টেকনাফে ইয়াবা ব্যবসার জের ধরে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা
টেকনাফ প্রতিনিধি :
কক্সবাজারের টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাজমপাড়া এলাকায় ইয়াবা ব্যবসার পাওনা টাকার জের ধরেই শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে মোহাম্মদ হাশেম (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে গুলি হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। নিহত ব্যক্তির বাড়ি একই ইউনিয়নের ছোট হাবির পাড়ার নজির আহমদ সওদাগরের ছেলে।
নিহতের বাবা জানান, কক্সবাজার নতুন লারপাড়ার বাসিন্দা ছৈয়দ করিম ও টেকনাফের তার চাচাত ভাই আবুল কালামের সঙ্গে ইয়াবা ব্যবসা পরিচালনা করতো। তাদের কাছ থেকে আমার ছেলে কয়েক লক্ষাধিক টাকা পাওনা ছিলে। টাকা দাবি করায় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয় বলে তার বাবা জানান। এ ঘটনায় ছোট হাবিবপাড়ার মৃত হাকিম আলীর ছেলে নজির আহমদ সওদাগরের বাদি হয়ে ৬জনকে আসামী করে টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
আসামীরা হচ্ছে, কক্সবাজার নতুন লারপাড়ার এলাকার মৃত কবির আহমদের ছেলে মে. ছৈয়দ করিম (৩০), টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ছোট হাবিবপাড়ার এলাকার মৃত নূর মোহাম্মদ প্রকাশ বেলাইয়ের ছেলে আবুল কালাম (২৫), টেকনাফ সদর ইউনিয়নের গোদারবিল এলাকার মৃত পুতু মিয়ার ছেলে দিল মোহাম্মদ দিলু (৩০), টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাজমপাড়া এলাকার মৃত আলী চানের ছেলে মো. আবু ছিদ্দিক (৩৫) ও তার ভাই জসীম উদ্দিন (২৫), টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাজমপাড়া এলাকার মৃত নূর মোহাম্মদের মেয়ে নিহত মো. হাশিমের স্ত্রী হাছিনা বেগম (২৭) সহ আরো ৬ থেকে ৭ অজ্ঞাতনামা আসামী।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে তার প্রথম স্ত্রী হাছিনা বেগম (২৮) মুঠোফোনে শ্বশুড় মৃত নূর মোহাম্মদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসেন।
হঠাৎ করে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ১০ থেকে ১২ জন অস্ত্রধারী লোক গুলি করতে করতে নূর মোহাম্মদের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। এ সময় মো. হাশেম সামনের দিকে এগিয়ে এলে তাকে লক্ষ্য করে এলোপাতারি গুলি করে আসামীরা পালিয়ে যায়।
পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশের উপ পরিদর্শক কাঞ্জন দাশ ও সুবীর পালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মো. হাশেমকে উদ্ধার করে। টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার ডা. শহিদুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে আনার আগে তার মৃত্যু হয়েছে। মো. হাশেমের শরীরে একাধিক গুলির চিহ্ন রয়েছে বলে ডাক্তার জানায়।
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল মজিদ জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, পাওনা টাকা জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে রাতেই থানা পুলিশ লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে। পরে পারিবারিক ভাবে দাফন সম্পন্ন করা হয় বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য বেশ কয়েক বছর আগে ঈদের দিন হাশেমের বড় ভাই ঘাতকের ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছিলেন। সেদিন ঈদের নামাজ পড়ে আসার পথে ঘাতক তার পিতার হত্যার বদলা নিতে তাকে খুন করে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।