ইয়াবায় ব্যবহারে জড়িয়ে পড়ছে বান্দরবানের টিনএজারা

ইয়াবা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বান্দরবান শহরে ইয়াবার বিস্তার ঘটায় উটতি বয়সী সন্তানদের নিয়ে উদ্বেগে পড়েছেন অভিভাবকরা। পুলিশ প্রশাসন মাঝে মধ্য সামান্য কিছু ইয়াবা আটক করলেও বড় চালান আটক করার এ পর্যন্ত কোন খবর পাওয়া যায়নি। পুলিশের কিছু সদস্য এ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার ও আশেপাশের উপজেলাগুলো থেকে বান্দরবান শহরে প্রতিদিন ইয়াবার চালান আসছে। ইয়াবা সহজলভ্য হওয়ায় টিন এজাররা হাত বাড়ালেই স্বল্প দামে পাচ্ছে ইয়াবা। তাই বান্দবান জেলা শহরের উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নবিত্তের টিনএজার সন্তানরা ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়ছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইয়াবা বিক্রির সঙ্গে বান্দরবানের মধ্যমপাড়া এলাকার রিনা মল্লিক, ছিরনী বেগম, কামাল উদ্দিন ও তার ভাই মিজান, মেম্বারপাড়া এলাকার রনজিত চৌধুরী, আর্মিপাড়া এলাকার হানিফ, টিসিআই এলাকার শাকিল, বালাঘাটা এলাকার শাওন বড়ুয়া ও শহরের সাদিয়া আবাসিক হোটেলের মালিক রুবেল বড়ুয়াসহ অনেকে জড়িত।

খোঁজ-খবরে দেখা গেছে, পুলিশের খাতায় চিহ্নিত ব্যবসায়ীরা প্রকাশ্য বা গোপনে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। উটতি বয়সের স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররা জড়িয়ে পড়ছে ইয়াবা বিক্রির পাশাপশি সেবনেও। ইয়াবা বিক্রির দায়ে ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ জেল খাটলেও আইনের ফাঁকে তারা আবারও বেরিয়ে এসে ফের পুরনো ব্যবসা চালাচ্ছে পুরোদমে।

ইয়াবা ব্যবসায়ীরা শহরের রেইছা চেকপোস্ট ফাঁকি দিয়ে অনায়াসে কক্সবাজার, লোহাগড়া থেকে মোটরসাইকেলের মাধ্যমে বান্দরবানে নিয়ে আসেন ইয়াবা। গত ৪ জুন বান্দরবান শহরের জর্জকোট এলাকা থেকে ৯৪টি ইয়াবাসহ ছোটন চক্রবর্তী, সুজন দাশ,ফরহাদ উদ্দিন নামের তিন স্কুল ছাত্রকে আটক করে পুলিশ।

গত ৯ অক্টোবর রাতে জেলা শহরের মেম্বারপাড়া এলাকার মাদক ব্যবসায়ী নয়নের কাছে ইয়াবা কিনতে গেলে স্থানীয়রা মদপ্য ডিবি সদস্য উ শৈ মার্মাসহ (নং-৬৫৭) আরো দুজনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এসময় তাদের কাছ থেকে মদ, গাঁজা ও দুইটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। উল্লেখিত ডিবি সদস্য তখন মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে অভিযানে যান বলে দাবি করলেও তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, এই ধরণের কোনও অভিযান তো নয়-ই, এমনকি তখন তার ডিউটি-ই ছিল না।

বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমতিয়াজ আহম্মেদ বলেন, ‘আমরা অপরাধী ধরতে কতটা আন্তরিক আপনারা (সাংবাদিক) জানেন কিন্তু আইনের ফাকঁফোকরে তারা বেরিয়ে এসে ফের অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে।’

শুধু ডিবি সদস্যই নয়, বান্দরবানে অনেক পুলিশ সদস্য বর্তমানে মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। যে কারণে মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাদের সু-সম্পর্কও গড়ে উঠেছে। পুলিশের অনেক সদস্যই তাদের কাছ থেকে মাসোহারা নেয় এমন অভিযোগ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাদক ব্যবসায়ীর।

এদিকে, মাদক ব্যবসায়ী ও আসক্তদের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে শহরের মেম্বারপাড়া এলাকার বাসিন্দারা রাত জেগে পাহারার পাশাপাশি যুব সমাজকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে বলে জানান কমিটির সাধারণ সম্পাদক। তবে আপাতত তারা নিজেদের নাম প্রকাশ করতে চান না।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন