থানচির আন্দারমানিকে ডায়রিয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে
বান্দরবান জেলা পরিষদে অর্থায়নের, স্বাস্থ্য বিভাগের ব্যবস্থাপনায় বান্দরবানে থানচি উপজেলা দুর্গম রেমাক্রী ইউনিয়নের বড় মদক য়ংলং পাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০ শয্যা বিশিষ্ট ফিল্ড হাসপাতাল ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল চালু করা হয়েছে। এতে ডায়রিয়া পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) থেকে এই ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল চালু করা হয়।
বান্দরবানের সিভিল সার্জন নিহার রজ্ঞন নন্দী জানান, ম্রো সম্প্রদায়ের পাড়া এলাকায় ৭টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হঠাৎ ডায়রিয়ায় আক্রন্ত হয়। আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ না হওয়ার পর্যন্ত এই ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল পরিচালনা করা হবে।
স্বাস্থ্য বিভাগের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ সাংবাদিকদের জানান, রেমাক্রী ইউনিয়নের বড় মদক দুর্গম আন্দারমানিকের ডায়রিয়া প্রাদুর্ভাব এক সপ্তাহ ব্যবধানের পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গত ৭ থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত ৯ দিনের মোট ৯ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে। আক্রান্তদের বিজিবি ও স্বাস্থ্য বিভাগ চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাছে। বর্তমানে ডায়রিয়া নতুন করে আক্রান্ত নেই। আক্রান্ত ৫০ থেকে ৬০ জনের মধ্যে ৯ জন মারা গেছে। ১০ জন সুস্থ হয়েছে। সম্পূর্ণ সুস্থ এবং স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে বলে জানান তিনি।
তিনি জানান, ওই অঞ্চলে শুকনো মৌসুমে জুম কাটা এবং জুমের ঘাস মারা জন্য বিষাক্ত কীটনাষক ব্যবহার, স্যানিটেশন না থাকায় জোপ জঙ্গলে মলমূত্র ফেলাসহ নানা রকমে অপরিষ্কার অপরিছন্ন ছিলনা। সেসব ময়লা আবর্জনাগুলো সামান্য বৃষ্টিতে নদী ঝিরি ছড়াতে পরে। ওই ছড়া নদীর পানির ব্যবহারের ফলে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছে। আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা খাওয়ার পানিগুলো ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে ওই স্যালাইন মিশিয়ে খাওয়ানো সহ স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে ডায়রিয়া নতুন করে হচ্ছে না। স্বাস্থ্য বিভাগ ও বিজিবি তত্ত্বাবধানে সর্বাক্ষণিকভাবে আক্রান্তদের মৃত্যু না হয় সে ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, বান্দরবান জেলা পরিষদে অর্থায়নের রেমাক্রী ইউনিয়নের বড় মদকের একটি মিনি হাসপাতাল বা কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হবে। এছাড়া প্রতিটি পাড়ায় একটি করে মোট ৩০টি গভীর নলকূপ (টিউওয়েল) স্থাপন, ১০ শয্যা সম্পন্ন মিনি হাসপাতালে একজন এমবিবিএস চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় জনবল ঔষধ সরবরাহ করা হবে। গতকাল স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা পরিষদের উর্ধতম কর্মকর্তাদের সমন্বয় সভা এ সিদান্ত হয়েছে। এছাড়াও স্বাস্থ্য সচেতনতা জন্য নাটক প্রদর্শন, (টকি সিনেমা) সভা সেমিনার প্রজন্মদের নিয়ে প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানান তিনি।
স্বাস্থ্য বিভাগের এক প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ডায়রিয়া মৃতদের মধ্যে রেমাক্রী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডে বড় মদক সীমান্তে দু্র্গম মেনতাং পাড়া বাসিন্দা ও পাড়ার প্রধান মেনতাং কারবাড়ী ৪৮, ক্রাইঅং ম্নো ১৮, লংথাং পাড়া বাসিন্দা লংপিং ম্রো ৫০, ঙারেসা পাড়া বাসিন্দা প্রেনময় ম্রো ১২, সংদক ম্রো ২২, সংওয়ো ম্রো ৩৫, রুংরাক ম্রো ৫০, প্রেলি ম্রো ৩৬, মংঞোচাই মারমা ২২, উষামং পাড়া বড় মদক ডাযরিয়া আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে।