দা বাহিনী ও বোরকা বাহিনীর কারণে পেকুয়ার টইটং ইউনিয়ন এখন আতংকের জনপদ

 

নিজস্ব প্রতিনিধি,পেকুয়া:
বহু আলোচিত দা বাহিনী ও বোরকা বাহিনীর কারণে পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়ন জনমনে চরম আতংকের জনপথে সৃষ্টি হয়েছে। দা বাহিনী আবারো সংগঠিত হওয়ার আশংকায় এলাকায় ব্যাপক আতংক ছড়িয়ে পড়ছে।

তথ্য অনুসন্ধানে দেখা যায় আ’লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে দীর্ঘ ৫ বছর দাপটের সাথে জাহেদ চৌধুরী টইটং এর অপরাধ জগতের সম্রাজ্য প্রতিষ্টা কওে কুখ্যাত ডাকাত নাছির সহ টইটং পুইছড়ির চিহ্নিত ডাকাতদের সমন্বয়ে সশস্ত্র বাহিনী গঠন করে। এক সময় ওই বাহিনীর হাতে লম্বা দা নিয়ে অপারেশন করতে দেখা গেলেও দু তিন বছর যেতে না যেতে ভারি আগ্নেয়াস্ত্রের সমন্বয়ে আরো শক্তিশালী হয় বাহিনীটি।

প্রথম দিক থেকে দা বাহিনী নামে পরিচিত পাওয়া এ সন্ত্রাসী বাহিনী এখন সর্বস্তরের মানুষের কাছে চরম আতংকিত নাম। পুরো টইটং এ সন্ত্রাসী বাহিনীটি একটি রাম রাজত্ব কায়েম করে। যখন যা ইচ্ছো তাই তারা করে বসে। এতে বাধ সাজার ক্ষমতা কারো নেই। দখল বেদখল বাণিজ্য চাঁদাবাজি বসতঘর ডাকাতি সহ পাহাড়ি ভুমি জবর দখলে বিক্রি করা তাদের নিত্য নৈমত্তিক কাজ। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন টইটং এলাকায় কেউ জমি বিক্রি করলে কানি প্রতি তাদের কে ২০ হাজার টাকা দিয়ে দিতে হয়।

পাহাড়ি অঞ্চলে রিজার্ভ এলাকায় বসতি স্থাপনকারীরা বসতবিটা থেকে গাছ বিক্রি করলেও তাদের একটি অংশ দিয়ে দিতে হয়। পাহাড়ে নিজ ভিটায় ঘর তৈরী করলে দিতে হয় ১০ হাজার টাকা। পাকা দালান নিমার্ণ করলে দিতে হয় ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। বিদেশ থেকে দেশে ফিরলে ডাকাতির হাত থেকে বাচতে দিতে হয় ২০ হাজার টাকা। এমনকি ছেলে বিয়েতে ১০ হাজার টাকা ও তাদের ২০ থেকে ৩০ জনের দাওয়াত নিশ্চিত করতে হয়। মেয়ের বিয়ে বড় আকারে করলে দাওয়াত দিতে অন্তত ৪০/৫০ জনকে।

স্থাণীয় লোকজন বলেন দা বাহিনীর সদস্য প্রতিনিয়ত প্রকাশ্যে অপরাধ করে যাচ্ছে। তাদের হাত থেকে গৃহবধু থেকে যুবতীরাও এখন নিরাপদ না। নিরবে তাদের লালসার শিকার হতে হচ্ছে। টইটং পাহাড়ি অঞ্চলের যুবতী মেয়েদের নিরাপদে রাখার জন্য অনেক আত্বীয়স্বজনের বাড়ীতে রেখেছে বলেও স্থানীয়রা জানিয়েছেন। গত মাস দেড়েক ধরে বোরকা পরিহিত আরেকটি সশস্ত্র বাহিনী শুধু দা বাহিনীর সদস্যদের উপর হামলা চালালে দা বাহিনীর যেসব সদস্য পূর্ব টইটং পাহাড়ি অঞ্চলে ছিল তাদের পিঠিয়ে এলাকা ছাড়া করলে কিছুটা থমকে যায় দা বাহিনীর প্রভাব। গত ২৫ জুলাই দুপুরে দা বাহিনীর প্রধান নাছির ১৫/২০ জন সন্ত্রাসী নিয়ে টইটং ইউপির মেম্বার আবদুল জলিলের পিতা ওকিল আহম্মদ কে কুপিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করে।

এ ঘটনায় জলিল মেম্বার বাদী হয়ে দা বাহির্নীর প্রধান কমান্ডার ইউনিয়ন আ’লীগের সেক্রেটারী জাহেদুল ইসলাম চৌধূরী এবং নাছিরসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে। মেম্বারের পিতা নিহত হওয়ার পর থেকে খোকনের নেতৃত্বে বোরকা বাহির্নীর লোকজন ও এলাকার লোকজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে দা বাহিনীর বিরুদ্ধে আন্দোলন এবং দা বাহির্নীর প্রধান কমান্ডার ইউনিয়ন আ’লীগের সেক্রেটারী জাহেদুল ইসলাম চৌধূরীর বসতঘরে হামলা চালিয়ে দা বাহির্নীর আস্তানা গুড়িয়ে দেয়।

এ থেকে দুই বাহিনীর সন্ত্রাসীদের কারণে এলাকায় চরম আতংক বিরাজ করছে। এখন আতংকে এলাকার লোকজন সাধারণ ভাবে চলাচল করতে পারছে না। দা বাহির্নীর প্রধান নাছিরের নেতৃত্বে টইটং এলাকার সবুজ বেষ্টনীর গাছ নিধন এবং অন্যরে বসতঘরের গাছ নিধন এবং ডাকাতিসহ নানা অপরাধ কমকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। রাত হলেই পাহাড়ে গুলির বিকট শব্দ শুনা যায় প্রতিদিন। এসব কিছু থেকে বাচতে চাই এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ওসি(প্রশাসন) মো: রকিব জানিয়েছেন দুই সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা যে দলের হোক না কেন তাদের কে আইনের আওতায় আনা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন