ত্রাণ দিতে গিয়ে রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করলেন সিংগাইরের যুবক

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করেছেন শোয়েব হোসেন জুয়েল (২২) নামের এক যুবক। শুধু ধর্মানুযায়ী বিয়ে করে প্রশাসনের ভয়ে আত্মগোপন করে আছেন এ নবদম্পতি।
শোয়েব হোসেন জুয়েল উপজেলার চারিগ্রাম ইউনিয়নের দাসেরহাটি মালিপাড়া গ্রামের মো. বাবুল হোসেনের ছেলে। তিনি কোরআনের হাফেজ বলে স্থানীয়রা জানান।

রোহিঙ্গা নারীকে ছেলের বিয়ের কথা স্বীকার করেছেন শোয়েব হোসেন জুয়েলের বাবা মো. বাবুল হোসেন।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ধর্মীয় বিধান মোতাবেক বিয়ে করেছে শুনেছি। রাষ্ট্রীয়ভাবে বিধি-নিষেধ থাকায় আমি এ বিয়ে মেনে নিতে পারিনি।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ত্রাণসামগ্রী দিতে গিয়ে এ বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চারিগ্রাম দাসেরহাটি গ্রামের মাওলানা তাজুল ইসলামের বাড়িতে আশ্রয় নেন ৯ সদস্যের একটি রোহিঙ্গা মুসলিম পরিবার। ওই পরিবারটি থেকে শোয়েব হোসেন জুয়েল পছন্দ করেন রাফিজা খাতুন (১৮) নামের এক রোহিঙ্গা তরুণীকে।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর ওই পরিবারসহ উপজেলার ধল্লা এলাকা থেকে আরও ১১ জনকে আটক করে তাদের টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেন পুলিশ। এদিকে স্থানীয়ভাবে বিয়ে না করতে পেরে জুয়েল ছুটে যান কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। সেখানে গিয়ে ওই তরুণীকে বিয়ে করেন তিনি।

সূত্র জানায়, গত ২১ সেপ্টেম্বর সিংগাইর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি ত্রাণসামগ্রী দিতে যান রোহিঙ্গাদের। গত ২৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষক সমিতির গাড়িতেই রোহিঙ্গা তরুণীকে বিয়ে করে ফেরেন জুয়েল।

তবে প্রশাসনের হয়রানি থেকে  রেহাই পেতে এক বাড়িতে আশ্রয় নেন তারা। পরে ঘটনাটি প্রকাশ হওয়ায় নবদম্পতি এলাকা থেকে সটকে পড়েন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক  সিংগাইর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির এক নেতা তাদের গাড়িতে নব দম্পতি ফেরার কথা স্বীকার করে বলেন, সিট খালি ছিল বিধায় ওরা আমাদের গাড়িতেই এসেছে। তাছাড়া আমরা বুঝতে পারিনি বোরকা পরা ওই তরুণী রোহিঙ্গা।

হাফেজ শোয়েব হোসেন জুয়েলের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, হাফেজি পাস করে যাত্রাবাড়ীর একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন জুয়েল।

জুয়েলের বাবা মো. বাবুল হোসেন বলেন, বিয়ের ব্যাপারটি আমার ভাতিজা শাহ আলম আমাকে মোবাইল ফোনে জানালে আমি নিষেধ করি।

শাহ আলম বলেন, আমি যতটুকু জানি কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থানীয় এক যুবকের মাধ্যমে এ বিয়েটা সম্পন্ন হয়েছে।

স্থানীয় চারিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান সাজেদুল আলম তালুকদার স্বাধীন বলেন, আমি যতটুকু শুনেছি চারিগ্রামে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা পরিবারের মেয়ে বিয়ে করছেন জুয়েল।

এ ব্যাপারে জুয়েলের ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি, পরে  মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

সিংগাইর থানার ওসি খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। খোঁজ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. যুবায়ের বলেন, এ ঘটনা প্রথম আপনার কাছ থেকে শুনলাম। সত্য হয়ে থাকলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলেচনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সূত্র: যুগান্তর

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন