রামগড়ে ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি নিয়ে ভাই-বোনের পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন
খাগড়াছড়ির রামগড়ে ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি নিয়ে ভাই-বোনের পাল্টাপাল্টি সংবাদ সন্মেলন হয়েছে। পারিবারিক ভূমি ও গুচ্ছগ্রামের রেশনকার্ড আত্মসাৎ করার চেষ্টার অভিযোগে শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) শশ্মানটিলা গ্রামের বাসিন্দা গীতা রাণী ঘোষের পক্ষে সাংবাদিক সন্মেলন করেছেন মুক্তিযোদ্ধা প্রমোদ বিহারি নাথ।
অন্যদিকে, প্রমোদ বিহারি নাথের বিরুদ্ধে ভূমি রেজিস্ট্রির নামজারী মামলার জন্য এসি ল্যান্ডের নাম করে ৪ লাখ টাকা ঘুষের দাবিসহ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে পৃথক সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন গীতা রাণী ঘোষের ভাই জহর লাল ঘোষ।
স্থানীয় একটি রেস্তোরাঁয় শনিবার অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রমোদ বিহারি নাথ অভিযোগ করে বলেন, স্বামী পরিত্যক্তা অসহায় নারী গীতা রানী ঘোষের ভূমি ও গুচ্ছগ্রামের রেশনকার্ড জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাতের চেষ্টা করছে তার আপন ভাই জহরলাল ঘোষ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, জহর লাল ঘোষ তার নিজ মাতৃগর্ভা বোন গীতা রানী ঘোষকে ওয়ারিশান থেকে বাদ দিয়ে পৌরসভার শশ্মানটিলায় ২০ শতক ভূমি নিজ নামে বন্দোবস্ত করে অন্যায় ভাবে তার স্ত্রীকে দান করার অপচেষ্টা করছে। এছাড়া পারিবারিক রেশন কার্ড থেকেও তার বোনকে বাদ দিয়ে স্ত্রী ও নিজ সন্তানদের অন্তর্ভুক্ত করেন।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, রামগড় ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার জাহাঙ্গীর আলম সুকৌশলে কবুলিয়ত-দলিল না থাকা সত্ত্বেও নামজারী মামলার সুপারিশ করেন। গীতা রাণী বাধ্য হয়ে সুবিচারের আশায় ঐ নামজারী মামলার বিরুদ্ধে খাগড়াছড়ি বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিবিধ মামলা (নং ২২/২০২৩) রুজু করেন। সাংবাদিক সম্মেলন অন্যান্যের মধ্যে গীতা রাণী ঘোষসহ প্রতিবেশিরা উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে, একই রেস্তোঁরায় পৃথক এক সাংবাদিক সম্মেলন শশ্মানটিলার বাসিন্দা জহর লাল ঘোষ অভিযোগ করে বলেন, তার নামে উপজেলার ২৩৫ নং নাকাপা মৌজায় ৩৭২/ক নং হোল্ডিংভূক্ত ২০ শতক ৩য় শ্রেণির ভূমি রেকর্ডভূক্ত আছে। এ জায়গায় পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন দীর্ঘ অনেক বছর ধরে। ভূমির খাজনা, জমাবন্দি, হেডম্যান রিপোর্ট, ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার কানুনগো রিপোর্ট সবকিছু তারই অনুকুলে আছে। বর্তমানে অসুস্থতাজনীত কারণে তিনি ওই ভূমি তার স্ত্রী উমা রাণীর নামে দান রেজেস্ট্রির জন্য ২০২১ সালে উপজেলা ভূমি অফিসে একটি নামজারি মামলা (৩৮৩/রাম/২১) রুজু করেন। কিন্তু প্রমোদ বিহারি নাথ নামে জনৈক ব্যক্তির কু-প্ররোচনায় গীতা রাণী ঘোষ নামজারী মামলার বিরুদ্ধে ভূমি কার্যালয়ে আপত্তি দেন এবং সর্বশেষ জেলা এডিএম কোর্টে একটি দেওয়ানি মামলা করে।
জহর লাল ঘোষ আরও অভিযোগ করে বলেন, দান রেজিস্ট্রি নামজারী মামলার জন্য প্রমোদ বিহারী নাথ এসি ল্যান্ডের নাম করে তার কাছে প্রথমে ৭ লাখ টাকা দাবি করে। কিন্তু তিনি অস্বীকৃতি জানালে পরবর্তিতে ৪ লাখ দিতে বলেন প্রমোদ বিহারী। তবে তিনি কোন টাকা দিতে অপারগতা জানান। সাংবাদিক সম্মেলনে তার স্ত্রী উমা রাণীও উপস্থিত ছিলেন।