সাজেকে ফের ডায়রিয়া-নিউমোনিয়ার প্রকোপ, ২ জনের মৃত্যু

fec-image

রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের দুর্গম লংথিয়ান পাড়ায় ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গিরি রঞ্জন ত্রিপুরা (৩৫) মারা গেছেন। এছাড়া সাজেকের গঙ্গারাম এলাকার রেতকাবা গ্রামে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অর্পিতা চাকমা (৫) এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (৩০ জুন) বিকাল ৪ ট ডায়রিয়ায় গিরি রঞ্জন ত্রিপুরা(৩৫) ও দুপুর ২ ঘটিকায় অর্পিতা চাকমা(৫) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়।

সাজেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৩ দিনে লংথিয়ান পাড়ায় ৫ জন গ্রামবাসী মারা গেছেন।

লংথিয়ান পাড়ায় ও আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে নারী শিশু বৃদ্ধসহ আরো ২০ গ্রামবাসী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রয়েছে। সাজেক ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার বনবিহারী চাকমা জানান, গত এক মাস ধরে সাজেকের লংথিয়ান পাড়া, অরুণ পাড়া, কাইজা পাড়া, রায়না পাড়া ও শিয়ালদহ বেটলিং এলাকাসহ আশপাশের বেশকিছু এলাকায় নতুন করে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এলাকায় আশপাশে কোন হাসপাতাল বা কমিউনিটি ক্লিনিক না থাকায় স্থানীয় তান্ত্রিক দ্বারা চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। এলাকায় যাতায়াতের কোন সড়ক যোগাযোগ ব্যাবস্থা না থাকায় পায়ে হেটে এতো দূর থেকে মাচালং ও উপজেলা সদর হাসপাতালে রোগী পাঠানো সম্ভব নয়।

টিভি মিডিয়াতে ডায়রিয়ার খবর প্রকাশের পর গত ৮ জুন বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও উপজেলা প্রশাসনের ৩ টি মেডিকেল টিম পাঠিয়ে টানা এক সাপ্তাহব্যাপী চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করে। গত বুধবার মেডিকেল টিম ফিরে আসে। এর মধ্যেই নতুন করে আরো দুজন গ্রামবাসীসহ জুম চাষি গিরি রঞ্জন ত্রিপুরার মৃত্যু হলো। সাজেক ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার জোপুইথাং ত্রিপুরা জানান লংথিয়ান পাড়াতে ৪ জন মুমূর্ষু ডায়রিয়া রোগী রয়েছে তাদের অবস্থাও ভালো নয়।

মূলত ছড়ার পানি থেকে এই রোগ ছড়িয়েছে বলে জোর দাবি স্থানীয় জনগণের। ২০১৬ সালে এখানে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। পরে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে মেডিকেল টিম দীর্ঘ এক মাসের চিকিৎসায় নিয়ন্ত্রণে আসে।

বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর মেডিকেল অফিসার ডা. অরবিন্দু চাকমা বলেন, আমাদের মেডিকেল টিমের সদস্যরা টানা এক সাপ্তাহ চিকিৎসা সেবা দিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে ফিরে আসে। নতুন করে আরো কেউ আক্রান্ত হলে আবারো মেডিকেল টিম পাঠানো হবে।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আক্তার ডায়রিয়ায় মৃত্যুর বিষয়টি স্বীকার করে জানান, সাজেকের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ব্যাবস্থা নেই, পাহাড়ি ছড়ার পানি পান করায় বর্ষার শুরুতে এই সমস্যা দেখা দেয়। আমরা ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় চেষ্টা করছি সাজেকের দুর্গম অঞ্চলে প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন সমস্যা দূর করতে।

এছাড়া সাজেকে ডাইরিয়া প্রতিরোধে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারের সাহায্যে সেনাবাহিনী বিজিবি ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকগণ সম্মিলিত চিকিৎসা সহায়তা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান। পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার স্যালাইন পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেট শুকনো খাবার দেয়া হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, প্রকোপ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন