পাহাড়ে সাংগ্রাই উৎসবে মেতেছে মারমা তরুণ-তরুণীরা
বাংলাদেশের বসবাসরত মারমা জনগোষ্ঠীর বর্ষবরণ উৎসবকে “সাংগ্রাই” বলা হয়। সাংগ্রাই মারমাদের অন্যতম প্রধান ঐতিহ্যবাহী উৎসব। বান্দরবানের আলীকদমে মারমা জনগোষ্ঠী এ উৎসব যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করেছে।
মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) বিকালে ৩টায় পাহাড়ি-বাঙ্গালি জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে আলীকদম উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারের মাঠে সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন যুব কমিটি আলীকদমের আয়োজনে রিলং পোঃ য়ে- জলকেলি ও সম্প্রীতি কনসার্ট (পানি বর্ষণ) উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
মারমাদের সাংগ্রাই উৎসবের প্রধান আকর্ষণ হলো রিলং পোঃ য়ে পানি বর্ষণ অনুষ্ঠান। সাংগ্রাই তিন দিনের উৎসব হলেও অনেক জায়গায় আয়োজকরা সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠান পরিচালনা করে থাকেন। উৎসবে মারমারা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, মেয়েরা থামি ও ছেলেরা লুঙ্গি পড়ে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
সাংগ্রাই উৎসব আয়োজক কমিটির যুব নেতা সুকান্ত বড়ুয়া ও উচ্চছিং মারমা বলেন, মৈত্রী পানি বর্ষণে গান গেয়ে দলে দলে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন শত শত তরুণ-তরুণী। তরুণ-তরুণীরা মুখোমুখি দাঁড়িয়ে একে অপরকে পানি ছোঁড়াছুঁড়ি করতে থাকেন। এভাবে একদলের পর আরেকদল পানি ছোঁড়াছুঁড়ি খেলা খেলতে থাকেন। আনুষ্ঠানিক পানি বর্ষণ খেলা ছাড়াও পথে ঘাটে, পাড়ার মহল্লায় যাকে মন চায় সে তাঁকেই পানি ছিটিয়ে আনন্দ মেটে উঠেন। এতে আবার কেউ কোন আপত্তি করে না বরং এই সময়ে মৈত্রী পানি গায়ে লাগলে শুভ লক্ষণ হিসেবে ধরে নেয়া হয়।
মৈত্রী পানি বর্ষণ অনুষ্ঠানে শুভ উদ্বোধন করেন মাতামুহুরি অনথালয়ের পরিচালক ভদন্ত উ উইচারা মহাথের ভান্তে।
জলকেলি ও সম্প্রীতি কনসার্ট অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতাউল গনি ওসমানী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য দুংড়ি মং মারমা মহাজন, আলীকদম থানার অফিসার ইনর্চাজ ওসি খন্দকার তবিদুর রহমান, আলীকদম সদর ইউপি চেয়ারম্যান নাছির উদ্দীন বিএ, ৩নং নয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন, ২৮৮ নং আলীকদম মৌজার হেডম্যান অংহ্লাচিং মারমা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন অংশেথোয়াই মারমা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আলীকদম উপজেলা শাখা ও সাংগ্রাই উৎসব আয়োজক কমিটির যুব নেতা সুকান্ত বড়ুয়া।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতাউল গনি ওসমানী বলেন, পুরাতন বছরের দুঃখ, গ্লানি ও হতাশা মুছে ফেলে নতুন বছরে অনাবিল সুখ, শান্তি ও আনন্দের প্রত্যাশায় আজকের জলকেলি ও সম্প্রীতির কনসার্ট। এখানে পাহাড়ি-বাঙ্গালি সকলে মিলেমিশে উপভোগ করছে এই প্রোগ্রাম।
তিনি আরও বলেন, চৈত্র সংক্রান্তিতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের বর্ষবরণ উৎসব বৈসাবি সপ্তাহব্যাপী উদযাপিত হচ্ছে। এ উৎসব উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এসময় তিনি সবাইকে আন্তরিকভাবে উৎসব পালন করার জন্য অনুরোধ করেন।
