চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করার অভিযোগ

দলীয় নেতাকর্মীদের বহিষ্কারের দাবিতে নৌকার প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন

fec-image

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নৌকা প্রতীকের হেলাল উদ্দিন হেলালী অভিযোগ করেছেন, তাঁর ইউনিয়নের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটারদেরকে নৌকায় ভোট না দিতে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করা হচ্ছে। এমনকি নৌকার পক্ষে যারা কাজ করছেন তাদেরকে মারধরসহ নির্বাচনের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করছেন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়া সংখ্যালঘু নির্যাতনে অভিযুক্ত দলের উপজেলার সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী এবং দলের ইউনিয়ন সভাপতি সাহাব উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল আবচারসহ তার অনুসারীরা।

এই পরিস্থিতিতে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করতে হলে গিয়াসসহ নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করা দলীয় নেতাকর্মীদের দল থেকে বহিষ্কার করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।

বুধবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে নৌকার প্রার্থী হেলাল উদ্দিন হেলালী তাঁর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে লিখিত এবং মৌখিক বক্তব্যে উপরোক্ত অভিযোগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ সৈয়দ আবদুল কাদের আফেন্দী, মাঈন উদ্দিন হাসান শাহেদসহ নৌকার কর্মী-সমর্থকেরা।

হেলাল উদ্দিন বলেন, কেন্দ্রের কঠোর নির্দেশনা এবং নৌকার পক্ষে মাঠে নামতে জেলা আওয়ামী লীগ গত ১৯ ডিসেম্বর রাতে গিয়াস উদ্দিন এবং তাঁর অনুসারীদের ২৪ ঘন্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা সেই নির্দেশনা কোনভাবেই মানছেন না। এমনকি প্রকাশ্যে নিজের ছোট ভাই স্বতন্ত্র প্রার্থী নাছির উদ্দিনের পক্ষে মোটর সাইকেল প্রতীকের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাচ্ছেন উপজেলার সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন। তিনি নিজে উপস্থিত থেকে নগদ টাকাও বিলি করছেন ভোটারদের মাঝে। মসজিদে ঢুকিয়ে শপথ করাচ্ছেন নৌকায় ভোট না দিতে। নৌকা ডোবাতে যা যা করতে হয়, এর সবকিছুই করে যাচ্ছেন গিয়াস উদ্দিন।

নৌকার প্রার্থী হেলাল উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে বিভিন্ন ওয়ার্ডে হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বিশাল ভোটব্যাংক রয়েছে। এই সম্প্রদায়ের ভোটারদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করছেন সংখ্যালঘু নির্যাতনে অভিযুক্ত গিয়াস উদ্দিন এবং তার অনুসারী সশস্ত্র ক্যাডারেরা। তাই মানুষের মধ্যে লুকিয়ে থাকা ভীতি দূর করতে নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করা নেতাদের দল থেকে বহিষ্কার করা অত্যাবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ গিয়াস উদ্দিনসহ তাঁর অনুসারীরা এখনো দলীয় পদে বহাল তবিয়তে থাকায় ভোটের মাঠে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। যা নৌকা প্রতীকের জয়ী হওয়ার ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। আমি এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় এবং জেলা আওয়ামী লীগের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

উল্লেখ্য, গত ১৯ ডিসেম্বর রাতে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী হেলাল উদ্দিনের নির্বাচনী জনসভায় জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ যথাক্রমে সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, সহ-সভাপতি রেজাউল করিম, চকরিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক তাপস রক্ষিত, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি বেন্টু দাশসহ জেলার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

এ সময় সকল নেতৃবৃন্দই নৌকা প্রতীকের পক্ষে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে কাজ করার নির্দেশনা দেন। বিশেষ করে উপজেলা সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিনসহ ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নৌকার পক্ষে মাঠে নামতে ২৪ ঘন্টার সময়সীমা বেঁধে দেন। কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগের সেই সময়সীমার ৭২ ঘন্টা পার হতে চললেও তারা নৌকার পক্ষে মাঠে নামেনি।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ফাঁসিয়াখালীর সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। দলের চকরিয়ার সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিনসহ যেসব নেতাকর্মী নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করছেন তাদের ব্যাপারে শীঘ্রই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: দলীয় নেতাকর্মী, নৌকার প্রার্থীর, বহিষ্কারের দাবি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন