অবশেষে আটকের পেকুয়া থানার “বন্দি” নাটকের অবসান!

পেকুয়া প্রতিনিধি :
অবশেষে পেকুয়া থানার ‘বন্দি’ নাটকের অবসান হয়েছে সোমবার গভীর রাতে, দীর্ঘ ৪৮ ঘন্টা পর। এসময় অস্ত্রসহ আটক ইউপি মেম্বার ও আওয়ামীলীগ নেতা নেজাম উদ্দিন নেজু এবং তার সহযোগী ফজলুলকে শ্রীঘরে পাঠানো হলেও বাকী ৩ জনকে মুছলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

থানা সূত্র জানায়, গত ১০ অক্টোবর রাতে আটক ২ জনকে আসামী করে অস্ত্র আইনে একটি মামলা রুজু করা হয় এবং রাত ১১ দিকে আসামিদেরকে শ্রীঘরে পাঠায় পুলিশ। পেকুয়া থানার এসআই সুমন কান্তি নাথ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে মামলাটি রুজু করেন। মামলা নং ৫। তাং ১০-১০-১৬ ইং।

জানা যায়, মামলার বাদী এসআই সুমন কান্তি নাথ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করেন। শনিবারই এসআই সুমন কান্তি নাথ এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছিলেন, রাজাখালী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন নেজু ও তার অপর ৪ সহযোগীকে জুয়ার আসর থেকে একটি অগ্নেয়াস্ত্রসহ আটক করেছেন তিনি।

অপরাপর আটককৃতরা হলেন, কাজির পাড়া এলাকার গোলাম রহমানের পুত্র মো. আনিস, মনির আহমদের পুত্র ফজলুল কাদের, মিয়া পাড়া এলাকার ছোটন আহমদের পুত্র আলী হায়দার ও বাঁশখালী উপজেলার পুঁইছড়ি ইউনিয়নের আলমগীর চৌধুরীর পুত্র দিদারুল ইসলাম চৌধুরী।

স্থানীয়রা জানান, ছেড়ে দেয়া দিদারুল ইসলাম চৌধুরী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি এরশাদুর রহমান চৌধুরীর ছোট ভাই। কেন্দ্রীয় নেতার ভাই বলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে পুলিশ তার রাজনৈতিক পরিচয়ের বিষয় অবগত নয় বলে জানায়।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, ৮ অক্টোবর শনিবার দিবাগত রাতে অস্ত্রসহ জুয়ার আসর থেকে ওই ইউপি সদস্যকে আটকের পর থানায় নানা নাটকীয়তা শুরু হয়। পরদিন সারাদিন থানায় নানা নাটকীয়তা চলে তাদের ছেড়ে দেয়া না দেয়া নিয়ে। এসময় আওয়ামীলীগের উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রায়সব নেতাকে থানা কম্পাউন্ডে উপস্থিত হয়ে ওসির সাথে দেনদরবার করতে দেখা যায়। কিন্তু ঘটনাটি রোববার এবং পরদিন সোমবার সারাদিন অমীমাংসিত থেকে যায়। তবে বিষয়টির রহস্য উদঘাটন ও সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পুলিশ কর্মকর্তারা দফায় দফায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। প্রথমদিকে পেকুয়া থানার ওসি জিয়া মোহাম্মদ মুস্তাফিজ ভূইয়া বেশ কয়েকবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনা ঘোলাটে হয়ে গেলে পরদিন রোববার সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) মতিউল ইসলামও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

অবশেষে সোমবার বিকালে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফেরদৌস আহমদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পর দীর্ঘ ৪৮ ঘন্টা ‘বন্দি’ নাটকের অবসান হয়। সোমবার রাতে সাংবাদিকদের জানানো হয় রাজাখালীর ঘটনায় ২ জনকে আসামি করে মামলা রুজু করা হয়েছে এবং ‘জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা’ ৩ জনকে মুছলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়া মোহাম্মদ মোস্তাফিজ ভূইয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ওই ঘটনায় ২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার আসল রহস্য তদন্তে বেরিয়ে আসবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তদন্তের স্বার্থে দেরীও হতে পারে আবার তাড়াহুড়াও হতে পারে। ছেড়ে দেয়া ৩ জনের বিষয়ে তিনি জানান, তাদের বিরুদ্ধে তদন্তে কোন স্বাক্ষ্য প্রমাণ না পাওয়ায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন