উপকূলে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত, নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে `মোরা’ উপদ্রুতদের
ডেস্ক রিপোর্ট : ঘূর্ণিঝড় মোরা উপদ্রুত এলাকার বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার জরুরি নির্দেশ দিয়েছে সরকার। উপকূলে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানোর পর থেকে সরকারের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে জরুরি নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় অর্থ ও খাদ্য বরাদ্দ।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ বাংলাদেশ উপকূলের ৩০৫ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ‘মহাবিপদ সংকেত’ দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।সোমবার (২৯ মে) সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানোর পর এ জরুরি নির্দেশনা দেওয়া হয়।
আবহাওয়া অফিস বলছে, মঙ্গলবার (৩০ মে) সকাল নাগাদ উপকূলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় মোরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) পরিচালক আহমাদুল হক রাত ৮টায় বলেন, উপকূলে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানোর পর স্থানীয় প্রশাসন ও মাঠ পর্যায়ের স্বেচ্ছাসেবকদের জরুরি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ঘণ্টায় ৮৯ থেকে ১১৭ কিলোমিটার শক্তির ঝড়ো হাওয়া নিয়ে এ ঘূর্ণিঝড় মঙ্গলবার সকাল ৬টা নাগাদ কক্সবাজারের কুতুবিদয়া, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ ও হাতিয়া হয়ে উপকূল রেখা অতিক্রম করতে পারে
আক্রান্ত হলে সময় নষ্ট না করে দুর্গতদের দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে প্রশাসনকে। স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকরাও সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছেন।
সিপিপির তালিকাভুক্ত ৫৫ হাজার ২৬০ জন কর্মী রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এরইমধ্যে উপকূলীয় এলাকার স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন। তারা ১০ নম্বর সিগন্যালের সাইরেন বাজাচ্ছেন, মাইকিং করছেন।
সিপিপির কর্মসূচি অনুযায়ী, ৮-১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের সময় মেগাফোন, মাইক, হ্যান্ড সাইরেন, পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম দিয়ে স্থানীয় জনগণকে অবহিত করা হয়। এসময় উত্তোলন করা হয় তিনটি সংকেত-পতাকা।
জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের বলা হয়েছে যত দ্রুত সম্ভব উপকূলের মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে।
মানুষের ক্ষতি যাতে না হয় সেজন্য স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, শিক্ষা ও সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোকে জরুরি নির্দেশনা এবং সকালেই অর্থ ও প্রয়োজনীয় খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা।
কক্সবাজার, পটুয়াখালী, বাগেরহাটসহ উপকূলীয় বিভিন্ন জেলায় সোমবার সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। বিকালে কক্সবাজারে নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হওয়ায় লোকালয়ে ঢুকে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।
উপকূলীয় ১৯ জেলায় মাইকিং করে নিচু এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে নিরাপদ আশ্রয়ে। মেডিকেল টিম গঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য ও ৫০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে জরুরি উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতার জন্য।
ঝড়ের কারণে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থেকে প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আবহাওয়াবিদ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।