এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত

fec-image

শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ৪১তম দিনে পবিত্র রমজান মাসে রোজা রেখে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শিক্ষক-কর্মচরিগণ এসে অবস্থান করছেন।

দুপুরের দিকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডেন্ট ও বিরুধী দলীয় উপনেতা জনাব জি.এম কাদের এমপি ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব জনাব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে সংহতি প্রকাশ করেন। জনাব জি. এম. কাদের এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের দাবির প্রতি সমর্থন করেন ও এ দাবি বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে আহবান জানান ।

সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য কমিয়ে আনতে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারিগণের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির দাবি জানান। দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষকগণ রাজপথে অবস্থান করছেন অথচ সরকারের পক্ষ থেকে কোন সাড়া না পাওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন। আগামি নির্বাচনে জাতীয় পার্টি সরকার গঠন করলে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ করা হবে ঘোষনা দেন।

আহবায়ক অধ্যক্ষ মাঈন উদ্দিন ও সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন বলেন আমরা দীর্ঘ ৪১ দিন ধরে এখানে অবস্থান করছি এবং ১২ থেকে ১৬ মার্চ এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে তিন ঘন্টার কর্মবিরতি পালিত হয়েছে। প্রেসক্লাবে অবস্থান করে অসুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার মাওলানা খলিলুর রহমান ও নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলার গোলাম রাব্বানী স্যার মৃত্যুবরণ করেন অথচ সরকারের পক্ষ থেকে কোন প্রকার খোঁজ খবর নেওয়া হয়নি। জাতীয় পার্টির প্রেসিডেন্ট, মহাসচিবসহ সকল নেতাকর্মীর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষক-কর্মচারিগণ বলেন “স্বাধীনতার একান্ন বছর পরেও এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারিগণ সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। পাঠ্যক্রম, আইন এবং একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালিত হলেও সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারিগণের সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিরাট পার্থক্য বিরাজমান।

বৈষম্য গুলো হলো- বাড়ি ভাড়া, উৎসবভাতা, চিকিৎসা ভাতা, পদোন্নতি না থাকা, সন্তানের শিক্ষা ভাতা, হাউজ লোন, বদলি প্রথা, চাকরি শেষে নেই পেনশনের সুবিধা। অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্ট্রে শিক্ষক-কর্মচারিগণের নিকট থেকে প্রতি মাসে বেতনের ১০% করে কেটে রাখলেও বৃদ্ধ বয়সে যথাসময়ে এ টাকা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা নেই। অনেক শিক্ষক-কর্মচারী টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যান। অধিকাংশ শিক্ষক নিজ জেলার বাইরে চাকরি করেন, তাদের জন্য বদলী ব্যবস্থা চালু অতীব জরুরি।

অধ্যক্ষ থেকে কর্মচারী পর্যন্ত নামমাত্র ১০০০ টাকা বাড়িভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা একজন শিক্ষক ২৫% উৎসব ভাতা পান। বিশ্বের কোনো দেশে শিক্ষা ব্যবস্থায় এমন বৈষম্য আছে বলে মনে হয় না। এই বৈষম্য দূরীকরণে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ জরুরি। এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণে প্রয়োজন শুধু সরকারের সদিচ্ছা ও সুষ্ঠু নীতিমালা।

প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন ও টিউশন ফি বাবদ যা আয় হয় তার যথাযত ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলেই ভর্তুকী ব্যাতিরেকেই জাতীয়করণ সম্ভব। উপস্থিত শিক্ষক-কর্মচারিগণ সরকারের পক্ষ থেকে কোন প্রকার যোগাযোগ না করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন