আবারো মিয়ানমারের ছোড়া গুলি পড়লো বাংলাদেশে

fec-image

বান্দরবান নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম তুমব্রু সীমান্তে আবারো মিয়ানমারের ছোড়া ২টি গুলি পাওয়া গেছে। এতে শূন্য রেখায় বসবাসরত রোহিঙ্গা ও স্থানীয় বাসিন্দাসহ এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাড়ির সামনে খেলতে গিয়ে হঠাৎ ২টি গুলি কুড়িয়ে পায় তুমব্রু হেডম্যান পাড়ার বাসিন্দা উসাইন তঞ্চঙ্গ্যা শিশু সন্তান ঝিনুক তঞ্চঙ্গ্যা।

তবে তুমব্রু বাজার ব্যবসায়ীরা কিছুটা সহনশীল হলেও নতুন করে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা নৃ-গোষ্টির লোকজন আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়ে এই গোলাগুলির আওয়াজে।

বান্দরবান নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশাফাঁড়ি ও উত্তরপাড়ার থেকে ঘুমধুমের পরীক্ষা কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা দিতে যাওয়া অংপ্রু তঞ্চঙ্গ্যা, রোকেয়া বেগম ও রহিমা আক্তার জানান, তাদের আজকের এসএসসি পরীক্ষা ছিলো। ৪ দিন বন্ধ থাকার পর পুনরায় শুনতে পান প্রকট আওয়াজে মিয়ানমার বাহিনীর গোলাগুলি। পরীক্ষা দিতে তারা আতঙ্কের মাঝেই বাড়ি থেকে বের হয়েছে। রাতে পড়ার টেবিলে মিয়ানমারের গোলার শব্দ তাদের আতঙ্কিত করলেও কিছুটা সহনীয় ছিলো। কেননা বাড়ির সবাই তখন পাশে ছিলো। তবে সকালে গোলাগুলির আওয়াজ ভেদ করে ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে একা পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় অনেক ভয় তাদের তাড়া করে। আর তাও প্রথম পরীক্ষা। দুই ভয় তাদের আতঙ্ক গ্রস্থ করে।

তুমরু মধ্যম পাড়ার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম, তুমরু বাজার ব্যবসায়ী বদিউল আলম জানান, বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত অসংখ্য গোলার আওয়াজ তারা শুনেছেন। অনেক বড় আওয়াজের গোলার শব্দ ১০টির উপর। যা তারা ধারণা করছে মর্টার শেলের আওয়াজ।

তারা আরো জানান, মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে তার জেড বিমান আসার আওয়াজ শুনে বাড়ির উঠানে বের হয় তারা। তবে তা ছিল তুমব্রু সীমান্তের ওপারে। তবে তুমব্রু গ্রামের খুব সন্নিকটে।

তারা আক্ষেপ করে বলেন, কেন তারা এখানে বসতঘর করলেন। কারণ, কখন তাদের বসতবাড়ি বা এলাকায় গোলা এসে পড়ে। কেননা গত ২৪ আগস্ট ও ৩১ আগস্ট তাদের গ্রামে মিয়ানমারের গোলা এসে পড়ায় তারা সে থেকে চরম আতঙ্কে থাকে সব সময়। এভাবে বৃদ্ধা জাফর আহমদ, তাবু তালেব ও শফিক মিয়াসহ সকলের একই অনুভূতি প্রকাশ করে।

তুমব্রু কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আজিম উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার সকালের গোলার আওয়াজে তার এবং তার মুসল্লিদের মনে চরম আতঙ্ক দানা বাঁধে। বুক কেঁপে উঠে তাদের। মসজিদটি তুমব্রু সীমান্ত থেকে মাত্র দেড়শ গজ দূরত্বে অবস্থান। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় নাগাদ এক নাগাড়ে গোলার শব্দ তিনি শুনেছেন। যাতে মুসল্লিরা কিছুটা ভয় পান।

বাইশফাঁড়ি ওয়ার্ড়ের গ্রাম পুলিশ আবদুজ্জাবার বলেন, তিনি রাতদিন এ সব গোলার শব্দ শুনতে পান। তবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নতুন করে গোলাগুলির আওয়াজ যেন বেশি আতঙ্ক তার মাঝে।

ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজীজ বলেন, তার কাছে সীমান্তে গোলাগুলি যেন নিত্য দিনেরে সঙ্গী। একদিকে ভয় আর একদিকে আতঙ্ক। যদিও তারা তাদের ভূখণ্ডে গোলাগুলি করছে। কিন্তু বাংলাদেশের অতি সন্নিকটে হওয়ায় তার এলাকার মানুষ তটস্থ। তবে বৃহস্পতিবার থেকে নতুন করে গোলার আওয়াজ পরীক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বলেও তিনি জানান।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আতঙ্ক, এসএসসি, গোলাগুলি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন