নববিক্রম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, অটল জেলাপরিষদের চেয়ারম্যান ও রণবিক্রম সদস্য হচ্ছেন
পার্বত্যনিউজ রিপোর্ট :
বহুল বিতর্কিত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মনোনীত হচ্ছেন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরাকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসাবে উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান করা সংক্রান্ত একটি ফাইল অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে প্রেরণ করা হয়েছে। সূত্রটি জানিয়েছে, নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা পুলিশে এডিশনাল আইজিপি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সচিব পদে থাকাকালে পার্বত্য বাঙালীদের কাছে প্রচণ্ড বাঙালী বিদ্বেষী ও দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হিসাবে তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কারণে খ্যাত হয়েছেন। এসময় বিভিন্ন সরকারী কর্মকাণ্ডে পাহাড়ী- বাঙালী বৈষম্য ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারসাম্য বিনষ্ট হয়েছে। তার আমলে সৃষ্ট বিভিন্ন আইন ও পরিপত্রে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালীর অস্তিত্ব ঝুঁকির মুখে উপনীত হয়েছে বলে বাঙালী সম্প্রদায়ের দাবী। এহেন সাম্প্রদায়িক কর্মকর্তা আবার উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ী-বাঙালী বৈষম্য চরমে উঠবে বলে তারা অভিমত ব্যাক্ত করেছেন। বিশেষ করে নতুন প্রণীত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আইনের ২৩ ধারায় চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য দায়মুক্তি দেয়াতে তাদের শঙ্কা প্রবল হয়েছে।
এদিকে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার পদত্যাগের ৯ দিনের মাথায় বাঙ্গালী বিদ্বেষী হিসেবে পরিচিত খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি বীর কিশোর চাকমা (অটল)-কে চেয়ারম্যান ও ত্রিপুরা কোটায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরার বড় ভাই খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রণ বিক্রম কিশোর ত্রিপুরাকে সদস্য করার পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। গত রোববার এ বিষয়ে আরো একটি প্রস্তাবনা একই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে বলে বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে।
খাগড়াছড়ি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহনের কারণে কুজেন্দ্রলাল ত্রিপুরা গত ১ নভেম্বর চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এবং পরিষদ সদস্য সাইথোঅং মারমাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই তাকে বাদ দিয়ে নতুন করে অন্য আরেকজনকে চেয়ারম্যান করার তৎপরতা কেন- এমন প্রশ্নের উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে জেলাজুড়ে। সচেতন জেলাবাসী এ তৎপরতাকে অশুভ তৎপরতা বলেই মনে করছে। প্রেরিত প্রস্তাবনা অনুযায়ী বীর কিশোর চাকমা (অটল)-কে চেয়ারম্যান ও রণ বিক্রম কিশোর ত্রিপুরাকে সদস্য করা হলে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ বাঙ্গালী বিদ্বেষীদের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে বলে মনে করে খাগড়াছড়ির সচেতন মহল।
তাদের মতে তাদেরকে জেলা পরিষদে নিয়োগ দেয়া হলে শুধুমাত্র বাঙ্গালী বিদ্বেষীদের প্রতিষ্ঠানেই পরিনত হবে না, পরিনত হবে দুর্নীতির আখড়ায়ও। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন পার্বত্যনিউজের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বীর কিশোর চাকমা (অটল)-কে চেয়ারম্যান ও রণ বিক্রম কিশোর ত্রিপুরাকে সদস্য করা হলে তা হবে খাগড়াছড়ির বাঙ্গালীদের জন্য আত্মঘাতি। তাদের মতে, চরম বাঙ্গালী বিদ্বেষী হিসেবে পরিচিত সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা বাঙ্গালী বিরোধী এজেন্ডা বাস্তাবায়নের জন্য হঠাৎ করেই এ প্রস্তাবনা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে প্রেরণ করেছেন।