কাপ্তাই হ্রদের কচুরিপানা আপসরণ না করায় হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষ বেকার

BOAT

কাপ্তাই প্রতিনিধি :

দীর্ঘ চারমাস অতিবাহিত হলেও কাপ্তাই জেটিঘাট এলাকার কচুরিপানা জটের কোনো কুলকিনারা না করায় নৌকা এবং সাম্পান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এ এলাকার একমাত্র বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্রের সকল কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।

নৌকা, সাম্পান চালাতে না পেরে হ্রদের পার্শ্ববর্তী খেটে খাওয়া শতাধিক মাঝিসহ হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষ বেকার হয়ে পড়েছেন। আয়রোজগারের পথ নৌকা এবং সাম্পান না চালাতে পেরে মাঝিরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবতার জীবনযাপন করছেন।

উল্লেখ্য, কাপ্তাই হ্রদের বিভিন্ন এলাকা হতে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে প্রচুর পরিমাণ কচুরিপানা ভেসে এসে কাপ্তাইয়ের একমাত্র বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র আপষ্ট্রিম জেটিঘাট এলাকার হ্রদের চারপাশে জড়ো হয়। ফলে সাম্পানে করে ২ মিনিটের যাতায়াতের পথ পাড়ি দিতে সময় লাগে ২/৩ ঘন্টা। সময়মতো এ কচুরিপানা না সরানোর কারণে তা এখন সকলের মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে কয়েক হাজার মানুষের রুটিরোজগারের ব্যবস্থা। উৎপাদনে ধস নেমেছে কাঁচামালামাল বিউবো কার্গো প্রণালী টলি, কেপিএম বাঁশ সরবরাহ, মৎস্য কর্পোরেশনসহ কয়েকটি শিল্পকারখানার। ফলে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয় হতেও বঞ্চিত হচ্ছে।

কাপ্তাই জেটিঘাট এলাকার এ সমস্যা সমাধানের জন্য রাঙ্গামটি জেলার সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু এমপি, সতন্ত্র সদস্য উষাতন তালুকতার এমপি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, জেলা প্রশাসক, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনওসহ বিভিন্ন উধর্বতন কর্মকর্তাগণ আশ্বাস দিলেও তা গত চার মাসেও কার্যকর হয়নি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাম্পান মাঝি বদি, দুলাল দাশ, আনোয়ারসহ আরও কয়েক জানান, ‘আগে জেটিঘাট এলাকায় সাম্পানা চালিয়ে প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার টাকা রোজগার করতাম। এখন তিন/চারমাস যাবত বেকার। সন্তানদের লেখা পড়ার খরচও দিতে পারছি না। আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।’

কাপ্তাই ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবদুল লতিফ বলেন, মানুষের দুরদীন চলছে, ‘তাদের মুখের দিকে তাকানো যায় না। কিন্তু আমার একার পক্ষে এই বিপুল পরিমাণ কচুরিপানা অপসারণ করা সম্ভব নয়। আমি বিউবোর কর্মকর্তাকে বলে কচুরিপানা আপসারণের জন্য অনেক চেষ্টা করছি তবুও শেষ হচ্ছে না। এ সমস্যা দেখার জন্য কয়েকজন এমপি, সচিব, জেলা প্রশাসক এসে সরজমিনে দেখে গেছেন এবং তারা সমাধান করার আশ্বাস দিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কচুরিপানা সরানোর কোনো উদ্যোগ আমরা দেখছি না।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন