গুটিকয়েক শিক্ষার্থীকে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে তৎপর পেকুয়া জি এমসি প্রধান

fec-image

পরীক্ষার ১৩ দিন আগে গুঁটি কয়েক শিক্ষার্থীকে গোপনে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে তৎপর দেখা গেছে কক্সবাজারের পেকুয়া সরকারি মডেল জি এমসি ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ জহির উদ্দিনের।

বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে পেকুয়া সরকারি মডেল জি এম সি ইনস্টিটিউশনে নিবার্চনী পরীক্ষায় বহু বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীরা এস এস সি পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে ভিড় করে।

তথ্য নিয়ে জানা যায়, এ বিদ্যালয় থেকে এ বছর নির্বার্চনী পরীক্ষায় ৩২০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এদের থেকে নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে ২৫৭ জনকে ম্যানুয়েল অনুযায়ী এস এস সি পরীক্ষার ফরম পূরণ করার সুযোগ দেওয়া হয়। বাকী ৬৩ জন বহু বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ায় তাদেরকে এস এস সি পরীক্ষার ফরম পূরণ করার সুযোগ দেওয়া হয়নি।

বোর্ডের নিয়ম অনু্যায়ী প্রথম ধাপে গত বছরের ১৮ নভেম্বর ফরম পূরণের শেষ দিন ছিল। কিন্তু ডিসেম্বর একমাস পরে গিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্টগ্রাম কর্তৃপক্ষ অতি উৎসাহী হয়ে কোন চিঠি বা প্রজ্ঞাপন ছাড়ায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের কে ফরম পূরণের সময়সীমা বর্ধিত করে এ বছরের ৯, ১০, ১১ জানুয়ারি এ তিন দিন সময় দিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্রগ্রামের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নারায়ণ নাথ, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মজিবুর রহমান, উপ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ নাথ সু কৌশলে বিদ্যালয়ের জি এম সি প্রধান শিক্ষককে ফোনে কল ও ম্যাসেজ দিয়ে নিদের্শ দিয়েছেন বলে শিক্ষার্থীদের মাঝে গুঞ্জন চলে।

এরপর ও নিয়ম বহি বহির্ভূত এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের বর্ধিত মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু বর্ধিত মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও বোর্ড কর্তৃপক্ষ কিছু অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে পুনরায় ৩০,৩১ জানুয়ারি সর্বশেষ ১ ফেব্রুয়ারি ফরম পূরণের জন্য প্রধান শিক্ষক কে ফোনে কল করে ও ম্যাসেজ দিয়ে নিদের্শ দিয়েছেন এবং চাপ প্রয়োগ করেন শিক্ষাবোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ অসাধু কিছু কর্মকর্তা।

অকৃতকার্য কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, আমরা বোর্ডে গিয়েছিলাম চেয়ারম্যান স্যারের সাথে কথা বলেছি এবং এস এস সি পরীক্ষার ফরম পূরণে সুযোগ দেওয়ার জন্য আবেদন দিয়েছি। তারপর ও হেডস্যার আমাদের কে ফরম পূরণের সুযোগ দিচ্ছেন না। বোর্ডের চেয়ারম্যান স্যার হেডস্যারকে ফরম পূরণের জন্য কল করে নিদের্শ দিয়েছেন।

এদিকে অভিযোগ উঠছে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে কোন প্রজ্ঞাপন ছাড়ায় পেকুয়া সরকারি মডেল জি এম সি ইনস্টিটিউশনে এস এস সি পরীক্ষার ফরম পূরণ করতেছে। এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি। আর মাত্র ১৩ দিন বাকী আছে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে। এ সময়ে ফরম পূরণ করা নিয়ে রহস্যের জন্ম নিয়েছে। এটি কি বোর্ডের নিদের্শনা? ইতিপূর্বে এস এস সি পরীক্ষার ফরম পূরণ নিয়ে নানা তালবাহানা হয়েছিল এ স্কুলে। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে গড়ায়। এখন ফরম পূরণের কোন সময় কিংবা প্রজ্ঞাপন নেই। কিন্তু এটি কতটুকু যৌক্তিক। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। এ অসময়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা।

ফরম পূরণের বিষয়ে জানতে চাইলে পেকুয়া সরকারি মডেল জি এম সি ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ জহির উদ্দিন বলেন, বোর্ডের নিদের্শ আছে। আমার কোনো কিছু করার নেই আপনারা বোর্ডের চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করুন।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) উলফাত জাহান বলেন, এসময়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করা কোন যৌক্তিকতা নেই। যদি বা করা হয় হাস্যকর ছাড়া কিছু না। এছাড়াও কোন স্কুলে তো ফরম পূরণের কোন খবর পায়নি জিএমসিতে কেন হবে।

এবিষয়ে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি চাই থোয়াইহলা চৌধুরী বলেন, কয়েকদিন পর পরীক্ষা এ মুহূর্তে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করবে কীভাবে। আমি প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিবো।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্রগ্রামের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নারায়ণ নাথের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক চাইলে বোর্ডে আবেদন করতে পারেন ফরম পূরণ করার জন্য। এছাড়া বোর্ড কর্তৃপক্ষের কোনো সুযোগ নেই কোন শিক্ষার্থীকে ফরম পূরণ করে দেওয়া। অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে বিষয়ে বলেন কোন প্রমাণ পেলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: এসএসসি পরীক্ষা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন