আবহাওয়া অফিসে ছুটি বাতিল, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনে প্রস্তুতি  

বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার:

ধেয়ে আসছে বাংলাদেশের আয়তনের চেয়ে বড় ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ‘ফণী’ আগামী শনিবার (৪ মে) দিবাগত ভোর রাত থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সমগ্র বাংলাদেশ উপকূলে তীব্রভাবে আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানলে বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ১৬০ কি.মি. থেকে সর্বোচ্চ ২৩০ কি.মি. পর্যন্ত উঠতে পারে বলেও জানানা তারা।

২ লক্ষাধিক বর্গকিলোমিটার এর নিম্নচাপ ‘ফণী’র আয়তন বাংলাদেশের ভৌগলিক আয়তনের চেয়েও অনেক বেশী বড় বলে জানা গেছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন থেকে সবকিছু গুরুত্ব সহকারে মনিটর করা হচ্ছে। নিম্নচাপটি প্রকট আকার ধারণ করার আগেই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ সকল উপজেলা ও উপকূলে ইউপি কার্যালয়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হচ্ছে।

বর্তমানে নিম্নচাপটির মুখ অধিকাংশই পুরো বাংলাদেশ উপকূলের দিকে এবং আংশিক ভারতের সমুদ্র উপকূলের দিকে। নিম্নচাপটি গত তিনদিন যাবৎ একই স্থানে স্থির থেকে শক্তি সঞ্চয় করছে। এটি ধীরে ধীরে হ্যারিকেনে রূপ নিচ্ছে। এটি দুর্বল না হয়ে উপকূলে আঘাত হানলে ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ঘূর্ণিঝড় এবং সিডরের চেয়েও অনেক বেশী প্রবল বেগে আঘাত হানার আশংকা করছেন আবহাওয়াবিদরা।

আবহাওয়া অধিদফতরে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ৯টার সার্বিক আবহাওয়া পর্যালোচনা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ৯টায় কক্সবাজার উপকূল থেকে ১৪৬০ কি.মি., চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ১৫৩০ কি.মি., মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১৪৮০ কি.মি. এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ১৪৫০ কি.মি. দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছিল বলে জানা গেছে।

এ ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা প্রস্তুতির জন্য সরকার সারাদেশের আবহাওয়া অফিসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে নিজ নিজ কর্মস্থল ত্যাগ না করার জন্য আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক গত সোমবার (২৯ এপ্রিল) জরুরী চিঠি ইস্যু করেছেন। একই চিঠিতে আবাহাওয়া অধিদফতরের ছুটিতে থাকা সকল স্টাফদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। তাদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হয়েছে।

নিম্নচাপের কারণে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত প্রচন্ড তাপদাহ অব্যাহত থাকবে।

এদিকে, কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় বিশেষ সভায় সবধরণের প্রাক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা বৃদ্ধির আগেই জেলার সমগ্র উপকূলবাসীকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আনা হবে। উপজেলা প্রশাসন, রেড ক্রিসেন্ট, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠণ, এনজিওসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বিষয়টি কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আশরাফুল আফসার (উপ-সচিব) নিশ্চিত করেছেন।

ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আশরাফুল আফসার ঘূর্ণিঝড়সহ সকল দূর্যোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে সকলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন