রামুতে ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী ও বাক প্রতিবন্ধী নারী ধর্ষণের শিকার

fec-image

কক্সবাজারের রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী এবং কচ্ছপিয়া ইউনিয়নে বাক প্রতিবন্ধী নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। পৃথক ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

জানা গেছে, রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ফকিন্নির চর এলাকায় বাক প্রতিবন্ধী নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণকালে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ার পর ওই নারীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নন জুড়িসিয়াল স্ট্যাম্পে মুচলেকাও ধর্ষক। কিন্তু ঘটনার ১০দিন পার হলেও বিয়ে করতে গড়িমসি করায় এখন বিপাকে পড়েছে ধর্ষণের শিকার নারীর পরিবার। রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের ফকিন্নির চর এলাকায় এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষণে অভিযুক্ত আলী হোছন (৩৫) ওই এলাকার সর্দার মো. খলিলের ছেলে।

জানা গেছে, বাক প্রতিবন্ধী ওই নারীর (৩৫) বাড়ি পাশ্ববর্তী গর্জনিয়া ইউনিয়নে। দীর্ঘদিন ফকিন্নির চর এলাকার মামার বাড়িতে থেকে তিনি কৃষি খামার দেখাশোনা করতেন। গত ৭ অক্টোবর খামার ঘরে একা পেয়ে তাকে ধর্ষণ করেন আলী হোছন। পাশের খেতে কর্মরত দিনমজুর শাহজাহান এ ঘটনা দেখে চিৎকার দিলে স্থানীয়রা হাতে-নাতে ধর্ষক আলী হোছনকে ধরে ফেলে।

এসময় আলী হোছন নিজেই নারীটিকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন। এরই প্রেক্ষিতে গত ১০ অক্টোবর সকাল ১০ টায় ধর্ষক আলী হোছনের বাড়িতে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গে উপস্থিতিতে গ্রাম্য শালিস বৈঠক আয়োজন করে। ওই বৈঠকে ধর্ষণের শিকার নারীকে বিয়ের করার লক্ষ্যে একটি নন-জড়িসিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা দেন আলী হোছন। লিখিত অঙ্গীকার নামায় ৬ লাখ টাকা দেন মোহর, ১৫ হাজার টাকার কাপড় এবং আট আনা স্বর্ণ ধার্য্য করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

ধর্ষণের শিকার নারীর ভাতিজা (পরিচয় গোপন রাখা হলো) জানিয়েছেন- নন-জুড়িসিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা দেয়ার কয়েকদিন পর থেকে ধর্ষক আলী হোছন এ বিয়েতে অস্বীকৃতি জানায়। এ কারণে তারা ধর্ষণের অভিযোগে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু মো. ইসমাইল নোমান জানিয়েছেন-এ বিষয়ে তিনি অবগত নন। এরপরও খোঁজখবর নিয়ে এ ব্যাপারে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আজমিরুজ্জামান জানিয়েছেন-এ ঘটনায় থানায় এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি তদন্ত করে সহসা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের কাঠির মাথা নতুন বাজার এলাকায় ধর্ষণের শিকার হয়েছে চতুর্থ শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রী। ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত নুর মোহাম্মদ (৫৫), একই এলাকার মৃত কাশেম আলীর ছেলে। এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার শিশুর বড় বোন বাদি হয়ে সোমবার (১৯ অক্টোবর) রামু থানায় মামলা করেছেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ধর্ষণের শিকার শিশুটির পিতা পেশায় কৃষক। বাবার জন্য খাবার নেয়ার পথে প্রায় সময় অভিযুক্ত নুর মোহাম্মদ শিশুটিকে উত্যক্ত করতো। চলতি বছরের ৫ মে বাবার জন্য খাবার নেয়ার পথে নুর মোহাম্মদ শিশুটিকে ধরে পাহাড়ের পাশে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন এবং এ ঘটনায় মামলা না করার জন্য পরিবারের সদস্যদের হুমকি-ধমকি দেয়।

সর্বশেষ গত ১৪ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টায় শিশুটি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাড়ির বাইরে এলে আগে থেকে ওৎপেতে থাকা নুর মোহাম্মদ শিশুটিকে পাশ্ববর্তী গোয়াল ঘরে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা শুরু করে। শিশুটির আর্তচিৎকারে পরিবারের সদস্যরা এসে ধর্ষক নুর মোহাম্মদকে হাতে-নাতে ধরে ফেলে। এসময় স্থানীয় লোকজন আপোষ-মিমাংসার কথা বলে তাকে ছেড়ে দেয়। এ কারণে তারা নিরুপায় হয়ে সোমবার রামু থানায় মামলা করেছেন।

রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আজমিরুজ্জামান জানিয়েছেন-এ ঘটনায় থানায় মামলা (নং ১৬) রুজু হয়েছে। অভিযুক্ত ধর্ষককে আটকের চেষ্টা চলছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ধর্ষণ, বাক প্রতিবন্ধী
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন