নাইক্ষ্যংছড়িতে জুমিয়াদের মূখে হাসির ঝিলিক

নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি:

এবছরও নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড়ে জুম চাষ ভাল হওয়ায় জুমিয়াদের মূখে হাসির ঝিলিক পড়েছে। পরিবেশ ভাল থাকায় জুম চাষিদের ভাগ্যের কপালে ছিট না পড়ায় এ অবস্থা হয়েছে তাদের। তারা বলেন, চলতি সপ্তাহ থেকে তারা জুমের ধান কাটা শুরু করেন এবং বাড়িতে মাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন বর্তমানে। জুমের পাকা ধান ঘরে তুলতে পারার আশায় তাদের আশার আলো ঝলছে পড়ছে নিজেদের বাড়িতে। এখন তাদের চোখে মূখে রাশি রাশি হাসি।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক মো: ইমরান মেম্বার জানান,পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী আদিবাসিদের আদি পেশা জুম চাষ। অধিকাংশ পাহাড়ি এলাকার মানুষ জুম চাষেই তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। কেননা জুম চাষ মানে শুধু ধান নয়- বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজি, তরিতকারী বা সবজিও চাষ করে থাকে জুমিয়ারা। এ সব ফসলের মধ্যে মারফা, মিষ্টি কুমড়র, টিটকরলা, বাঙ্গী, ভূট্টা, তিল, তুলা, মরিচ কাকনচাল, বিনি চাল, ও ধান অন্যতম।

তিনি আরও জানান,প্রতিবছর এপ্রিল মাসের শেষের দিকে শুরু হয় জুমে ধান লাগানোর প্রক্রিয়া আর সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে আরম্ভ হয় জুমে ধান কাটার উৎসব। জুম কাটার এ প্রক্রিয়া চলবে অক্টোবর মাস পর্যন্ত। এই জুম ধান তারা সংগ্রহ করে রাখে সাড়া বছরের খোরাক হিসেবে। তাই জুমের ফসল ভাল হলে বরাবরই হাসি ফুটে জুমিয়াদের চোখে-মুখে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা কৃষি অফিসার মো: মামুন ইয়াকুব জানান, ২০১৮ এবার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার পাচঁ ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকায় ৪৭০ হেক্টর জমিতে জুমের চাষ হয়েছে।পাহাড়িদের পাশাপাশি বাঙ্গালি কৃষকরাও এ চাষে ঝুকছে বহু এলাকায়। বিশেষ করে এ দৃশ্য চোখে পড়ে সোনাইছড়ি ই্উনিয়নের জারুলিয়াছড়িতে।

তিনি আরও জানান, এ বছর প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হওয়ায় এবং আবহাওয়া ভাল থাকায় উৎপাদনের লক্ষমাত্রা গতবছরের চেয়েও বেশী হবে বলে ধারনা তার। এদিকে আদু জুমিয়া ও ছালা জুমিয়া জানান, এবছর জুমের ফলন ভাল হওয়ায় তারা খুবই খুশি । তারা জুমের ধান চাষের পাশাপাশি মারফা, মিষ্টি কুমড়র, টিটকরলা, বাঙ্গী, ভূট্টা, তিল, তুলা, মরিচ কাকন চালসহ অনেক সবজি চাষও করেছেন তাদের জুম ক্ষেতে।

তারা আরও জানান, এসব জুমের ফল জুমিয়ারা নাইক্ষ্যংছড়ি সদর বাজারে,পার্শ্ববর্তী গর্জনিয়া বাজারে, বাইশারী বাজারে এবং চাক ঢালা বাজারে দেদারছে বিক্রি করছে বর্তমানে। যা অতি কমদামে বিক্রি হচ্ছে ক্রেতাদের কাছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন