রাতে পেকুয়া-কুতুবদিয়ার সাত জেটিঘাটে জ্বলে না বাতি, যাত্রীদের চরম ভোগান্তি

fec-image

রাতের আধাঁরে বাতি জ্বলে না কক্সবাজারের পেকুয়া-কুতুবদিয়ার সাত জেটি ঘাটে। সন্ধ্যা নেমে এলেই যাত্রী কিংবা মালামাল উঠানামা ও নারী-শিশুদের অবর্ণনীয় ভোগান্তির যেন শেষ নেই।

দীর্ঘদিন ধরেই জেটিঘাট গুলিতে সোলার লাইট নষ্ট থাকায় সন্ধ্যার পর থেকেই এমন দুরবস্থা সৃষ্টি হয়। তবে কোন অভিযোগ আমলেই নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

এদিকে পেকুয়ার মগনামা লঞ্চ ঘাট, উজাটিয়ার করিমদাদ মিয়ার ঘাট, কুতুবদিয়া দ্বীপে আলী আকবর ডেইল জেটি, বড়ঘোপ জেটি, দরবার জেটি ও ধুরুং (সতরুদ্দিন) জেটি রয়েছে সরকারি ইজারার আওতায়। আকবরবলী পাড়া ঘাটে জেটি অসমাপ্ত থাকায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সেটি ইজারা দেন। বাকি ৬টি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রতি বছর ইজারা প্রদান করা হয়। তবে প্রতি বছর ইজারামূল্য বৃদ্ধি করা হলেও জেটিগুলোতে পর্যাপ্ত সুবিধা দেওয়ার নাম নেই। ফলে বছর বছর ইজারার হাত বদল হলেও যাত্রীদের ভোগান্তি বিষয়টি কেউ দেখে না।

পেকুয়া উপজেলার মগনামা লঞ্চ ঘাট (তিনবারের) ইজারাদার নুরুল ইসলাম বলেন, গত ২০১৯ সালে সৌর সোলার প্যানেলের মাধ্যমে এই ঘাটে আলো জ্বলতো। যাত্রী উঠা নামায় কোনো অসুবিধা ছিল না।

তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন কয়েক হাজার লোকজন কুতুবদিয়া দ্বীপে পারাপার করে। সন্ধ্যা হলেই তাদের টর্চ লাইটের আলো দেখিয়ে ড্যানিস বটে উঠা নামা করাতে হয়। অনেকে খারাপ ভাষা গালমন্দ করে।

কুতুবদিয়ার ধুরুং বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিজবাহুল আলম সিকদার বলেন, উপজেলার সব জেটিতেই সন্ধ্যার পর বাতি জ্বলেনা। সন্ধ্যা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত নিয়মিত ঘাট পারাপার হয়ে থাকে। অন্ধকারে যাত্রীরা জেটিতে উঠতে গিয়ে অনেক সময় পা পিছলেও যায়। এক সপ্তাহ আগেও সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার ঘাট পার হতে এক যাত্রী ড্যানিশ বটে উঠতে গিয়ে অন্ধকারে পা পিছলে পড়ে গিয়েছিল। পরে ওই যাত্রী পার না হয়েই পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলে যান পায়ের এক্সরে করাতে।

দরবার জেটি ঘাটে টুল আদায়কারি নাজেম উদ্দিন নাজু বলেন, প্রায় ২/৩ বছর ধরে ঘাটের জেটিতে বাতি নেই। টর্চ লাইট জ্বালিয়ে যাত্রীদের জেটিতে উঠা-নামায় সহায়তা করতে হয়। যাত্রীরা এনিয়ে অনেক সময় বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পরেন। সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে চালিত লাইট প্রথমে দেয়া হলেও তা ৩ মাসেই বিকল হয়ে যায়। এরপর থেকে আর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জানান তিনি।

বড়ঘোপ জেটি ঘাটের একাধিক টুল আদায় কারি জানান, বিগত ঘুর্ণিঝড়ে লাইট নষ্ট হয়ে যাবার পর তা মেরামত হয়নি। প্রায় ১০টা পর্যন্ত নিয়মিত ঘাট পারাপার হয় যাত্রীরা। ভাটাপর সময় থাকলে ওঠা-নামায় কষ্ট হয় অন্ধকারে। টর্চ লাইট একমাত্র ভরসা। তবে দ্রুত লাইট আসবে বলেও জানান। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বড়ঘোপ ঘাটের জেটিতে আলোর ব্যবস্থা হয়নি বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

ঘাট পারাপারে পুরাতন ইজারাদার কামরুল হাসান সিকদার বলেন, বলতে গেলে দ্বীপের কোন জেটিতেই বাতি জ্বলেনা। তারা একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন। দীর্ঘদিনেও তার সমাধান হয়নি। যাত্রী ওঠা-নামায় রাতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দায়িত্ব।

ছোটখাটো বিষয় হলে সংশ্লিষ্ট ইজারাদারগণ সমাধা করতে পারতেন ।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু তাহের জানান, জেটিগুলোতে সৌর প্যানেলে ল্যাম্পপোস্ট প্রকল্পটি ৪ বছর আগের। ৩ বছরের মেয়াদের পর এগুলোর দায়িত্ব চলে যায় দেখভালের। নতুন কোনো প্রকল্প নেই এগুলো মেরামত কিংবা নতুন স্থাপনের।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান,আমি নতুন জয়েন করেছি, এ বিষয়ে খোঁজ- খবর নিয়ে যাত্রী ভোগান্তি নিরসনের চেষ্টা করবো।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন