টানা বৃষ্টিতে বান্দরবান ও থানচির সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

fec-image

টানা ৬ দিনব্যাপী অব্যাহত বৃষ্টিতে বান্দরবান-থানচি সড়ক এবং বাগান পাড়া কালভার্ট সেতু পানির তলে ডুবে একাকার, যার ফলে বান্দরবান ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

এ দিকে থানচি বলিপাড়া অভ্যন্তরীণ সড়কের বয়ক হেডম্যান পাড়া কালভার্ট সেতু সাংগু নদীর পানি নিচে তলিয়ে যাওয়ার কারনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

রবিবার (৬ আগস্ট) সন্ধ্যা ৫ টা দিকে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অপরদিকে উপজেলা সদর থেকে দুর্গম রেমাক্রী তিন্দু ইউনিয়নের সাথে শুক্রবার হতে অদ্যবধি পর্যন্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন । জানা গেছে, সারাদেশের ন্যায় বান্দরবানে থানচিতে টানা ৬ দিনের ভারী বর্ষণে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়া সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। টানা বর্ষণের ফলে বেশ কিছু জায়গায় ছোটখাট পাহাড় ধসের ঘটনাও ঘটেছে। কয়েকজনের ঘরবাড়ি আংশিক চাপা পড়লেও পাহাড় ধসে তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয় নি।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, থানচি সদর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে থানচব হেডম্যান পাড়া মগকসে ঝিরির পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়া প্রায় ৩০ টি ঘরবাড়ী উপর ঝিরির স্রোত কয়েক ঘন্টা স্থায়ী অবস্থান ছিল। পাহাড়ে ঘরগুলি মাচাং ঘর হওয়ায় তেমন কোন ক্ষতিগ্রস্ত হয় নি বলে হেডম্যান পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাঅংপ্রু মারমা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

এদিকে একই ইউনিয়নের থানচি বাজার, সাংগু সেতু নিচে বসবাসরত দুই শতাধিক ঘরবাড়ী সাংগু নদীর পানির প্রবাহ বিপদ সীমা অতিক্রম করলে বন্যা হওয়া সম্ভাবনা থাকায় ওখানকার পরিবারের লোকজন থানচি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবনের আশ্রয় কেন্দ্রে মালামাল বহন করে ছুটাছুটির মতো অবস্থা পরিলক্ষিত হয়েছে।

বলিপাড়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডে বাগান পাড়া, হিন্দু পাড়া, মুসলিম পাড়া দুই শতাধিক পরিবারের লোকজন বলিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে মালামাল নিয়ে নিরাপদ স্থানে যেতে দেখা গেছে।

ওয়ার্ড মেম্বার স্বজল কর্মকার জানান, অবিরাম বৃষ্টি হলে বা আজ রাতে আমাদের ওয়ার্ডে তিন পাড়া ঘরবাড়ী নিম্নাঞ্চল হওয়া বন্যা আশঙ্কা থাকায় সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ১৫ পরিবার চলে গেছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ বলেন, গত মঙ্গলবার হতে অবিরাম ভারী বৃষ্টি হওয়া সাংগু নদীর ও পাহাড়ে শাখা প্রশাখা ঝিরির ঝর্ণা গুলিতে আকস্মিক পানির স্রোত বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলা পরিষদ ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মাঝখানে বয়ক হেডম্যান পাড়া ঝিরিতে একটি কালভার্ট কিছুক্ষন আগেই পানির নিচে ডুবে গেছে। পায়ে বা গাড়ি যাতায়াত করার সম্ভব হচ্ছে না আপাতত সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মুহা. আবুল মনসুর বলেন, সদর ও বলিপাড়া দুই ইউনিয়নেন দুইটি কালভার্ট পানিতে তলিয়ে গেছে বলে ইউপি চেয়ারম্যানরা খবর দিয়েছে। যে কোন দুর্যোগে সহযোগিতার জন্য কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ফায়ার সার্ভিস, যুব রেড ক্রিসেন্ট ও থানা পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।

ইতোমধ্যে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণস্থানে বসবাসকারীদের মোট ৬ টি আশ্রয় কেন্দ্রে চলে আসতে মাইকিং করা হয়েছে। উপজেলায় ৪টি ইউনিয়নের ৪ টি প্রাথমিক স্কুল, ২ টি উচ্চ মাধ্যমিক আশ্রয়কেন্দ্র হিসাবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে আসা লোকজনের খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। ছোটখাট দুই একটি পাহাড়ধসের ঘটনার খবর পাওয়া গেছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন