কক্সবাজার বিমানবন্দরে জেনারেটর ক্রয়ে দূর্নীতি: কর্মকর্তাসহ ৫ আসামী কারাগারে

বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার:

কক্সবাজার বিমানবন্দরে জেনারেটর ক্রয় দূর্নীতির মামলায় কর্মকর্তাসহ পাঁচজনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

জানাগেছে, বিমানবন্দরের জন্য জেনারেটর ক্রয়ে দূর্নীতির দায়ে বেসামারিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও কক্সবাজার বিমানবন্দরের সাবেক কর্মকর্তাসহ পাঁচজনকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত।

সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে স্থায়ী জামিনের জন্য আবেদন করলে আদালতের বিচারক খোন্দকার হাসান মো. ফিরোজ জামিন নামঞ্জুর করে আসামীদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আসামীরা হলেন- মেসার্স ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী এবং প্রকল্পের ঠিকাদার শাহাব উদ্দীন, বেসামারিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সাবেক সহকারী প্রকৌশলী ভবেশ চন্দ্র সরকার, কক্সবাজার বিমান বন্দরের সাবেক ব্যবস্থাপক হাসান জহির, বেসামারিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী মিহির চাঁদ দে এবং বেসামারিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শহীদুল আফরোজ।

তবে মামলার আরেক আসামী কক্সবাজার বিমান বন্দরের সাবেক সিনিয়র উপসহকারী প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম মন্ডল আদালতে হাজির হননি।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে কক্সবাজার বিমানবন্দরের জন্য একটি ৩শ’ কিভিএ জেনারেটর ক্রয়ের নিমিত্তে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু বেসামারিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কতিপয় কর্মকর্তা ও ঠিকাদার যোগসাজস করে জেনারেটরটি ক্রয় না করেই ক্রয় দেখিয়ে ৬০ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। এই অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দীর্ঘ তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে গত ৬ জানুয়ারি দুদকের চট্টগ্রাম অঞ্চল-২ এর উপপরিচালক মাহবুবুল আলম বাদি হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার নং-জিআর-২৬/১৯।

মামলায় আসামী করা হয়, প্রকল্পের ঠিকাদার মেসার্স ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী শাহাব উদ্দীন, বেসামারিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সাবেক সহকারী প্রকৌশলী ভবেশ চন্দ্র সরকার, কক্সবাজার বিমানবন্দরের সাবেক ব্যবস্থাপক হাসান জহির, বেসামারিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী মিহির চাঁদ দেম বেসামারিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শহীদুল আফরোজ, কক্সবাজার বিমান বন্দরের সাবেক সিনিয়র উপসহকারী প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম মন্ডলকে।

দুদকের পিপি মো. আবদুর রহিম জানান, ওই মামলায় উচ্চ আদালত আগাম জামিন আবেদন করলে আদালত আসামীদের চার সপ্তাহের অন্তবর্তীকালীন জামিন দেন এবং নিম্ন আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন। উচ্চ আদালতের অন্তবর্তীকালীন জামিনের মেয়াদ শেষ হলে আসামীদের পাঁচজন কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে আসামীদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আসামীদের পক্ষে এড. নূরুল মোস্তফা মানিকের নেতৃত্বে ২০ জনের অধিক আইনজীবী শুনানী করেন এবং রাষ্ট্রপক্ষে শুনানী করেন দুদকের পিপি এড. মো. আবদুর রহিম। তাকে সহযোগিতা করেন সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।

দুদকের পিপি মো. আবদুর রহিম বলেন, ‘মামলাটি রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে আসামীদের জামিনের বিরুদ্ধে লড়েছি। আদালত সব কিছু বিবেচনা করে জামিন না মঞ্জুর করে আসামীদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার কার্যক্রম চলমান থাকবে।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন