চট্টগ্রামে যুক্ত হচ্ছে আরও একটি চা বাগান, কর্মসংস্থান হবে ৫০০ জনের

fec-image

ফটিকছড়ির ১৭ টি চা বাগানের সাথে নতুন করে যুক্ত হতে যাচ্ছে ১৮ তম চা বাগান চৌধুরী টি এস্টেট। এতে বাগানে দশ বছরে ৫০০ মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

চৌধুরী গ্রুপ বাগানটি গড়তে ৫৬০.৭৯ একর সরকারি খাস জমি ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নিয়েছে। ইতিমধ্যে বাগানের সীমানা নির্ধারণের কাজ শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন। চলতি বছরে ৪০ একর জমিতে চা পাতা চারা গাছের প্ল্যান্টেশন করছে চা বাগান কর্তৃপক্ষ। ফলে অপার সম্ভাবনাময় ফটিকছড়িতে গড়ে উঠা এ চা বাগানে নতুন করে ৫০০ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরী করবে।

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় একটি নতুন চা বাগান গড়ে তুলছে চৌধুরী গ্রুপ। এতে বাগানে দশ বছরে ৫০০ মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ফটিকছড়ির ভূজপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ভূজপুর মৌজা এলাকায় বিস্তীর্ণ টিলা-পাহাড় ও সমতলের জায়গাজুড়ে গড়ে উঠছে চৌধুরী টি এস্টেট। চট্টগ্রাম জেলায় গড়ে ওঠা ২২টি চা বাগানের ১৭টিরই অবস্থান ফটিকছড়িতে।

কর্মকর্তারা জানান, চলতি বছর ৪০ একর জমিতে ২ লাখ ৮০ হাজার চারা লাগানোর কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামী দশ বছরে মোট ৫০০ একর জমিতে ধাপে ধাপে ৩৫ লক্ষ চারা লাগানোর পরিকল্পনা করছে কর্তৃপক্ষ। বাকি ৬০ একর জমিতে কারখানা সহ বিভিন্ন অবকাঠামো ও সড়ক নির্মাণ করা হবে।

বাগান কর্তৃপক্ষ বলছে, বাগানটি গড়ে উঠলে ওই এলাকার পরিবেশের ভারসাম্য যেমন রক্ষা করবে, তেমন সরকারি কোষাগারে ভূমি উন্নয়ন কর ও চা পাতা উৎপাদন থেকে লাভবান হবে দেশের অর্থনীতি।

উপজেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে বাগানের সীমানা নির্ধারণের কাজ শুরু করেছে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে বাগানের সীমানা নির্ধারণের কাজ শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন। এদিন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি এটিএম কামরুল ইসলাম বাগানের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে ভূমি অফিসের কর্মকর্তা ও সার্ভেয়ারদের দিকনির্দেশনা দেন।

কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা গত এক সপ্তাহ ধরে সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্যদের সাথে নিয়ে বাগানের সীমানা নির্ধারণের কাজ করছি। কোনো অভিযোগ পেলে তৎক্ষণাৎ তা শুনানির মাধ্যমে সমাধান করছি। পুরো বাগানের সীমানা নির্ধারণ করতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারি খাস জমি ইজারার বার্ষিক কর হিসেবে এক একরে ৩০০ টাকা করে পাবে সরকার। এই হিসেবে বাগানটি থেকে প্রতি বছর ১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা কর পাবে।

চৌধুরী টি এস্টেটের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন ৩৪ বছর ধরে চা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি বলেন, চা বাগান করার জন্য ফটিকছড়ির আবহাওয়া খুবই উপযোগী। ‘এই এলাকায় দুটি চা বাগান গড়ে তোলার অভিজ্ঞতা আছে আমার। চৌধুরী গ্রুপের বিনিয়োগে বাগানটি গড়ে তুলতে নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাচ্ছি আমি।’

ইজারা ফি বাবদ সরকারি কোষাগারে ইতিমধ্যে ৭.৮৬ কোটি টাকা জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম।

কর্মসংস্থানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ১২০ জন শ্রমিক কাজ করছেন বাগানে। আগামি ১০ বছরে এই সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে যাবে। শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে স্থানীয় ত্রিপুরা সম্প্রদায় ও এলাকার সাধারণ মানুষকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি আমরা।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিনিয়োগকারী চৌধুরী গ্রুপের দুবাইভিত্তিক ব্যবসা রয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রেও বিনিয়োগ আছে তাদের।

চা সংসদ চট্টগ্রাম অঞ্চল সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম জেলার ২২টি চা বাগানে প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। দেশের শীর্ষস্থানীয় ১০টি চা বাগানের মধ্যে ৫টির অবস্থানই ফটিকছড়িতে।

জাতীয় চাহিদার ১০ শতাংশ চা পাতার চাহিদা পূরণ করে ফটিকছড়ির বাগানগুলো থেকে উৎপাদিত চা। বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রতিবেদনমতে, চট্টগ্রাম জেলার ২২টি চা বাগানে ২০২৩ সালে ১.০৭ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন