খাগড়াছড়ির মেধাবী শিক্ষার্থী রাবেয়াকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন

নিজস্ব প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি:

খাগড়াছড়ি সরকারী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী রাবেয়া আখতার(২২)। পড়াশোনা শেষ করে সমাজের জন্য কিছু করার ইচ্ছে থাকলেও দুটি কিডনীই নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সেই স্বপ্ন পূরণ এখন অনেকটাই অনিশ্চিত। নিয়তি কলেজের পথ হারিয়ে রাবেয়ার এখন ঠিকানা হাসপাতালে। নিভু নিভু জীবন প্রদীপ বাঁচাতে লড়ে যাচ্ছে রাবেয়া। লড়ে যাচ্ছে তাঁর বন্ধুরা। ব্যায়বহুল এ চিকিৎসা করাতে গিয়ে ইতোমধ্যে নি:স্ব পরিবারটি। তাই এখন পরিবারটি চেয়ে আছে সরকার আর সমাজের বিত্তবানদের দিকে।

খাগড়াছড়ি সদরের মিলনপুরের দরিদ্র দিনমজুর আব্দুল হকের তিন মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে মেজো রাবেয়া। ২০১৪ সালে রাবেয়ার কিডনী সমস্যা ধরা পড়ার পর ওষুধ আর ডায়ালাইসিস করে কোনমতে দিন পার করলেও তাকে বাঁচাতে প্রয়োজন অন্তত একটি কিডনী প্রতিস্থাপন। যার জন্য খরচ পড়বে কমপক্ষে ২২ লাখ টাকা। এরই মধ্যে ব্যয়বহুল এ চিকিৎসা চালাতে গিয়ে নি:স্ব পরিবারটি। দুই মাস পরেই রাবেয়ার স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষা। তাই রাবেয়ার পাশাপাশি তার বন্ধুদেরও প্রত্যাশা দ্রুত সুস্থ হয়ে আবারো কলেজে ফিরে আসুক তাদের প্রিয় বন্ধুটি।

বেশ কয়েক বছর ধরেই রাবেয়া চিকিৎসাধীন থাকলেও বিষয়টি ছিল সবার অজানা। কিন্তু বয়সের ভারে নুয়ে পড়া বাবা আব্দুল হক’র সামর্থ্য যেন বাঁধ সেধেছে। অর্থের অভাবে আর এগুতো পারছেন না মেয়ের চিকিৎসায়। সংসারের চাপের সাথে রাবেয়ার চিকিৎসা খরচ চালাতে না পেরে মাঝখানে বন্ধ ছিল চিকিৎসা। শেষ পর্যন্ত হাল ধরলো রাবেয়ার বন্ধুরা।

রাবেয়ার বন্ধু কায়েস, জয়নাল, মাহমুদা আক্তার মুন্নি ও লতিফা আক্তার জানান, ‘রাবেয়া আগষ্টের শেষের দিকে সর্বশেষ কলেজে আসে। এরপর তাঁর আর কোন খবর পাচ্ছিলাম না। বন্ধুদের নিয়ে বাসায় এসে তাঁর শারিরীক অবস্থার কথা শুনি। এরপর তাঁর জন্য কিছু একটা করার সিদ্ধান্ত নিই।

রাবেয়ার পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০১৪ সালে রমজান মাসে রাবেয়া অসুস্থ হয়ে যায়। পরে চিকিৎসকদের শরনাপন্ন হলে তাঁরা জানান, ‘রাবেয়ার দুটি কিডনী ৩৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত। এরপর থেকে রাবেয়ার চিকিৎসা চলে আসলেও ২০১৬ সালের মাঝামাঝিতে এসে অর্থের অভাবে তাঁর চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায়। পরে সর্বশেষ আগষ্টের শেষের দিকে পুনঃরায় তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। ইতিমধ্যে চিকিৎসক জানিয়েছে তাঁর দুটো কিডনীই পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে।

রাবেয়ার বাবা আব্দুল হক জানান, ‘রাবেয়ার প্রতি সপ্তাহে ৩টি করে ডায়োলাইসিস করাতে হয়। পাশাপাশি প্রতিদিন দামী দামী ঔষধ খাওয়াতে হয়। দীর্ঘ তিন বছর ধরে চিকিৎসা করাতে গিয়ে এখন আমি অনেকটাই নিঃস্ব। তিনি রাবেয়াকে বাঁচাতে সবাইকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান।

রাবেয়ার ভগ্নিপতি এম এ হান্নান জানান, ‘চিকিৎসকরা জানিয়েছে একটি কিডনী পাওয়া গেলেও রাবেয়াকে বাঁচানো সম্ভব হবে। আর পুরো চিকিৎসা শেষ করতে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার মত প্রয়োজন হতে পারে। পরিবারের পক্ষে এই মুহুর্তে এতটাকা যোগাড় করা সম্ভব না। ইতিমধ্যে রাবেয়ার বন্ধুসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুুষ তাকে সহযোগীতার জন্য কাজ করছে।

এদিকে বাসায় গিয়ে অসুস্থ রাবেয়ার সাথে কথা হলে সে জানায়, ‘আমার ইচ্ছে ছিল বিসিএস দিয়ে কলেজের শিক্ষকতা করার। আমার পরিবার যতটুকু সম্ভব আমার জন্য করছে। যদি সবাই মিলে আমাকে সহযোগীতা করে তাহলে আমি আমার স্বপ্ন পুরণ করতে পারবো। এখন সরকার কিংবা সমাজের বিত্তশালীদের সহযোগিতার দিকে চেয়ে আছে রাবেয়ার পরিবার।

সম্প্রতি রাবেয়াকে বাঁচাতে খাগড়াছড়ির একটি কমিউনিটি সেন্টারে বৈঠক করেছে জেলার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। বৈঠক থেকে রাবেয়াকে বাঁচাতে দলমত নির্বিশেষে সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

রাবেয়াকে সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা- আব্দুল হক, ডাচ বাংলা ব্যাংক , হিসাব নম্বর: ০১৮৪৫১১৭০৭৯৫
সোনালী ব্যাংক, সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর: ৫৬২৪, খাগড়াছড়ি,বিকাশ: ০১৮৪৫১১৭০৭৯(ব্যাক্তিগত)

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন