জাপানে একদিনে ১৫৫টি ভূমিকম্পের আঘাত, নিহত ৮

fec-image

জাপানের উত্তর-মধ্যাঞ্চলীয় এলাকায় সোমবার (১ জানুয়ারি) ৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ভূমিকম্পের পর দেশটিতে আঘাত হেনেছে সুনামিও। একদিনে ১৫৫টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ভূমিকম্পে আটজনের প্রাণহানি হয়েছে।

এর জেরে সুনামির শঙ্কা দেখা দেয় এবং হাজারও মানুষকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়। বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার থেকে জাপানে ৭.৬ মাত্রার একটি শক্তিশালী কম্পনসহ ১৫৫টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে বলে জাপানের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। এদিন আঘাত হানা বেশিরভাগ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৩ মাত্রার বেশি। এসব ভূমিকম্প মাঝারি মাত্রার হলেও মঙ্গলবার ভোরেও দেশটিতে ছয়টি শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে জেএমএ জানিয়েছে।

জাপানের কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার জানিয়েছে, নতুন বছরের প্রথম দিনে মধ্য জাপানে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ৮ জন মারা গেছেন। এছাড়া কম্পনের জেরে এক মিটার উঁচু সুনামির ঢেউ আঘাত হানে এবং এতে বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া দুর্যোগের জেরে একটি বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও ঘটে যা রাতারাতি ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।

এএফপি বলছে, সোমবারের ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা এখনও আসছে। বিভিন্ন খবরের ফুটেজে ভেঙে পড়া ভবন, বন্দরে ডুবে যাওয়া নৌকা, অগণিত পুড়ে যাওয়া বাড়িঘর এবং হিমাঙ্কের তাপমাত্রায় স্থানীয় বাসিন্দাদের রাতভর বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় থাকতে দেখা যাচ্ছে।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, জাপানের হোনশু দ্বীপের ইশিকাওয়া প্রিফেকচারে আঘাত হানা ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭.৫। তবে জাপানি কর্তৃপক্ষ এই কম্পনকে ৭.৬ মাত্রার বলে অভিহিত করেছে।

দেশটি বলেছে, মঙ্গলবার মধ্যরাত ১টা পর্যন্ত জাপানে আঘাত হানা ৯০টিরও বেশি ভূমিকম্পের মধ্যে এই কম্পনও ছিল একটি।

এদিকে কম্পনের পর সোমবার ওয়াজিমা বন্দরে কমপক্ষে ১.২ মিটার (চার ফুট) উঁচু ঢেউ আঘাত হানে এবং অন্যত্র কয়েকটি ছোট সুনামির খবর পাওয়া গেছে। তবে কম্পনের জেরে অনেক বড় ঢেউ আঘাত হানার সতর্কতা দেওয়া হলেও পরে তা ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়েছে।

ওপর থেকে তোলা ফুটেজে মাছ ধরার সুজু বন্দরে ডুবে যাওয়া বেশ কয়েকটি নৌকা দেখা গেছে। বন্দরের নৌকাগুলোর অন্তত একটি তীরে ভেসে আসে এবং ওয়াজিমায় একটি বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় জ্বালানি সরবরাহকারী সংস্থা জানিয়েছে, মঙ্গলবার জাপানের এই অঞ্চলের প্রায় ৩২ হাজার ৭০০টি পরিবার বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে।

অগ্নি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, কয়েক হাজার মানুষকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রায় এক হাজার লোক একটি সামরিক ঘাঁটিতে অবস্থান করছেন বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা সোমবার রাতে এক জরুরি বৈঠকের পরে বলেন, ‘আমি (জরুরি কর্মীদের) নির্দেশ দিয়েছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যে কোনও উপায় ব্যবহার করে দুর্গত এলাকায় পৌঁছানোর জন্য।’

কিশিদা সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখন খুব ঠান্ডা। আর তাই প্লেন বা জাহাজ ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পানি, খাবার, কম্বল, তেল, পেট্রল, জ্বালানি তেল সরবরাহ করার জন্য আমি নির্দেশনা জারি করেছি।’

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: এশিয়া, জাপান, নিহত
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন