কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ও দুদকের পিপিসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আবারও মামলা

10814210_730205003740456_1318474606_n

কক্সবাজার প্রতিনিধি :

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো: রুহুল আমিন এবং দুদক‘র এপিপি এডভোকেট আব্দুর রহিমসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আবারও মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল সকালে কক্সবাজার স্পেশাল জজ আদালতে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে কায়সারুল হক চৌধূরী বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করা করেন।

বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য দূর্নীতি দমন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় অন্যান্য অভিযুক্তরা হচ্ছেন এডভোকেট মোস্তাক আহম্মদ, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইটিসি) এস এম শাহ হাবিবুর রহমান হাকিম।

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীর মরহুম নুর মোহাম্মদ সিকদারের পুত্র কায়সারুল হক চৌধুরী‘র দায়ের করা মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রকল্প ‘মাতারবাড়ি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে’ জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগে গত ১৯ নভেম্বর জেলা প্রশাসক সহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে একই আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। উক্ত মামলা তদন্তের জন্য আদালত দুদকের কাছে প্রেরণের মাধ্যমে আগামী ২০ জানুয়ারীর মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য্য করেন। এ মামলায় নিয়োজিত আইনজীবি মোস্তাক আহম্মদ, দুদকের এপিপি এডভোকেট আব্দুর রহিম সুকৌশলে জেলা প্রশাসকসহ কয়েকজন অভিযুক্তের কাছ থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও জেলা প্রশাসকের নাজির স্বপন কান্তির মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা নিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে মামলা হতে নাম বাদ দিয়ে দুদকের কাছে প্রতিবেদন পাঠায়।

বাদীর স্বাক্ষর নকল করে অভিযুক্তরা জালিয়াতির আশ্রয় নেয়ায় পুনরায় এ মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবি ছিলেন এডভোকেট জাকারিয়া।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো: রুহুল আমিনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি মামলার ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে পার্বত্যনিউজকে জানান।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ নভেম্বর কক্সবাজারের মহেশখালী মাতারবাড়ি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণে ভূয়া কাগজপত্র দেখিয়ে ২৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মাতারবাড়ির বাসিন্দা এ.কে.এম কায়সারুল ইসলাম বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলার আসামীরা হলেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো: রুহুল আমিন, সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো: জাফর আলম, সাবেক জেলা ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা আরেফিন আক্তার নুর, মহেশখালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মশিউর রহমান, কোল পাওয়ার জেনারেশন কোং বাংলাদেশ লি: এর পিডি ইঞ্জিনিয়ার মো: ইলিয়াছ, জেলা ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সাবেক প্রধান সহকারি আবুল কাশেম মজুমদার, সাবেক কাননগো আবদুল কাদের, সাবেক সার্ভেয়ার ফখরুল ইসলাম ও বাদশা মিয়া, মহেশখালী মাতার বাড়ী এলাকার বাসিন্দা রফিকূল ইসলাম, মহিবুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, মোহাম্মদ হারুন, জমির উদ্দিন, এরফান, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, মো:সেলিম, জি.এ ছমি উদ্দিন, নুর আহমদ, মো: নুরুল ইসলাম, আবুল বশর, আশরাফ আলী, দানু মিয়া, মির কাশেম, মো: সেলিম উদ্দিন, রিদুয়ান, আনিছুর রহমান ও ছকি আলম।

উল্লেখ্য, মহেশখালী দ্বীপের মাতারবাড়ী ইউনিয়নে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগি সংস্থা-জাইকা এ প্রকল্পে ২৮ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা ঋণ দেবে। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেয়া হবে সাত হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা। বাকি তিন হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা প্রকল্পের বাস্তবায়নকারি সংস্থা কোল পাওয়ার জেনারেশন কম্পানী লিমিটেড যোগান দেবে। আগামী ২০২৩ সাল নাগাদ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন