মনগড়া নিলাম দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা

উখিয়ার বালুখালী শুল্ক গুদামের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

fec-image

কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী শুল্ক গুদামের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. শওকত এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট লাইসেন্সধারী ঠিকাদাররা।

যার কারণে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। তার একক ছত্রছায়ায় টেকনাফ ও উখিয়ায় দু’টি শুল্ক গুদাম নিয়ন্ত্রিত হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

কয়েক কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট লাইসেন্সধারীরা অভিযোগ করে জানান, বালুখালী শুল্ক গুদাম কর্মকর্তা মো. শওকত আলী যোগদানের পর থেকে নিলাম প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি ঘটে আসছে। যা দেখার বা বলার কেউ নেই। তার এসব কারনে স্থানীয় লাইসেন্সধারীরা হতাশ হয়ে পড়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের নিয়ম অনুযায়ী যেকোন ধরনের জব্দকৃত মালামাল শুল্ক গুদামে জমা করবেন। তার পরবর্তী কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উক্ত মালামাল প্রকাশ্যে নিলামে ডাক দেবেন। কিন্তু তা কোন কিছু মানছেনা এই রাজস্ব কর্মকর্তা। যত অনিয়ম রয়েছে তার যোগদানের পর থেকে নিয়মে পরিনত হয়েছে।

সম্প্রতি নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত থেকে আটক ৯টি বড় সাইজের মিয়ানমারের গরু নিলাম দিয়েছে মাত্র ৬ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকায়। যার সরকারি মূল্য ছিল ৯ লাখ টাকা। যেখান থেকে সরকার বড় ধরনের রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে। ওখানে আরো বেশি নিলামে অংশকারী থাকলেও সুযোগ দেওয়া হয়নি বলে নিলামে অংশগ্রহণকারীদের অভিযোগ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উক্ত নিলামে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন ঠিকাদার বলেন, বালুখালী শুল্ক গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং রাজস্ব কর্মকর্তা মিলে কোন প্রকার কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট লাইসেন্স এর তোয়াক্কা না করে বহিরাগতদের গরু গুলো নিলামে দিয়ে দেয়। যদি এমন হয় তাহলে আমরা লাইসেন্সধারী যারা ঠিকাদার রয়েছি আমাদের কি অবস্থা হবে?

তারা আরও বলেন, সর্বোচ্চ নিলামকারীর নিকট থেকে ভ্যাট/ট্যাক্স বাবদ সাড়ে ১৭% ছাড়াও বিবিধ খরচ দেখিয়ে আরও ২০% অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেয় রাজস্ব কর্মকর্তা।

বালুখালী শুল্ক গুদামের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত গুদাম কর্মকর্তা অজিৎ প্রসাদ রুদ্র বলেন, আমি একজন জুনিয়র অফিসার। আমার একার পক্ষে কোন মালামাল নিলাম দেওয়া সম্ভব নয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে মালামাল নিলাম দিতে হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বালুখালী শুল্ক গুদামের রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত বলেন, আমিও চাইলে কোন মালামাল নিলাম দিতে পারিনা, আমাদের চট্টগ্রামের কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট অফিসে একটি নিলাম কমিটি রয়েছে, সেখান থেকে অনুমতি দিলেই আমরা নিলাম দিই।

জব্দকৃত মালামাল শুল্ক গুদামে না এনে নিলাম দেওয়ার কোন অনুমতি আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিয়ম নেই, তবুও বিশেষ কারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দেওয়া যেতে পারে । সম্প্রতি ৯টি গরু নাইক্ষ্যংছড়িতে নিলামে বিষয়ে কোন লিখিত অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি তার কোন সদুত্তর দিতে পারেনি।

পরিশেষে তিনিও স্বীকার করেন যে, এভাবে ঘটনাস্থলে নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের আইনের সাথে সাংঘর্ষিক। তবে গরু নিলাম কারীর নিকট থেকে অতিরিক্ত ২০% টাকা নেওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যান।

 

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: অপরাধ, উখিয়া
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন