গোলাপের পল্লী পেকুয়ার বরইতলী, ১৪ ফেব্রুয়ারিকে সামনে রেখে মজুদে ব্যস্ত চাষীরা

fec-image

গোলাপ শুধু ভালোবাসায় সীমাবদ্ধ নয়, এটি ভালবাসা ছাড়াও উদ্বেগ ও কোমলতার প্রতীক। আর সেই গোলাপের সৌন্দর্যের ডালি নিয়ে বসেছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বরইতলী গ্রাম। এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস গোলাপসহ নানা ফুলের চাষ। কৃষি বিভাগ বলছে, বরইতলীর একশো একর বাগানের গোলাপ বিক্রি করে প্রতি বছর আয় হয় ৩ কোটি টাকারও বেশি।

বরইতলী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, তরতাজা গোলাপ ফুলের নিখাঁদ সৌরভ আর নান্দনিকতা। কোনটা লাল, কোনটা সাদা, কোনটা হলুদ আবার কোনটা খয়েরি। সারারাত শিশিরে ভেজা গোলাপগুলো জানান দিচ্ছে অপরূপ সৌন্দর্য।

বরইতলী ইউনিয়নের নতুন রাস্তার মাথা, নামারপাড়া, মাইজপাড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় গোলাপের চাষ করা হয়। ওই ইউনিয়নে এ বছর প্রায় ১০০ একর জমিতে গোলাপের আবাদ করেছেন ৯০ জন কৃষক। একেকটি বাগানে প্রতিদিন ফুল ফোটে ৩ হাজার থেকে অন্তত ৬ হাজার।

গোলাপের গ্রাম বরইতলী, বছরে আয় ৩ কোটি টাকারও বেশি

এসব গোলাপের অধিকাংশ বাণিজ্যিকভাবে যায় চট্টগ্রামে। তবে বিশেষ দিনগুলোতে এসব ফুলের চাহিদা থাকে বেশি। গোলাপের পাশাপাশি তারা গ্ল্যাডিওলাসের চাষ করে। দিনের শুরুতেই বাগান থেকে ফুল তুলে বিক্রির জন্য ফুল কাটা, বাছাই আর বাঁধছেন চাষিরা। প্রতিটি বাগানে কাজ করছেন ৫-৬ জন শ্রমিক। তবে করোনার সময় ফুলচাষে কিছুটা লোকসান গুণতে হলেও বর্তমানে তা কাটিয়ে উঠেছেন চাষিরা।

বরইতলী গোলাপবাগান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এখানে ৬০-৭০টি বাগান আছে। এই বাগানের মাধ্যমে কর্মচারীসহ অনেকের জীবিকা নির্বাহ হয়। এক একর জমিতে সব খরচ বাদ দেওয়ার পরেও ৩ লাখ টাকা আয় হয়।’

গোলাপের গ্রাম বরইতলী, বছরে আয় ৩ কোটি টাকারও বেশি

কৃষি বিভাগ বলছে, বরইতলীর একশো একর বাগানের গোলাপ বিক্রি করে প্রতি বছর আয় হয় ৩ কোটি টাকার বেশি। আগে প্রায় ৩০০ একর জমিতে গোলাপের আবাদ হলেও করোনার থাবা, কাগজ ও প্লাস্টিকের ফুলের সহজপ্রাপ্যতাসহ নানা সংকটে কিছুটা কমেছে সেই আবাদ।

বরইতলীর উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘এখানে কৃষকের সংখ্যা প্রায় ৮০-৯০ জনের মতো। আগে জমির পরিমাণ বেশি ছিল, সে সময় কৃষকের সংখ্যাও বেশি ছিল। পর্যায়ক্রমে করোনা, কাগজের ফুল বের হওয়ায় ও কৃষকরা গোলাপের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার কারণে দিন দিন এই গোলাপ চাষ কমে যাচ্ছে।’

তিনি আরও জানান, তবে আসন্ন পহেলা বৈশাখ, বসন্ত উৎসব, ভালোবাসা দিবস ও একুশে ফেব্রুয়ারিকে সামনে রেখে ১ কোটি টাকার ব্যবসা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন