কাউখালীতে ইউপিডিএফ জেএসএস সংঘর্ষে এ পর্যন্ত নিহত ৩ আহত ৫

Kawkahli. Rangamati News pic

আরিফুল হক মাহবুব, কাউখালী:

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রাঙ্গামাটির কাউখালীতে ইউপিডিএফ জেএসএস সংঘর্ষের ঘটনায় এপর্যন্ত ৩জন নিহত ও অন্তত ৫ জন গুরুতর আহত হয়েছে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েক হাজার রাউন্ড ভারী অস্ত্রের গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে বলে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। বন্ধুক যুদ্ধের ঘটনার খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল ঘটনাস্থলে গেলে তাদের লক্ষ করে গুলি চালায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এসময় সেনাবাহিনীও পাল্টা গুলি ছোঁড়লে তোপের মূখে সন্ত্রাসীরা আরো গহীন অরণ্যে পালিয়ে যায়।

কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ নিলু কান্তি বড়ুয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল লাশ উদ্ধারে ঘটনাস্থল রওনা হয়েছেন।

উল্লেখ্য, ৩ মার্চ রাত দুইটায় কাউখালীর শেষ সীমান্তে জীবতলী ফুরমন নামক দূর্গম পাহাড়ী অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষ একে অপরকে প্রতিহত করতে রণপ্রস্তুতি গ্রহণ করে। রাতভর ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে উভয়পক্ষ অবিরাম গুলি ছুড়তে থাকে। এসময় রাঙামাটির জুরাছড়ি থানার রাসেল চাকমা (৩২), নানিয়ারচর থানার রামহরি পাড়ার উমেষ চাকমার ছেলে প্রিয়লাল চাকমা (৪০) ও অজ্ঞাত একজনসহ ৩জন জেএসএস নেতা নিহত হয়েছে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে আরো অন্তত পাঁচজন। নিহত তিনজনের মধ্যে রাসেল চাকমা ও প্রিয়লাল চাকমার লাশ জেএসএস সরিয়ে ফেললেও অপর একজনের লাশ গত দু’দিন ধরে ঘটনাস্থলে পড়ে থাকতে দেখেছে এলাকাবাসী। নিহত জেএসএস’র দু’সদস্যের লাশ রাঙ্গামাটির রাঙ্গাপানি এলাকায় দাহ করা হয়েছে বলে একটি নিশ্চিত করেছে।

এখবর নিশ্চিত হওয়ার পর কাউখালী থানার ওসি নিলুকান্তি বড়ুয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল জীবতলী ফুরমন এলাকায় পৌঁছেছে। ওসি জানান, ঘটনাস্থলে ব্যাপক গোলাগুলির আলামত পাওয়া গেছে। অসংখ্যগুলির খোসা যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কাউখালী থানা পুলিশ পড়ে থাকা লাশের সন্ধান পায়নি।

পুলিশ জানায়, লাশ উদ্ধারে স্থানীয় সাধারণ মানুষের কোন সহযোগিতা পাচ্ছিনা। এছাড়াও ঘটনার পর থেকে পুরো এলাকা মূলত পুরুষশূণ্য হয়ে পড়েছে। যেসব বাড়ীঘর রয়েছে তাতে নারী সদস্যরা থাকলেও ভয় এবং আতংকে তারা কোন কথা বলতে সাহস পাচ্ছেনা। তাছাড়া পুলিশ আসার খবর শুনে সাধারণ পাহাড়ীদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। এসময় বাড়ী ঘর ছেড়ে অনেকে ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে পালিয়ে যেতে থাকে।

এ ব্যাপারে ইউপিডিএফ ও জেএসএস পরস্পর বিরোধী বক্তব্য প্রদান করেছে। জেএসএস কাউখালী উপজেলা সভাপতি সুভাস চাকমা জনান, ঐ এলাকাটি ইউপিডিএফ অধ্যুষিত এলাকা। তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে এধরনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। এঘটনায় জেএসএস’র কোন সম্পৃক্ততা নাই।

ইউপিডিএফ কাউখালী ইউনিটের সনম্বয়ক রাহেল চাকমা জানান, এঘটনার সাথে ইউপিডিএফ কোন সম্পৃক্ততা নাই। জেসএসএস’র অপর একটি গ্রুপকে ইউপিডিএফ মনে করে এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়ে। ফলে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন