গর্জনিয়ায় মুক্তিযোদ্ধার লাশ ব্রিজের অভাবে ভেলায় ভাসিয়ে পার

fec-image

রামুর গর্জনিয়ায় মুক্তিযোদ্ধার লাশটিও একটি ব্রিজের অভাবে ভেলায় ভাসিয়ে পার করলো এলাকাবাসী। ঘটনাটি ঘঠেছে ১৫ ফেব্রুয়ারি রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের শিয়া পাড়ায়। এ গ্রামের কেউ মারা গেলে বার বার উঠে আসে এমন অমানবিক বাস্তব চিত্রটি।

স্থানীয়দের মতে, শনিবার বাইশারী ইউনিয়নের হরিণ খাইয়া গ্রামের মৃত্যু আকবর আহমেদ এর পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ প্রকাশ মুজারু (৭৮) মৃত্যু বরণ করেন। তাদের পারিবারিক কবরস্থানটি হলো এ হরিণ খাইয়া গ্রামের পার্শ্ববর্তী গর্জনিয়া ইউনিয়নের শিয়া পাড়া জামে মসজিদ সংলগ্ন এ কবরস্থান।

এ কবরস্থানের আশপাশের লোকজন তাদের স্বজনদের দাফন করেন এ কবরস্থানে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো হরিণখ্ইায়া গ্রামের লোকজন এ কবরস্থানে আসেন পানি বেয়ে বা বাঁশের তৈরি ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে পার হয়ে। তবে বেশির ভাগ গ্রামবাসীকে পার হতে হয় কোমর পর্যন্ত পানি মাড়িয়ে। আর লাশ নেয়া হয় পানিতে হাবু-ডুবু খেয়ে বা ভেলায় ভাসিয়ে।

এলাবাসি জানান, এমন অমানবিক চিত্র জনপ্রতিনিধি ও সরকারকে দেখালে এর সমাধান হবে, এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি। তাদের অভিযোগ, ককসবাজার জেলার সবচেয়ে অবহেলিত জায়গাটি হলো গর্জনিয়া ইউনিয়নের বড়বিল শিয়াপাড়া।

এলাকাবাসি আরো জানান, এখানকার লোকজন জানেনা তাদের ইউপি চেয়ারম্যান কে, বা অপরাপর জনপ্রতিনিধি।  এছাড়া একই কারণে ওই এলাকার ছোট্ট কোমলমতী শিক্ষার্থীরাও স্কুলে যেতে পারে না ।

গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আবদুল জব্বার বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজলকে তিনি বিষয়টি একাধিকবার জানিয়েছেন। কোন কাজ হয়নি। শিয়া পাড়া এবং বড়বিলে একটি ব্রিজের দরকার, কিন্ত তারা কেউ কথা শোনেন না। এজন্য এর সমাধানও হয়নি। একটি ব্রিজের জন্য প্রায় হাজারের অধিক মানুষ দীর্ঘদিন ধরে আজ পানিবন্দী। যেমন মূর্দা পারের বিষয়টিও হচ্ছে এভাবে।

এ ব্যাপারে গর্জনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামকে বার বার মুঠোফোনে একাধিক বার বার যোগাযোগ করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

এলাকার সূশীল সমাজের বক্তব্য হলো: স্বাধীনতার ৪৮/৪৯ বছর পার হলেও আজ একজন মুক্তিযোদ্ধার ইচ্ছা পূর্ণ হয়নি এ এলাকায়। যেভাবে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে স্ব-সম্মানে কবরস্থ করা সম্ভব হয়নি গতকাল। এ চিত্রটি পুরো ইউনিয়নের। এখানে নেই কোন উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থাও। এভাবেই কাটে  গর্জনিয়া ইউনিয়নের অবহেলিত অর্ধলক্ষ সহজ-সরল মানুষ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন