গাজায় দখলদার ইসরায়েলি হামলায় নিহত বেড়ে ১২০০
বর্বর দখলদার ইসরায়েলের বিমান হামলায় গাজা উপত্যকায় এখন পর্যন্ত ১২০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও সাড়ে ৫ হাজারের বেশি মানুষ। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। হতাহতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় গাজার হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপে হিমশিম অবস্থা।
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইসরায়েলের চলমান হামলার কারণে আড়াই লাখের বেশি ফিলিস্তিনি তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, গাজা থেকে দুই লাখ ৬৩ হাজার ৯৩৪ জনের বেশি মানুষ তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।
এদিকে বুধবার (১২ অক্টোবর) জ্বালানির অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে গাজার একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্র। এর ফলে অন্ধকারে ডুবে গেছে হামাস-নিয়ন্ত্রিত এলাকাটি। স্থানীয় সময় দুপুর ২টার দিকে বাসিন্দারা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হওয়ার চূড়ান্ত সতর্কবার্তা পান। এর এক ঘণ্টা পরেই অন্ধকার হয়ে যায় সবকিছু।বিদ্যুৎ না থাকায় গাজার হাসপাতালগুলোকে এখন কেবল জেনারেটরের ওপর ভরসা করে চলতে হবে। সেটিও চালানো যাবে আর বড়জোর দুই থেকে চারদিন। এরপর শেষ হয়ে যাবে সব জ্বালানি। বিদ্যুৎ না থাকা অর্থ, উপত্যকায় পানি সরবরাহ বন্ধ থাকবে। বহুতল ভবনগুলোতে আর কাজ করবে না লিফট। ফলে পুরোপুরি অন্ধকারে কাটাতে হবে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দাকে।
হামাসের হামলার পর গত রোববার থেকে গাজার ওপর ‘সর্বাত্মক অবরোধ’ আরোপ করে ইসরায়েল। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োয়াভ গালান্ট ঘোষণা দিয়েছেন, গাজাকে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন করার পাশপাশি ওই অঞ্চলে খাদ্য বা জ্বালানি কোনো কিছুই প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
কিন্তু এর সঙ্গে একমত নয় জাতিসংঘ। সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে বলেন, গাজা উপত্যকায় খাদ্য, জ্বালানি এবং পানির মতো জীবন রক্ষাকারী প্রয়োজনীয় জিনিসের অবশ্যই প্রবেশ করার অনুমতি দিতে হবে।
গাজায় অনবরত বোমাবর্ষণ করছে ইসরায়েল। সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করে বন্ধ করে দিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, খাবার সরবরাহ। ফলে ভয়ংকর মানবেতর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে ফিলিস্তিনি এলাকাটিতে।
২০০৭ সাল থেকেই বায়ু, স্থল ও সমুদ্র তিন দিক থেকেই ইসরায়েলি অবরোধের মুখে রয়েছে গাজা। এক বিবৃতিতে ভল্কার তুর্ক বলেন, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রতি মুহূর্তে হতাহত মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকায় আহতদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।