উখিয়ায় শতকোটি টাকার উন্নয়ন চলছে দায়সারা ভাবে

fec-image

উখিয়ায় শতকোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলছে দায়সারা ভাবে। নিম্নমানের ইট, ইটের খোয়া, বালির পরিবর্তে ময়লা আর্বজনা ও পাহাড়ের লাল মাটি দিয়ে এই উন্নয়ন কাজ চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদাররা প্রভাবশালী রাজনৈতিক মদদপুষ্ট হওয়ায় স্থানীয় লোকজন প্রতিবাদ করলেও কোন কাজ হচ্ছেনা। এলজিইডি বলেছে, কাজ করতে গেলে কিছু এদিক ওদিক হতেই পারে।

উখিয়া সদরের শহীদ মিনার-মালভিটা- প্রাণী সম্পদ হাসপাতাল সড়কটি কার্পেটিং করার নামে ৪ মাস পূর্বে টিকাদার পূর্বতন এইচবিবি সড়কের ইটগুলো খুলে নিয়ে যায়। কাজ না করে মোটামুটি যান চলাচল উপযোগী রাস্তাটি খুলে ফেলে রাখায় জনদূর্ভোগ বেড়েছে। এধরনের যান চলাচল উপযোগী অন্তত ৬ থেকে ৭ গ্রামীণ সড়ক কার্পেটিং এর নামে খুলে রেখে জনদূর্ভোগ সৃষ্টি করে সংশ্লিষ্ট টিকাদার ও তদারকি সংস্থা এলজিইডি লাপাত্তা হয়ে পড়ছে বলে দূর্ভোগের শিকার লোকজন জানান।

রাজাপালং ইউনিয়নের কুতুপালং প্রাইমারি স্কুলের সামনে থেকে পূর্ব পাড়া সড়কটি এক বছর আগে টেন্ডার হলেও সম্প্রতি কাজ শুরু করা হয়েছে। গত বর্ষায় অসংখ্য মানুষ, শিক্ষার্থীদের এসড়কে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়ছিল এলজিইডি ও টিকাদারের অবহেলায়। স্থানীয় অনিল বড়ুয়া, সিরাজ মিয়াসহ অসংখ্য লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ বলেন, ইটভাটার যত পঁচা, নিম্নমানের ইট, খোয়া সবই মেকাডমের নামে রাস্তায় ঢালা হচ্ছে। বালি ভরাটের নামে ঢালা হচ্ছে পাহাড়ের লাল মাটি, ময়লা মিশ্রিত আবর্জনা।

একই ইউনিয়নে দক্ষিণ মাছকারিয়া হতে মধুরছড়া সড়কের আরসিসি ঢালাই কাজ করা হচ্ছে ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে। তদারকি সংস্থার খাম খেয়ালিপনায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যেনতেন ভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ তুলেছেন। দরগাহবিল গ্রামের ছৈয়দ মিয়া চৌধুরীসহ অনেকে জানান, উখিয়া ডাকবাংলো হতে দরগাহবিল সড়ক বর্ধিত ও বিসি কার্পেটিং দ্বারা কাজও চলছে নানা অনিয়ম ও কারচুপির মাধ্যমে।

প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্প কাজের ব্যয় বরাদ্দ, কাজের ধরন, কাজ শুরু ও সমাপ্তির বিস্তারিত বিলবোর্ড দৃশ্যমান স্থানে জনসমক্ষে টাঙানোর সরকারি নির্দেশনা থাকলেও উখিয়ার কোথায় এগুলো দেখা যায়নি।

স্থানীয় গফুর মিয়া চৌধুরী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, রোহিঙ্গা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হওয়ায় জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার অর্থায়নে উখিয়ার সর্বত্র চলছে শত কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কৃষিসহ বিভিন্ন ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন এসব প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত।

স্থানীয় একাধিক টিকাদার জানান, প্যাকেজ ভিত্তিক হওয়ায় প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় বরাদ্দ প্রায় শত কোটি টাকার বেশি। প্যাকেজ ভিত্তিক এসব দরপত্র ঢাকা কেন্দ্রীক কুক্ষিগত করায় এগুলোতে স্থানীয়ভাবে দরপত্রে অংশ গ্রহণের তেমন সুযোগও নেই বলে জানান তারা।

ফলে সবকিছু রাজনৈতিক ও আমলা কেন্দ্রীক নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় গুটিকয়েক প্রভাবশালী টিকাদার ও টিকাদারী ফার্ম যেনতেনভাবে কোন রকমে দায়সারা কাজ করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এলজিইডির উখিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলামকে বলেন, বিশ্ব ব্যাংক এডিবির অর্থায়নে উখিয়ায় ব্যাপক উন্নয়ন যজ্ঞ চলছে। এসব উন্নয়ন কাজে এদিক ওদিক হতেই পারে। ঠিকাদার কর্তৃক কয়েকটি রাস্তার পূর্বের ইট খুলে নেয়া ও জনদূর্ভোগের ব্যাপারে তিনি জানেন না বলে জানান। এরপরেও চলমান কাজের গুণগত মান ভাল বলে তিনি দাবী করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন