টেকনাফ সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে ৩৩ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে সাউথ বেঙ্গল ট্রেডিং

fec-image

কক্সবাজারের টেকনাফে সমুদ্রের পাড় ঘেঁষে গড়ে উঠছে দেশের প্রথম বিশেষায়িত ট্যুরিজম পার্ক। সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে ৩৩ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে হোটেল ও রিসোর্ট নির্মাণ করবে সাউথ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) কাছ থেকে ২ একর জমি বরাদ্দ পেয়েছে।

সাউথ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং, সাউথ বেঙ্গল গ্রুপের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। সাউথ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিংয়ের চেয়ারম্যান মো. আশরাফ আলী বলেন, “সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে জমি বরাদ্দের বিষয় বেজার সঙ্গে মঙ্গলবার (১৩ জুন) আমাদের চুক্তি হয়েছে। আমরা হোটেল ও রিসোর্ট তৈরি করবো। যেখানে কর্মসংস্থান হবে প্রায় ৩০০ লোকের। প্রাথমিকভাবে আমাদের ৩৩ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এটা আরও বাড়তে পারে।”

তিনি বলেন, “আমরা পরিকল্পনা করছি সেখানে পাঁচতারকা মানের হোটেল তৈরি করার। যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে যেমন হোটেল আছে তেমন। তবে এটা নির্ভর করছে সরকার সাবরাং পার্কে কেমন সুযোগ-সুবিধা দিবে তার ওপর। সরকার যদি ভালো সুযোগ-সুবিধা দেয় তাহলে এটা করা যাবে। আর যদি কক্সবাজারের মতো অপরিকল্পিত ব্যবস্থা হয়, তাহলে গড়পড়তা মানের হোটেলই হবে।”

কক্সবাজারের টেকনাফে সমুদ্রের পাড় ঘেঁষে গড়ে উঠছে সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক; এখানে ইকো-ট্যুরিজম, মেরিন এ্যকুয়ারিয়াম ও সি-ক্রুজ, বিদেশি পর্যটকদের জন্য বিশেষ সংরক্ষিত এলাকা, সেন্টমার্টিনে ভ্রমণের বিশেষ ব্যবস্থা, ভাসমান জেটি, শিশু পার্ক, ইকো-কটেজ, ওশেনেরিয়াম, আন্ডার ওয়াটার রেস্টুরেন্ট, ভাসমান রেস্টুরেন্টসহ নানা রকমের বিনোদনের সুবিধা থাকবে।

বেজার দাবি, ট্যুরিজম পার্ক প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পর তা বাংলাদেশের পর্যটন খাতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং প্রায় ৩৫,০০০ লোকের জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে।

মো. আশরাফ আলী বলেন, “সাবরাং ট্যুরিজম পার্কের জমি ভরাট হয়ে গেছে, বিদ্যুৎ লাইন রয়েছে। আমরা এখনও যদি আন্তর্জাতিক মানের স্থাপনা তৈরি শুরু করি তাহলেও কমপক্ষে ৫ বছর সময় লাগবে শেষ করতে। আশা করি এই সময়ের মধ্যে ঢালাই করে রোড তৈরি সহ প্রয়োজনীয় সেবা বেজা দিতে পারবে। আমাদের এখন দ্রুত প্রয়োজন ভবন তৈরির জন্য নির্মাণসামগ্রী নিয়ে যাওয়ার রাস্তা ও লাইনের মাধ্যমে পানির ব্যবস্থা করা।”

ইস্ট ওয়েস্ট ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরও এখানে গত বছর জমি বরাদ্দ পেয়েছে। তারা এখানে হোটেল তৈরিতে ২.৭২ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। এর পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, পর্যটন সুবিধার অভাবে প্রতি বছর প্রায় ২৪ লাখ মানুষ দেশের বাইরে ভ্রমণে যায়। “একবার প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে, তারা সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক পরিদর্শন করবে। তাছাড়া সব ধরনের পর্যটন সুবিধার প্রাপ্যতা বিদেশিদেরও পার্কে আকৃষ্ট করবে,” আশা প্রকাশ করে বলেন তিনি।

বেজার পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশি-বিদেশি পর্যটকের পাশাপাশি স্থানীয় পর্যটকদের ট্যুরিজম পার্কে আরও বেশি আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে মাস্টারপ্ল্যানে পার্কের বিভিন্ন স্থানে ফুড কর্নার, সমুদ্র তীরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য উন্মুক্ত মঞ্চ, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও প্রকৃতি প্রেমিকদের জন্য রিজার্ভ ফরেস্ট, বিনোদন কেন্দ্র, দেশীয় পণ্যের স্টল প্রর্দশনের স্থান, শিশুদের খেলার পার্ক, আন্ডারওয়াটার ওয়ার্ল্ড, বোটানিক্যাল গার্ডেন ও এ্যাকুয়ারিয়াম ইত্যাদি প্রস্তাব করা হয়েছে।

বেজা এ পর্যন্ত দেশি-বিদেশি ২১টি প্রতিষ্ঠানকে জমি বরাদ্দ দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক স্পোর্টসওয়্যার প্রস্তুতকারক লিজার্ড স্পোর্টস, সিঙ্গাপুর ভিত্তিক ফার্ম ইন্টার-এশিয়া গ্রুপ এবং স্থানীয় কোম্পানি ইফাদ গ্রুপ।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, “সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক এলাকাটির দুইটি অংশ হবে। একটি অংশ হবে এক্সক্লুসিভ জোন, শুধু বিদেশি পাসপোর্ট যাদের রয়েছে, তারাই এ অংশে প্রবেশ করতে পারবে। আরেক অংশ দেশি-বিদেশি সবার জন্যই উন্মুক্ত থাকবে।” তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে আমরা একটি প্রকল্প দিয়েছি। এটার যাচাই-বাছাই চলছে, ওই প্রকল্পটি যদি পাশ হয় তাহলে ভেতর দিয়ে সার্ভিস রোড তৈরি করা সহ বিদ্যুতের সাব স্টেশন করা, গ্যাসের ব্যবস্থা করা, পানির লাইন নেয়া এগুলোর আমরা ব্যবস্থা করতে পারবো।” সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: টেকনাফ, সাউথ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং, সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন