বৈশ্বিক মানবিক সংকট মোকাবেলা ব্যবস্থার উপর প্রতিবেদন

ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের বিপরীতে অপ্রতুল সহায়তায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ

fec-image

বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের বিপরীতে পাওয়া অপর্যাপ্ত অর্থ সহায়তায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশিষ্টজনেরা। সেই সঙ্গে মানবিক সহায়তার স্থানীয়করণের সুপারিশ করেছেন তারা।

শনিবার (২০ মে) ঢাকায় স্টেট অফ দ্য হিউম্যানিটারিয়ান সিস্টেম রিপোর্ট ২০২২: বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান।

তিনি ঘূর্ণিঝড়-সম্পর্কিত মৃত্যুর সংখ্যায় উল্লেখযোগ্য হ্রাসের বিষয়টি তুলে ধরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। পাশাপাশি তিনি ভূমিকম্প ও ভূমিধস মোকাবেলায় সক্ষমতার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান রোহিঙ্গা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেন। গোয়েন লুইস রোহিঙ্গা কর্মসূচিতে সীমিত অর্থায়নের প্রভাব মোকাবেলায় কম খরচে যথাসম্ভব উত্তম সেবা প্রদানের উপর জোর দেন।

কোস্ট ফাউন্ডেশন আয়োজিত ও নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লন্ডনভিত্তিক সংগঠন এএনএলএপি-এর প্রতিনিধি জেনিফার ডোহার্টি। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী সংঘাত, বিপর্যয় এবং স্থানচ্যুতি বেড়েছে, মহামারি দ্বারা ক্ষয়ক্ষতিও বেড়েছে। জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি ২০২১ সালে দ্বিগুণ হয়ে ৮৯.৩ মিলিয়ন হয়েছে, ১৬১ মিলিয়ন মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি। ২০২১ সালে মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫৫ মিলিয়ন ডলার এবং ২০২৩ সালে তা ৩৩৯ মিলিয়নে চলে যেতে পারে। ২০২১ সালে যে অর্থ সহায়তা পাওয়া যায়, তা ছিলো প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। অন্যদিকে মানবিক কর্মীদের উপর আক্রমণ ৬৭% বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈশ্বিক মানবিক সহায়তার পুরো ব্যবস্থাপনাতেই কিছু দুর্বলতা প্রকট।

সঠিক সময়ে সঠিক মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছানো নিশ্চিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করেন ব্রিটিশ হাই কমিশনের কাউন্সিলর সাইমন লিভার।

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিজ গোয়েন লুইস এবং আইওএম বাংলাদেশে ডিপুটি চিফ অব মিশন নুসরাত গাজ্জালি বক্তৃতা করেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ বক্তা হিসেবে আলোচনা করেন, ব্র্যাকের সিনিয়র ডিরেক্টর-অ্যাডভোকেসি ফর সোশ্যাল চেঞ্জ কেএএম মোরশেদ, দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ গওহর নঈম ওয়ারা, টিয়ারফান্ডের আঞ্চলিক পরিালক সঞ্জীব বানজা, স্টার্ট ফান্ড বাংলাদেশের সাজিদ রহমান এবং ইন্ডিয়ার মিহির ভাট।

এতে স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিও এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গ সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ বক্তৃতা দেন।

নুসরাত গাজ্জালি কার্যকর মানবিক প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে সু-সমন্বয়ের কথা বলেন। সঞ্জীব বানজা বিভিন্ন সেক্টরের সমন্বয়ের প্রয়োজনকে অর্থ সহায়তার কার্যকারিত নিশ্চিত করার অন্যতম উপায় হিসেবে অভিহিত করেন।

কেএএম মোর্শেদ মানবিক কর্মসূচি প্রণয়নে বিশ্বকব্যাপ্যী স্বীকৃত সূচক প্রণয়নের কথা বলেন।

অন্যান্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন এফএও-এর রাফায়েল স্টার্লিং, এনআরসি’র ওয়েন্ডি ম্যাকক্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি’ শাবিরা নূপুর, এমএপি বাংলাদেশ-বরিশাল’র শুভঙ্কর চক্রবর্তী, রংপুর প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন’র আকবর হোসেন, এনজিও প্লাটফরম’র আহসান উদ্দিন, জিবিএসএস’র মাসুদা ফারুক জিবিএসএস থেকে, হেল্প-কক্সবাজার’র আবুল কাশেম এবং পালস বাংলাদেশ’র মো. সাইফুল ইসলাম কলিম।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন