চাঁদাবাজি বন্ধের দাবীতে শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘটের আল্টিমেটাম

পরিবহন ধর্মঘট

সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার :

পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তিবিরোধী অনিবন্ধিত আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-ইউপিডিএফ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা)সহ স্থানীয় বিভিন্ন পাহাড়ী সংগঠনের নামে চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে তা বন্ধের আল্টিমেটাম দিয়েছে খাগড়াছড়ি পরিবহন মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ।

শুক্রবারের মধ্যে দাবী আদায় না হলে শনিবার থেকে খাগড়াছড়িতে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সংগঠনটি। বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসককে দেওয়া এক স্মারকলিপিতে এই আল্টিমেটাম‘র কথা বলা হয়।

খাগড়াছড়ি পরিবহন মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের সদস্য সচিব মুহাম্মদ ইউনুছ স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে পাহাড়ে অব্যাহত চাঁদাবাজির বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরে বলা হয়, খাগড়াছড়ির বিভিন্ন সড়কে আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ ও জেএসএস-সহ (এমএন লারমা) একাধিক উপজাতীয় গ্রুপের অব্যাহত চাঁদাবাজির ফলে সর্বশান্ত হচ্ছে এখানকার ব্যবসায়ী ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা।

খাগড়াছড়ি পরিবহন মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, খাগড়াছড়ি-পানছড়ি-লোগাং সড়কের ছয়টি স্থানে, দীঘিনালা-লংগদু সড়কের চারটি স্থানে, খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি সড়কের ৮টি স্থানে, আলুটিলার ৩-৪টি স্থানে দিনে ও রাতে প্রকাশ্যে গাড়ি থামিয়ে চাঁদা আদায় ও পরিবহন শ্রমিকদের নির্যাতন করা হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের দাবীকৃত চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে শ্রমিকদের মারধর, গাড়ি ভাঙচুর ও জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও করে থাকে তারা। এসময় ছিনিয়ে নেওয়া হয় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।

উত্তর চট্টগ্রামের জন্য একটি স্থায়ী বাস টার্মিনাল স্থাপনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানানো হলেও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিসহ উত্তর চট্টগ্রামের হাজার হাজার যাত্রী চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে বলে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করে বলা হয়, চট্টগ্রামের অক্সিজেন অস্থায়ী টার্মিনালে মলম পাটির দৌরাত্ম্য, ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে অনেক যাত্রী অকালে মৃত্যুবরণ ও সর্বস্বান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও নারী যাত্রীদের জন্য পয়:নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।

খাগড়াছড়ি পরিবহন মালিক-শ্রমিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক এস এম শফি ইউপিডিএফ ও জেএসএস-সহ বিভিন্ন উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের অব্যাহত চাঁদাবাজির কথা উল্লেখ করে বলেন, তাদের ‘চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাওয়ায় মহান বিজয়ের মাসেও ধর্মঘটের কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছি। গত বছরের ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় বিঘ্ন সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে চাঁদাবাজির সীমা ছাড়িয়ে গেছে বলেও তিনি দাবী করেন।

স্মারকলিপি পাওয়ার কথা স্বীকার করে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. মাসুদ করিম বলেন, ‘স্বল্প সময়ের নোটিশে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া জনস্বার্থবিরোধী। জনসাধারনের স্বাভাবিক জীবন-যাত্রা ব্যাহত হতে পারে। তিনি খাগড়াছড়িতে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের কর্মসুচী বিবেচনার অনুরোধ করে বলেন চাঁদাবাজির বিষয়ে মামলা হলে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন