কক্সবাজারের বিধস্ত বেড়িবাঁধ, অরক্ষিত উপকূল, অনিশ্চিত চিংড়ি চাষ

Coxs Koroshkol Band 02

আবদুল্লাহ নয়ন, কক্সবাজার:

কক্সবাজার শহরের উপকণ্ঠ খুরুশকুলের দুইটি পয়েন্টে বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ নিয়ে আতঙ্কিত উপকূলবাসী। এক অংশে চলছে ‘ব্লক প্লেসিং’ এর কাজ এবং অপর অংশে চলছে নির্মাণ কাজ। বর্ষা মৌসুম শুরু আগেই ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ সংস্কার ও নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধের কাজ সম্পন্ন না হলে ধান ও চিংড়ি চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়ার পাশাপাশি জানমালের ক্ষতির আশংকা স্থানীয়দের।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, খুরুশকুল রাখাইন পাড়াস্থ বিধ্বস্থ বেড়িবাঁধে পানি উন্নয়ন বোর্ড সংস্কারের কাজ করছে। ইতোমধ্যে ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ক্ষতিগ্রস্থ বাধে ব্লক বসানো হয়েছে। বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্থ বাকি অংশে ৫১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে চলছে ব্লক বসানোর কাজ। তবে গত ৪ এপ্রিল থেকে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ঠিকাদার।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, এলাকার কিছু প্রভাবশালী চক্রের চাঁদাবাজির কারণে ঠিকাদার কাজ না করে চলে গেছেন। অথচ এখনো ক্ষতিগ্রস্ত বাধের বেশির ভাগ অংশে ‘ব্লক প্লেসিং’ এর কাজ বাকি রয়ে গেছে।

খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুর রহিম মাষ্টার জানিয়েছেন, যে অংশটুকু কাজ না করে ঠিকাদার চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তা যদি এখনই ব্লক বসিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ করা না গেলে পুরো ইউনিয়নই জলোচ্ছাসে প্লাবিত হবে।

তিনি আরো জানান, বাঁধের কাজ সম্পন্ন না হলে ইউনিয়নের ৭০ হাজার বাসিন্দা মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হবে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আবদুল হামিদ (৪৩) জানিয়েছেন, বেড়িবাঁধের বাকি অংশে ব্লক বসিয়ে সংস্কার করা না হলে আমাদের চিংড়ি ও ধান চাষের ব্যঘাত ঘটবে।

সরেজমিন পরিদর্শনকালে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, খুরুশকুল-পিএমখালী বেড়িবাঁধ প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজ চলছে। তবে কাজ থেমে থেমে খুব ধীরগতিতে চলছে। চিংড়ি ঘের এর মালিকরা যদি পানি ঢুকিয়ে দেয় বা চাষ শুরু করে এবং বর্ষা শুরু হলে মাটি পাওয়া যাবে না। ফলে কাজ সম্পন্ন করা যাবে না।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম (৩৭) জানিয়েছেন, খুরুশকুল-পিএমখালী বেড়িবাঁধ শীঘ্রই নির্মাণ সম্পন্ন না হলে দুই হাজার একর জমির চিংড়ি অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এলাকা জোয়ার ভাটায় পরিণত হবে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাঈন উদ্দিন জানিয়েছেন, ঝড় জলোচ্ছাস ও ঘুর্ণিঝড় থেকে উপকুল রক্ষায় কক্সবাজার জেলায় ৫৯৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এলাকা রয়েছে। তন্মধ্যে বেড়িবাঁধের কোন অস্তিত্ব নেই ৭০ কিলোমিটারেরও বেশি এলাকায়। এছাড়া যে সব বেড়িবাঁধ বর্তমানে বিদ্যমান রয়েছে তাও অনেক পুরোনো। প্রতি বছরই কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে নতুন নতুন বেড়িবাঁধ ও ব্লক নির্মাণ হচ্ছে। ঝড় জলোচ্ছাসে তাও অনেক জায়গায় তলিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে খুরুশকুল সহ বেশ কিছু উপকুলীয় এলাকা বর্তমানে অত্যন্তঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যার মধ্যে রাখাইন পাড়া ও খুরুশকুল-পিএমখালী বেড়িবাঁধে জরুরী ভিত্তিতে কাজ চলছে। যা শীঘ্রই সম্পন্ন হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন