কাল বৈশাখীর তাণ্ডবে মহেশখালীর লবণ চাষীদের মাথায় হাত

4.5

মহেশখালী প্রতিনিধি:

জরীপ অনুযায়ী লবণ উৎপাদনে ব্যবহৃত জমির পরিমাণ মহেশখালীতে ২০হজার ৩২৩ একর। আর উৎপাদিত লবণের পরিমাণ ১২হাজার ৩৯৬ টন। কিন্তু হঠাৎ করে কাল বৈশাখীর কবলে পড়ে প্রায় ১২ হাজার লবণ চাষীদের মাতায় হাত দিতে হয়েছে। নিভে গেছে চাষীদের মন ভরা আশার আলো।

দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর একটি অন্যতম অর্থকারী ফসলের নাম লবণ। প্রকৃতির অপূর্ব লীলা পৃথিবীর অন্যন্য দেশের সমুুদ্রের লোনা পানির চেয়ে এ অঞ্চলের লোনা পানির ঘনত্ব সবচেয়ে বেশী। তাই কক্সবাজার জেলায় প্রাকৃতিক উপায়ে লবণ উৎপাদন সহজ। আর কারণে দেশের লবণ উৎপাদনের প্রধান জেলা কক্সবাজার। এ জেলায় উৎপাদিত লবণ সারা দেশের চাহিদা মেটাতে সক্ষম। আর জেলার সিংহভাগ লবণ উৎপাদিত হয় মহেশখালীতে। গত বছর প্রায় ৫লাখ টন লবণ উৎপাদিত হয় এই উপজেলায়।

এ বছর লবণ চাষের শেষের দিকে এসে হঠাৎ কাল বৈশাখী শুরু হওয়ায় লবণ চাষীরা চরম বিপাকে পড়েছে। সরকার বিসিক-এর মাধ্যমে লবণ শিল্প উন্নয়ন প্রকল্প নামে ১টি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। যার উদ্দেশ্য হচ্ছে উপকূলীয় অঞ্চলের চাষীদের উন্নত মানের সাদা লবণ উৎপাদনে কারিগরী সহয়তা প্রদান। যাতে চাষীরা লবণের ন্যায্য মূল্য পায়। চাহিদা মত লবণ উৎপাদন হলে বিদেশ থেকে লবণ আমদানী করতে না হয়।

লবণ একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ফসল মনুষ্য খাদ্য, পশু ও মৎস্য খাদ্য এবং বিভিন্ন শিল্প কারখানায় ব্যবহার হয়। মহেশখালীতে প্রায় ১২ হাজার পরিবার মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লবণ শিল্পের উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।

তাই লবণ চাষীদের উন্নয়ন ও স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য মহেশখালীতে একটি লবণ বোর্ড গঠন করা মহেশখালী বাসির দীর্ঘ দিনের দাবি। সাধারণত অগ্রহায়ন মাস থেকে বৈশাখ মাস পর্যন্ত লবণ উৎপাদনের মৌসুম। এ সময় এলাকায় ধনী দরিদ্র প্রত্যেকের আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য লক্ষ্য করা যায়। প্রত্যেকের মুখে প্রাণ খোলা হাসি ফুটে ওঠে। কিন্তু বিগত দুই থেকে তিন বছর লবণের বাম্পার ফলন হওয়ায় মাঠ পর্যায়ে লবণের দাম অত্যাধিক হ্রাস পেয়েছে। এবারে লবণের চড়া মূল্য পাওয়ায় চাষীদের ঘরে ঘরে খুশির বন্যা বইছিল। আর হঠাৎ এই খুশির আমেজে হাজির হলো অনাকাংখিত কাল বৈশাখী।

মৌসুম সম্পন্ন করতে প্রতি একরে খরচ পড়েছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা। কিস্তু চলতি মৌসমে লবণ উৎপাদন হয়েছে প্রতি একরে প্রায় ৮০০ মনের চেয়ে বেশী। বর্তমানে চলতি মৌসুমে মন প্রতি ৩০০ টাকা বেশি দাম হলে কৃষকেরা ন্যায্য মুল্য পাওয়ায় তাদের মুখে হাসি ফুটে ছিল। শেষের দিকে এসে একটু বিপাকে পড়তে হয়েছে।

একাধিক লবণ চাষীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে অন্যন্য বছরের চাইতে এ বছরে লবণের বাম্পার ফলন হয়। কিন্তু শেষের দিকে এসে হঠাৎ কাল বৈশাখী শুরু হওয়ায় লবণ চাষীদের বিপাকে পড়তে হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন