খাগড়াছড়িতে বিএনপির উপর হামলা বন্ধ না হলে টানা হরতাল-অবরোধের হুমকি

fec-image

দলীয় অফিস, নেতাকর্মী ,বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট বন্ধ না হলে খাগড়াছড়িতে টানা হরতাল ও অবরোধের কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুমকি দিয়েছেন খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূইয়া।

বুধবার (১৯ জুলাই) খাগড়াছড়ি শহরের নিজ বাসভবন “বৈঠকে” আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ হুমকি দিয়ে বলেন, গতকাল বিএনপির শান্তিপূর্ণ “পদযাত্রা কর্মসূচি” পালন প্রাক্কালে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। সন্ত্রাসীদের বিক্ষিপ্ত হামলায় বিএনপির ১৭০ জন নেতাকর্মী আহত হয়। আশঙ্কাজনক চার জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। গতকালের ঘটনায় আওয়ামী লীগের ১৭৬ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে আরো ২৫০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে খাগড়াছড়ি সদর থানায় মামলা দেওয়া হয়েছে বলে জানান ওয়াদুদ ভূইয়া।

শুধু তাই মঙ্গলবার বিকাল থেকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা পুরো জেলা ব্যাপী ব্যাপক তান্ডবলীলা চালাচ্ছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুলাহ আল নোমান সাগরের গঞ্জপাড়াস্থ ব্যাপক ভাংচুরের পাশাপাশি শিশু ও নারীদের উপর হামলা হামলা চালিয়ে ৭ লাখ টাকা ও একটি মোটরসাইকেল লুট করে নিয়ে যায়। একই সময় যুবদল নেতা আমীর খান ও ইব্রাহিম সহ অসংখ্য বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি-ঘরে হামলা-ভাংচুর, পানছড়ি উপজেলা বিএনপির উপর হামলা-ভাংচুর, মাটিরাঙা বিএনপির নেতাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাংচুর, রামগড়ে বিএনপির নেতা সাফায়েত মোর্শেদ ভূইয়া মিঠুর বাড়িতে ককটেল নিক্ষেপ ও ভাংচুরের অভিযোগ আনেন। এবং সাংবাদিক সম্মেলন চলাকালে ফের খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা, ভাংচুর ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানে স্মৃতি ভাস্কর্য ভাংচুরের অভিযোগ করেন।

ওয়াদুদ ভূইয়া খাগড়াছড়িতে আওয়ামী লীগের নৈরাজ্য ও ন্যাক্কারজনক ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও দ্রুত সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। পৌরসভায় হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে ওয়াদুদ ভূইয়া বলেন, এ ঘটনার সাথে বিএনপির কোন নেতাকর্মী জড়িত না। আওয়ামী লীগ মূল ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য নিজেরা হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা সাজিয়েছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমএন আবছার, যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, অনিমেষ চাকমা রিংকু, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রব রাজা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুলাহ আল নোমান সাগর ও কৃষক দলের সভাপতি নীলপদ চাকমাসহ বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার(১৮ জুলাই) সকাল সোয়া ১০টার দিকে খাগড়াছড়িতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ব্যাপক হয়। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে সাংবাদিক ও পুলিশসহ উভয়ের অন্তত অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। দুপুর ১২টা পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়েছে পুলিশের এসআই মামুন। সংঘর্ষ চলাকালে খাগড়াছড়ি পৌরসভায় হামলা, ভাংচুর ও ১০টি মোটরসাইকেল ভাংচুর এবং আগুন দেওয়া হয়। ঘটনার জন্য বিএনপি ও আওয়ামী লীগ পরস্পরকে দায়ী করে।

নিউজটি ভিডিওতে দেখুন:

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: অবরোধ, খাগড়াছড়ি, বিএনপি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন