চকরিয়ায় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ইউপি সচিব ও ৩ মেম্বারের বিরুদ্ধে

CHAKARIA KHOTAKHALI 12-4-17
চকরিয়া প্রতিনিধি :
চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নে হত দরিদ্র জনগোষ্টীর দৈনিক কাজের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারের প্রদেয় কর্মসৃজন প্রকল্পের কর্মসূচীর অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সচিব ও প্রকল্পের ৩জন সভাপতি (ইউপি সদস্য)দের বিরুদ্ধে। এ কাজে রয়েছে ব্যাপক অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ। এনিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও উত্তেজনা।

সরে জমিন ঘুরে দেখাগেছে, চলতি ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের ১ম পর্যায়ে কর্মসৃজন প্রকল্পের কর্মসূচির আওতায় ৩১২জন শ্রমিক খুটাখালী ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডকে তিন ভাগে বিভক্ত  করে প্রতি ৩ ওয়ার্ড সমন্বয়ে তৈরি করা হয় একটি করে প্রকল্প। প্রতিটি প্রকল্পে একজন করে ইউপি সদস্যকে পিআইসি (সভাপতি) হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তন্মধ্যে ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউপি সদস্য তারেকুল ইসলাম, ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউপি সদস্যা ছালেহা আক্তার এবং ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউপি সদস্য ওয়াসিম আকরাম। এছাড়াও প্রকল্পের অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী (টেক অফিসার) ও ত্রাণ দূযোগ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও।

জানাগেছে, ওয়ার্ড ভিত্তিক প্রকল্প বিন্যাস করা হলেও প্রকৃতপক্ষে মাষ্টাররোলে তার বিপরীত চিত্র প্রতিয়মান হয়। প্রতিটি প্রকল্পে নির্দিষ্ট ওয়ার্ডের বাইরে অন্যান্য ওয়ার্ড থেকেও শ্রমিকের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। অনেক সদস্য নিজেদের কার্যক্রমে শ্রমিকের তালিকায় অনিয়মের কথা স্বীকার করেন। অভিযোগ উঠেছে, গ্রামের সহজ সরল দরিদ্র জনগোষ্ঠির নাম ব্যাবহার করে উল্লেখিত ৩জন ইউপি সদস্য ও ইউপি সচিব হুমায়ুন কবির হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। কাগজে কলমে ও ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন তালিকায় নাম থাকলেও সরেজমিনে মাঠ পর্যায়ে দেখা মেলেনি প্রায় ৭০/৮০জন শ্রমিকের। কর্মসংস্থান কর্মসুচির মাষ্টাররোলে রয়েছে এমন অনেক শ্রমিকের নাম উল্লেখ করলেও তাদের অনেককে চিনেও না বলে জানান কর্মরত শ্রমিকরা। কিন্তু অগ্রণী ব্যাংক খুটাখালী শাখা থেকে প্রদত্ত তালিকায় মাষ্টাররোলে থাকা সকলের নামেই টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প সভাপতিরা। কাজে না গিয়ে টাকা উত্তোলন করা শ্রমিকদের মধ্যে রয়েছে খুটাখালী খাসঘোনা গ্রামের মৃত আবদুর রশিদের পুত্র মো: ইউনুছ, জামাল আহমদের পুত্র আবদুর রশিদ, সাতঘরপাড়ার মৃত আবদুস সালামের পুত্র শাহাজাহান, তার স্ত্রী আসমাউল হোসনা, ছলিম উল্লাহর স্ত্রী মমতাজ বেগম, মৃত আবদুর রহমানের পুত্র ছলিম উল্লাহ সহ এরকম ৭০/৮০জনের নাম তালিকায় রয়েছে।

অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয়ে বক্তব্য নিতে ইউপি সচিব হুমায়ুন কবিরের সাথে মুঠোফোনে কয়েকবার চেষ্টা করেও সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে খুটাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মৌলানা আব্দুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কর্মসৃজন প্রকল্পে অনিয়ম হচ্ছে একথাটি এখন আপনাদের কাছ থেকে শুনেছি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্তপূর্বক সত্যতা যাচাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। মূলত কর্মসৃজন প্রকল্পের এসব কাজ দেখবালের জন্য তিন ওয়ার্ড করে ৩টি প্রকল্প কমিটি গঠন করে স্থানীয় মেম্বারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারাই বিষয়টি দেখেন। তিনি আগামী তালিকায় নিজ উদ্যোগে শতভাগ স্বচ্চতার মাধ্যমে প্রণয়ন করা হবে বলেও জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন