অপহৃত ৪ বাঙ্গালীকে উদ্ধারের দাবিতে রোববার রাঙ্গামাটিতে সড়ক ও নৌ-পথ অবরোধ

aborod3
আলমগীর মানিক, রাঙামাটি:
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি থেকে অপহৃত টেলিটক কোম্পানীর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বিটেকনোলজি’র চারজন কর্মীকে আগামী শনিবারের মধ্যে উদ্ধারের দাবি জানিয়েছে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ ও নাগরিক পরিষদ নামে দুইটি সংগঠন। বেধেঁ দেওয়া সময়ের মধ্যে অপহৃত চারজনকে উদ্ধার করতে প্রশাসন ব্যর্থ হলে রোববার থেকে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে সড়ক ও নৌপথ অবরোধের ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে সংগঠন দুইটির পক্ষ থেকে। মঙ্গলবার বিকেলে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে পাঠানো এক প্রেস বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের প্রচার সম্পাদক মোঃ সুমন স্বাক্ষরিত প্রেস বার্তায় উল্লেখ করা হয়, গত ০৮/০৭/২০১৩ইং সন্ধ্যা আনুমানিক ৭.০০ টায় বাঘাইছড়ি উপজেলায় বারবিন্দু ঘাট এলাকায় টেলিটকের টাওয়ার বসানোর কাজে নিয়োজিত প্রকৌশলী আক্তার হোসেন, হেময়াত উদ্দিন, ইমরুল, সুরুজ মিয়া ও মন্টু চাকমাকে অপহরন করে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা। মন্টু চাকমা উপজাতী হওয়াতে রাতে তাকে ছেড়ে দেওয়া হলেও বাঙ্গালী প্রকৌশলীসহ ৪জনকে প্রশাসন এখন উদ্ধার করতে পারেনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় বার্ষিক চাঁদা না দেওয়ার কারনে তাদের অপহরন করা হয়েছে। অপহৃতদের কাছ থেকে ৩ কোটি টাকা চাঁদা দাবী করা হয়েছে। এর আগেও বিগত ২৫ মার্চ গ্রামীন ফোনের ৩ কর্মকর্তা কর্মচারীকে অপহরন করে মোটা অংকের চাঁদা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পার্বত্য অঞ্চলে প্রতিনিয়ত এধরনের অপহরন, গুম, হত্য, ধর্ষ, চাঁদাবাজি, মুক্তিপন বানিজ্য বেড়েই চলছে। পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ রাঙ্গামাটি জেলা শাখা এহেন অপকর্মের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদে জেলা সভাপতি মুহাম্মদ ইব্রাহীম, সাধারন সম্পাদ মোঃ আলমগীর হোসেন এক যৌথ বিবৃতিতে আরো বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে পাহাড়ী বাঙ্গালীদের সাথে মতবিনিময় সভার দিনই ৪ বাঙ্গালীকে অপহরন করে মুক্তিপন দাবী করা অত্যন্ত দুঃখ জনক।

জেলা সভাপতি মোঃ ইব্রাহীম বলেন, পার্বত্য অঞ্চরে যেই হারে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা বাঙ্গালীদের অপহরন করে বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান থেকে বার্ষিক চাঁদা আদায়সহ গুম, হত্যাসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে পার্বত্য অঞ্চল দিন দিন গৃহ যুদ্ধের দিকে এগুচ্ছে। সংগঠনের সাধারন সম্পাদক মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা যেভাবে একের পর এক গুম, হত্যা, অপহরন, চাঁদবাজি, মুক্তিপনবানিজ্যসহ আদিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু করেছে তাতে মনে হচ্ছে পার্বত্য অঞ্চলে কোন আইনের শাসন নেই। নেই কোন গনতন্ত্র।

৩০ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের এক দশমাংশ পার্বত্য অঞ্চলে আজ গনতন্ত্র হুমকির মুখে। নেই কোন পার্বত্য এলাকার জনগনের নূন্যতম নিরাপত্তা, এভাবে কোন দেশের শাসন ব্যবস্থা চলতে পারে না। নের্তৃবৃন্দ হুশিয়ারী উচ্চারন করে বলেন আমরা প্রশাসনকে ৪৮ঘন্টার আলটিমেটাম দিয়েছিলাম কিন্তু এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও অপহৃত ব্যাক্তিদের উদ্ধার করতে প্রশাসন ব্যার্থ হয়েছে। রমজানকে সামনে রেখে আমরা কর্মসূচী দেইনি। আমরা প্রশাসনের আশ্বাসের ভিত্তিত আশান্বীত হয়েছিলাম যে, প্রশাসন তাদেরকে উদ্ধার করতে স্বক্ষম হবে।

অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আজ পর্যন্ত তাদেরকে উদ্ধার করতে প্রশাসন সম্পূর্ন ব্যর্থ হয়েছে,তাই আমরা রমজান মাস হলেও নতুন কর্মসূচী দিতে বাধ্য হয়েছি। আমরা আশা করি আমাদের বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে প্রশাসন উদ্ধার করতে সক্ষম হবে। আগামী শনিবারের মধ্যে অপহৃত ৪ বাঙ্গালীকে প্রশাসন উদ্ধার করতে ব্যর্থ হলে আগামী রবিবার অর্ধদিবস সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচী পালন করবে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য নাগরিক পরিষদ। তার পরেও ৪ বাঙ্গালীকে প্রশাসন উদ্ধারকে ব্যার্থ হলে পার্বত্যাঞ্চলে কঠোর কর্মসূচীর মাধ্যমে অপহৃত ৪ বাঙ্গালীকে উদ্ধার করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন