কক্সবাজারে গাইনি চিকিৎসকের অভাবে প্রসূতি সেবা বন্ধের উপক্রম!

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে তিনদিন ধরে প্রসূতিদের সেবা মিলছে না। এতে প্রসূতি ওয়ার্ডে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি থাকার খবরে হাসপাতালে আসা প্রসূতিরা মনোক্ষুন্ন হয়ে হাসপাতাল ছাড়ছেন। অনেকে সেবা না পেয়ে নিজ উদ্যোগে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন অন্যত্র।

আবার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা না দিলেও এর পার্শ্ববর্তী বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ঠিকই চিকিৎসা দিচ্ছেন গাইনি চিকিৎসকরা। এ নিয়ে সেবা প্রার্থীদের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

অভিযোগ স্বীকার করে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. সোলতান আহমদ সিরাজী বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। হাসপাতালে সব আছে কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে গাইনি চিকিৎসক নেই। এ ব্যাপারে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দফতরে চিকিৎসক চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, কক্সবাজার সদর হাসপাতাল অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান। রোহিঙ্গা ইস্যুর পর আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন এনজিও সংস্থা হাসপাতালে অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে। ফলে অনেক জটিল রোগের সেবা এখন কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মিলছে। এখানে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অস্থায়ী ক্যাম্পাস হওয়ায় কলেজের বিভিন্ন বিভাগের প্রফেসর ও হাসপাতালের কনসালটেন্ট এবং মেডিকেল অফিসারদের অতিরিক্ত সেবা পাচ্ছেন রোগীরা।

অন্যান্য রোগের সঙ্গে এ হাসপাতালে গত বছর এক বছরে প্রায় ৯ হাজার প্রসূতি সেবা পেয়েছেন। এদের মাঝে সিজারিয়ান ডেলিভারি সেবা পেয়েছেন প্রায় আড়াই হাজার প্রসূতি। তাই চলমান সময়ে প্রসূতি সেবার জন্য মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ছাড়াও বিত্তশালীরাও সদর হাসপাতালকেই পছন্দের এক নম্বর তালিকায় রাখছেন।

কিন্তু গর্ভকালীন সেবা পেলেও গত শুক্রবার থেকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রসূতি সেবা পাচ্ছেন না প্রসব বেদনা নিয়ে হাসপাতালে আসা নারীরা। এতে সচ্ছল পরিবারের সন্তান সম্ভাবাকে বেসরকারি হাসপাতালে প্রসব করানো হলেও ভোগান্তিতে পড়ছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান সম্ভাবা মায়েরা। সেবা না পেয়ে অনেকে নিজ উদ্যোগে হাসপাতাল ছেড়ে গ্রামের ধাত্রি বা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাচ্ছেন।

সূত্র আরও জানায়, সদর হাসপাতালে গাইনি বিভাগের সিনিয়র ও জুনিয়র কনসালটেন্টের দুটি পদ থাকলেও তা শূণ্য রয়েছে। কিন্তু সদর হাসপাতালটি কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অস্থায়ী ক্যাম্পাস হওয়ায় কলেজের গাইনি বিভাগের শিক্ষকগণ নিয়মানুসারে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে সেবা দিতে বাধ্য। বিগত সময়ে সেটি-ই হয়ে এসেছে। তাই হাসপাতালের সৃষ্ট পদ খালি থাকলেও সেবার কমতি হয়নি। কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকে কলেজের গাইনি বিভাগে কর্মরত শিক্ষকরা থিওরিক্যাল ক্লাসেই সব দ্বায় সারছেন। প্রাকট্রিকাল ক্লাসে বাস্তবিক অপারেশনে না আসায় সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন প্রসূতিরা।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজারে গাইনি চিকিৎসকের অভাবে প্রসূতি সেবা বন্ধের উপক্রম!
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন